ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ জানুয়ারি ২৮ ১৬:৫৩:৩৯
নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ঘোষণা

গণঅধিকার পরিষদের একাংশ নিজেদের নাম পরিবর্তন করে ‘আমজনতা দল’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের প্রতীম জামান টাওয়ারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। দলটির আহ্বায়ক মিয়া মশিউজ্জামান এই সিদ্ধান্তকে জনগণের সঙ্গে সংযোগ বাড়ানোর নতুন প্রয়াস হিসেবে উল্লেখ করেন।

মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, “আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আজ থেকে গণঅধিকার পরিষদ নাম পরিবর্তন করে আমজনতা দল হিসেবে পরিচিত হবে। এটি আমাদের আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনের সাংগঠনিক রূপান্তর এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপনের প্রতীক। দোয়া করবেন, যেন আমরা এই দলকে জনগণের অধিকারের পক্ষে শক্তিশালী করতে পারি।”

নাম পরিবর্তনের কারণ

গণঅধিকার পরিষদের নাম পরিবর্তনের পেছনে দলীয় বিভক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দলটি ২০২৩ সালের জুন মাসে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে দুই ভাগে বিভক্ত হয়। একই নাম ব্যবহারের ফলে বিভ্রান্তি ও অপ্রত্যাশিত দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হচ্ছিল। এ পরিস্থিতি এড়াতে এবং আগ্রাসনবিরোধী লড়াইকে আরও সুসংহত করতে নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মিয়া মশিউজ্জামান আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য আগের মতোই—সার্বভৌমত্ব রক্ষা, স্বনির্ভরতা প্রতিষ্ঠা এবং সুশাসন নিশ্চিত করা। আমজনতা দল নামে আমরা এগিয়ে গিয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আরও বড় ভূমিকা রাখতে চাই।”

নতুন লক্ষ্য ও মূলনীতি

আমজনতা দলের প্রধান নীতিগুলো হলো:

১. সার্বভৌমত্ব রক্ষা২. স্বনির্ভর অর্থনীতি৩. সুশাসন প্রতিষ্ঠা

দলটির স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘স্বনির্ভর অর্থনীতি ও সুশাসনে সমৃদ্ধি।’

সংগ্রামের ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর ড. রেজা কিবরিয়া ও নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদের যাত্রা শুরু হয়। তবে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে ২০২৩ সালে দলটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। রেজা কিবরিয়ার পদত্যাগের পর নুরুল হক নূর এবং রাশেদ খান একটি অংশের নেতৃত্বে থাকেন, আর অন্য অংশের নেতৃত্বে ছিলেন মিয়া মশিউজ্জামান ও ফারুক হাসান।

দলটির নতুন নামকরণের মাধ্যমে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। নেতারা জানিয়েছেন, অতীতে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের জন্য তাদের সংগ্রাম অব্যাহত ছিল এবং ভবিষ্যতেও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে ‘আমজনতা দল’।

গৌরবময় ত্যাগের স্মৃতি

আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে দলের সহযোদ্ধাদের ত্যাগ স্মরণ করে মিয়া মশিউজ্জামান বলেন, “২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে আমাদের দলের সাতজন শহীদ হয়েছেন, শতাধিক আহত হয়েছেন। এই আত্মত্যাগ আমাদের প্রেরণা জোগায়। আমরা একটি স্বনির্ভর ও সুশাসিত বাংলাদেশ গড়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব।”

নুরুল হক নূরের অংশের অবস্থা

প্রসঙ্গত, নুরুল হক নূরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পেয়েছে এবং একই সঙ্গে সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎভাবে কাজ করছে।

‘আমজনতা দল’ নতুন নামে রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদের জায়গা শক্তিশালী করতে এবং আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন আরও কার্যকর করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। দলের নেতারা জনগণের সমর্থন নিয়ে দেশকে সার্বভৌম, স্বনির্ভর এবং সুশাসনমুখী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে