ঢাকা, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩১

শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার রুদ্ধশ্বাস কাহিনী: এক সাংবাদিকের বিবরণ

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ১৮ ২২:৪৪:৪৯
শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার রুদ্ধশ্বাস কাহিনী: এক সাংবাদিকের বিবরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ইতিহাসের এক চিরস্মরণীয় মুহূর্ত ঘটে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে, যখন গণ-অভ্যুত্থানের স্রোতে বাংলাদেশে সব কিছু বদলে যাচ্ছিল। সেই সময় ঘটে এক ঘটনা, যা দেশের রাজনীতিতে যেমন সাড়া ফেলে, তেমনি দেশের সাংবাদিকতার অঙ্গনে এক অনন্য পরীক্ষা হয়ে দাঁড়ায়। তা হলো, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের ঘটনা—যেটি জানতে পেরে তৎকালীন এএফপির (এশিয়ান ফ্রান্স প্রেস) ব্যুরো চিফ এবং বর্তমান প্রেস সচিব শফিকুল আলমের মনে ছিল অবর্ণনীয় আতঙ্ক আর উদ্বেগ।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দুপুর ২টা। শফিকুল আলমের ফোনে একটি অজানা নাম্বার আসে। ওপাশে থাকা ব্যক্তিটি খুব পরিচিত—একজন নামী সাংবাদিক এবং সম্পাদক, যিনি একসময় সরকারের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে কাজ করতেন। সেই মুহূর্তে শফিকুলের মনে সন্দেহের বিষাদ ছড়িয়ে পড়ে। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা মানুষটি যা বলেছিল, তা ছিল যথেষ্ট বিস্ময়কর—“প্রধানমন্ত্রী হাসিনা দেশ ছাড়ছেন।”

শফিকুলের শরীর কেঁপে ওঠে, মনে হতে থাকে—“এটা কি সত্যি? যদি খবরটা ভুল হয়? যদি কেউ আমাকে মিসলিড করে?” দ্রুত তিনি সোর্সের কাছে যাচাই করতে চাইলেন, “আমি কি এই খবরটা বের করতে পারি?” জবাব আসে, “তোমার ইচ্ছা, কিন্তু আমার নাম যেন প্রকাশ না পায়।”

শফিকুল আলম তখন আর দেরি করেননি। তিনি সিঙ্গাপুরে এএফপির এশিয়া বিভাগের প্রধানকে ফোন করে সংবাদটি জানালেন, নাম গোপন রেখে। মুহূর্তের মধ্যে খবরটি পাখির মতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল এবং বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলো স্ক্রলে চলে এল। জনতা গণভবনের দিকে রাস্তায় নেমে আসতে থাকে, আর শফিকুলের মনে ভয় যেন আরো গভীর হতে থাকে—“যদি খবরটি ভুল হয়? ক্যারিয়ারটাই শেষ হয়ে যাবে! এএফপির বিশ্বাসযোগ্যতাও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।”

কিন্তু আধা ঘণ্টা পর আরেকটি বড় খবর আসে—সেনাপ্রধান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এ খবর শোনার পর শফিকুল আলমের বুকের ধকধকানি কিছুটা থেমে যায়। তার ধারণা সত্যি হতে চলেছে—হাসিনা সত্যিই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন।

এই চমকপ্রদ ঘটনা এবং রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি উঠে এসেছে আশীফ এন্তাজ রবির নতুন উপন্যাস ‘ট্রেন টু ঢাকা’-এ। বইটির এক অংশ ফেসবুকে শেয়ার করেছেন লেখক নিজেই, যা পরে শফিকুল আলমও তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করেন।

শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার ঘটনা, যা সেই সময় গণমাধ্যমে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল, এখন এক নতুন রূপে পাঠকদের সামনে এসেছে এই উপন্যাসের মাধ্যমে। এটি যেন শুধু ইতিহাস নয়, বরং সাংবাদিকতার এক চ্যালেঞ্জিং মুহূর্তের মর্মস্পর্শী গল্প।

তানভির/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে