ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১

আয়-রোজগার বৃদ্ধি:

দোয়া ও আমলের মাধ্যমে বরকত লাভ

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০৬ ১৮:৩৯:৪৯
দোয়া ও আমলের মাধ্যমে বরকত লাভ

আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে পাঠিয়েছেন এবং তিনি সবার রিজিকদাতা ও প্রতিপালক। তবে আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য কোনো রিজিক বিনাশ্রমে দেন না। তিনি পরিশ্রমের মাধ্যমে রিজিক লাভের পথ দেখিয়েছেন। তাই নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফরজ হিসেবে আয়-রোজগারের কথা উল্লেখ করেছেন।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, "তিনিই তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে-প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে আহার করো।" (সুরা মুলক: ১৫)

আয়-রোজগার বৃদ্ধি ও বরকতের জন্য নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু গুরুত্বপূর্ণ দোয়া শিখিয়েছেন। এক্ষেত্রে প্রথম দোয়া হলো:

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذَنْبِي وَوَسِّعْ لِي فِي رِزْقِي وَبَارِكْ لِي فِيمَا رَزَقْتَنِيউচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফির লি জাম্বি, ওয়া ওয়াসসি লি ফি রিজকি, ওয়া বারিক লি ফিমা রাজাকতানি। (তিরমিজি: ৩৫০০)অর্থ: হে আল্লাহ, আমার গুনাহ ক্ষমা করে দিন, আমার রিজিক প্রশস্ত করে দিন এবং আপনি আমাকে যে জীবিকা দান করেছেন তাতে বরকত দিন।

আরেকটি দোয়া যা রিজিক বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা হলো:

اللهم اكْفِنِي بِحَلَالِكَ عن حَرَامِكَ ، وَأَغْنِنِي بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَউচ্চারণ: আল্লাহুম্মাকফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক। (তিরমিজি: ৩৫৬৩; মুসনাদ আহমদ: ১৩২১)অর্থ: হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে আপনার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট করুন। আর আমাকে শুধু আপনার অনুগ্রহে স্বাবলম্বী করুন, অন্য কারও মুখাপেক্ষী করবেন না।

শুধু দোয়াই নয়, আয়-রোজগার বৃদ্ধি ও জীবনে বরকত আনার জন্য কিছু বিশেষ আমলও রয়েছে। এই আমলগুলি জীবনে শান্তি ও তৃপ্তি এনে দেয় এবং ন্যূনতম আয় থেকেও সফলতা অর্জন সম্ভব করে। তবে মনে রাখতে হবে, অঢেল আয়-রোজগারই সবসময় সুখের কারণ নয়, বরং বরকতপূর্ণ রিজিকের মধ্যেই প্রকৃত আনন্দ রয়েছে।

তাকওয়া (আল্লাহর ভয়) ও রিজিকে বরকত:

আল্লাহ তাআলা বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য নিষ্কৃতির পথ বের করে দেবেন, এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিজিক দেবেন।” (সুরা তালাক, আয়াত: ২-৩)হাফেজ ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধান অনুসরণ করে এবং নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ তার জন্য এমন পথ তৈরি করবেন, যেখানে সে কখনো ভাবেনি যে রিজিক পাওয়া সম্ভব।

পাপাচার থেকে বাঁচা:

নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “কেবল দোয়াই ভাগ্য প্রতিহত করে, নেক কাজে আয়ু বাড়ে আর বান্দা পাপের কারণে জীবিকা থেকে বঞ্চিত হয়।” (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২২৪১৩)পাপের কাজ জীবন থেকে বরকত ছিনিয়ে নেয়, তবে নেক আমল ও ভালো কাজ থেকে রিজিকে আসে অনন্ত বরকত।

হালাল উপার্জন ও দান-সদকা:

হালাল উপার্জন ও সদকা জীবনে শান্তি ও বরকত আনে। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হালাল জীবিকা সন্ধান করা ফরজের পর একটি ফরজ।” (শুআবুল ইমান, বায়হাকি; কানযুল উম্মাল: ৯২০৩)।মহান আল্লাহ বলেন, “হে আদম সন্তান! তুমি খরচ করো, তোমার জন্য খরচ করা হবে।” (বুখারি: ৫৩৫২)

এই আমলগুলো অনুসরণ করে এবং আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে জীবনে সব ধরনের রিজিক ও বরকত অর্জন সম্ভব। আল্লাহর পথে চললে সব সংকটের মধ্যেও বরকতের রহমত পাওয়া যায়।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে