ঢাকা, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১

সীমান্তে ব্যাপক উত্তেজনা: যে কোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত বিজিবি, মুখোমুখি বিএসএফ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ জানুয়ারি ১৯ ২২:৪১:১৭
সীমান্তে ব্যাপক উত্তেজনা: যে কোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত বিজিবি, মুখোমুখি বিএসএফ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ভারতীয় নাগরিকদের গাছ কাটার ঘটনায় সীমান্তে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিএসএফ-এর সহযোগিতায় ভারতীয়রা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের অংশে প্রবেশ করে আম, পেয়ারা ও বড়ই গাছ কাটে। এ ঘটনায় বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ও বিএসএফের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে উত্তেজনা সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কিরণগঞ্জ সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৭৭-এর সাব-পিলার ৩/৪-এর কাছে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দারা কয়েকজন বিএসএফ সদস্যের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে আম ও পেয়ারা গাছ কেটে ফেলে। পরে বড়ই বাগানেও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।

একপর্যায়ে এ দৃশ্য দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের কৃষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা দ্রুত সংগঠিত হয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে বিজিবি দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে, যা আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। বিজিবি এ ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জানায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, "আমাদের জমি ও গাছপালা নষ্ট করে তারা আমাদের ভূমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এক ইঞ্চি মাটিও ছাড়বো না। আমাদের জীবিকা এই জমির ওপর নির্ভরশীল।" তারা আরও বলেন, "যদি এভাবে হামলা চালানো হয়, আমরা কোথায় গিয়ে ন্যায়বিচার পাবো?"

শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএসএফ তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের প্রতিশ্রুতি দেয়।

সীমান্তে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে নোম্যানস ল্যান্ডে কাটাতারের বেড়া নির্মাণ এবং অনুপ্রবেশের মতো ঘটনায় টানাপোড়েন দেখা গেছে। এবার গাছ কাটার ঘটনা সেই উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

বিজিবি জানিয়েছে, বাংলাদেশের সীমান্ত সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারা সর্বদা তৎপর। বিজিবি’র একজন কর্মকর্তা বলেন, "জনগণ আমাদের পাশে আছে। সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত।"

সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুই পক্ষেরই সীমান্তে সুরক্ষা জোরদার করা এবং অনুপ্রবেশ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে