চরম দু:সংবাদ: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে তারকা ক্রিকেটারকে হারালো অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ পিঠের চোটের কারণে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে গেছেন। একই কারণে তার এবারের আইপিএলে লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে খেলা নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

মার্শের জন্য চলতি মৌসুমটা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। ভারতের বিপক্ষে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে তিনি ব্যাট হাতে মাত্র ৭৩ রান করেছেন সাত ইনিংসে। বল হাতেও ছিলেন বেশ সীমিত ভূমিকায়। ফলে সিরিজের শেষ টেস্টে তার জায়গায় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন বিউ ওয়েবস্টার। তার ফিটনেস এই সিরিজে নিয়মিত আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

বিগ ব্যাশ লিগের (বিবিএল) একমাত্র ম্যাচ খেলার পর তিনি বাকি তিনটি ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন, যাতে মানসিক ও শারীরিকভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য প্রস্তুত হতে পারেন। তবে তার পিঠের চোটের কোনো উন্নতি হয়নি, বরং সমস্যা আরও বেড়েছে। ফলে নির্বাচকরা তাকে পুরো টুর্নামেন্ট থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "মিচেল মার্শকে আসন্ন আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে তার চলমান পিঠের ব্যথা ও কার্যকারিতার সমস্যা (dysfunction) কারণে বাদ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী পুনর্বাসনের জন্য তাকে বিশ্রামে রাখা হবে।"

এখন তার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘ হবে এবং কবে মাঠে ফিরতে পারবেন, তা এখনও নিশ্চিত নয়।

মার্শের অনুপস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আসতে পারে। তরুণ ব্যাটসম্যান জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক তার বিকল্প হতে পারেন। যদিও পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তিনি ভালো করতে পারেননি এবং বিবিএলেও ফাইনাল ম্যাচের আগে ফর্মহীন ছিলেন। তবে তার বিস্ফোরক ব্যাটিং স্টাইল মার্শের বিকল্প হতে পারে।

এছাড়া, অলরাউন্ডার হিসেবে উইল সাদারল্যান্ড বা বিউ ওয়েবস্টার দলে সুযোগ পেতে পারেন। ওয়েবস্টার এখনও ওয়ানডে না খেললেও টেস্ট দলে আছেন। স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে কুপার কনোলির নামও ভাবা হতে পারে, তবে অস্ট্রেলিয়ার স্কোয়াডে ইতোমধ্যে চারজন স্পিন বোলিং পারদর্শী ব্যাটসম্যান রয়েছেন।

অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য পুরোপুরি ফিট নন। টেস্ট সিরিজে পাওয়া গোড়ালির চোটের কারণে তার খেলা এখনও নিশ্চিত নয়। ফলে মার্শ ছিটকে যাওয়ায় অস্ট্রেলিয়াকে নতুন অধিনায়ক ঠিক করতে হতে পারে। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে স্টিভ স্মিথ, ট্রাভিস হেড ও জোশ ইংলিসের নাম শোনা যাচ্ছে।

ট্রাভিস হেড টি-টোয়েন্টি দলে অধিনায়কত্ব করেছেন, তবে ওয়ানডেতে কখনও নেতৃত্ব দেননি। অন্যদিকে, ইংলিস সদ্য শেষ হওয়া গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে দুটি ফরম্যাটেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। যদিও কামিন্সের নেতৃত্বে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলার পরিকল্পনা রয়েছে, তবে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে ইংলিস ও হেডকে নিয়ে ভাবছে দল।

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে মার্শ ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে শতক হাঁকিয়ে তিনি দলের শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। গত বছর থেকে নিয়মিতভাবে টপ অর্ডারে খেলার পর থেকে তার ওয়ানডে গড় ৪৪.৫৪ এবং স্ট্রাইক রেট ১০৯.১৩।

এক বছর আগেই তিনি অ্যালান বর্ডার মেডেল জিতেছিলেন, যেখানে তার টেস্ট ও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ছিল অন্যতম কারণ।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ফেব্রুয়ারি ১১ পর্যন্ত দলে পরিবর্তন আনা যাবে, এরপর আইসিসির টেকনিক্যাল কমিটির অনুমোদন লাগবে।

অস্ট্রেলিয়া টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি হিসেবে ১২ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে খেলবে। এছাড়া, লেগস্পিনার তানভীর সাংঘা ও বাঁহাতি পেসার স্পেন্সার জনসন উন্নয়নমূলক খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট ও ওয়ানডে দলে যোগ দিচ্ছেন এবং তারা পাকিস্তানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ভ্রমণের সুযোগ পেতে পারেন।

গুগল নিউজে ফলো করুন