ঢাকা, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১

যে ভাবে পবিত্র রমজান মাসের জন্য প্রস্তুতি নিবেন

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২২ ১৪:০৫:০৮
যে ভাবে পবিত্র রমজান মাসের জন্য প্রস্তুতি নিবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রমজান মাস মুমিনদের জন্য আত্মশুদ্ধি, ইবাদত ও গুনাহ মাফের এক অপূর্ব সুযোগ। তাই, এই মহিমান্বিত মাসকে যথাযথভাবে গ্রহণ করতে আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) রজব ও শাবান মাসে বিশেষভাবে ইবাদত করতেন এবং রমজানের জন্য মন-প্রাণ উজাড় করে অপেক্ষা করতেন।

রাসুল (সা.)-এর রমজানের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি

হজরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, রজব মাসের চাঁদ দেখা গেলেই রাসুল (সা.) দোয়া করতেন:

"আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।"

অর্থাৎ, "হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।" (সুনানে নাসায়ি, মুসনাদে আহমাদ)

শাবান মাসে রাসুল (সা.) অধিক নফল রোজা রাখতেন এবং বিশেষ ইবাদতে মনোনিবেশ করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, তিনি শাবান মাসে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি রোজা পালন করতেন। (বুখারি: ১৮৬৮)

আত্মিক ও দৈহিক প্রস্তুতির করণীয়

১. গুনাহ থেকে পরিশুদ্ধ হয়ে তওবা করা

রমজান গুনাহ মাফের মাস, তাই আত্মশুদ্ধির জন্য এখন থেকেই একনিষ্ঠ তওবা শুরু করতে হবে। আল্লাহ বলেন:

"হে মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তওবা করো; যাতে সফলতা অর্জন করতে পারো।"(সুরা নূর: ৩১)

২. প্রার্থনায় মনোনিবেশ করা

নবী (সা.) রজব মাস থেকেই রমজানের জন্য দোয়া করতেন, আমরাও যেন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের এ পবিত্র মাস পর্যন্ত পৌঁছে দেন এবং তাতে বরকত দান করেন।

৩. রমজানের আগমনে হৃদয়ে আনন্দ অনুভব করা

রমজান আল্লাহর এক মহা অনুগ্রহ, এটি উপলব্ধি করাই আমাদের জন্য আনন্দের। আল্লাহ বলেন:

"বলুন, এটি আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়, এতে তারা আনন্দিত হোক। এটি তাদের অর্জিত সম্পদের চেয়ে উত্তম।"(সুরা ইউনুস: ৫৮)

৪. কাজা রোজা দ্রুত সম্পন্ন করা

যারা পূর্ববর্তী রমজানের রোজা রাখতে পারেননি, তারা যেন শাবান মাসে তা পূরণ করে নেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন:

"আমার ওপর গত রমজানের রোজা বাকি থাকলে, শাবান মাস ছাড়া আমি তা আদায় করতে পারতাম না।"(বুখারি: ১৮৪৯)

৫. নফল রোজা ও ইবাদত বাড়ানো

শাবান মাসে রাসুল (সা.) অধিক রোজা রাখতেন এবং এটি আমাদের জন্যও অনুপ্রেরণার বিষয়।

৬. রোজার মাসআলা সম্পর্কে জানা

রোজার নিয়ম ও গুরুত্বপূর্ণ মাসআলাগুলো নির্ভরযোগ্য আলেম বা গ্রন্থ থেকে জানা উচিত, যাতে সঠিকভাবে রমজানের প্রতিটি ইবাদত পালন করা যায়।

৭. সময়সূচি পরিকল্পনা করা

রমজানে ইবাদতে মনোযোগী হতে আগেভাগেই পরিকল্পনা করা দরকার, যেন অপ্রয়োজনীয় ব্যস্ততা কমিয়ে আনা যায়।

শেষ কথা

এই রমজান আমাদের জীবনের শেষ রমজানও হতে পারে। তাই, এটি যেন আমাদের আত্মশুদ্ধির এক অনন্য সুযোগ হয়ে ওঠে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণের তাওফিক দান করুন। আমিন।

আব্দুর রহিম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে