ঢাকা, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১

মেডিক্যালে ভর্তি: ৪১ নম্বর পেয়ে চান্স, ৭০ পেয়েও বঞ্চিত মেধাবীরা

শিক্ষা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ জানুয়ারি ১৯ ২১:৫৭:১২
মেডিক্যালে ভর্তি: ৪১ নম্বর পেয়ে চান্স, ৭০ পেয়েও বঞ্চিত মেধাবীরা

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মেডিক্যাল কলেজ ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী এক লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬০ হাজার ৯৫ জন। তবে ফলাফলের চিত্রে দেখা যাচ্ছে, কোটার সুবিধায় তুলনামূলক কম নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীরা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও, উচ্চ নম্বর পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।

ফলাফলে দেখা গেছে, মাত্র ৪১ থেকে ৪৬ নম্বর পাওয়া শিক্ষার্থীরা কোটার সুবিধায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। অন্যদিকে, ৭০ কিংবা তার বেশি নম্বর অর্জন করেও ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বহু শিক্ষার্থী। এই বৈষম্যের জন্য মূলত মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ অন্যান্য সংরক্ষিত কোটাকে দায়ী করছেন অনেকেই।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৫৭টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে মোট আসন রয়েছে ৫ হাজার ৩৮০টি। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২৬৯টি এবং পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য ৩৯টি আসন সংরক্ষিত। এছাড়া অন্যান্য বিভাগীয় কোটাও সাধারণ আসনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বর ৪০। কোটাভুক্ত শিক্ষার্থীরা এই পাস নম্বর পেলেই ভর্তির যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। এ বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটার ২৬৯টি আসনের বিপরীতে ১৯৩ জন শিক্ষার্থী পাস করেছেন। তাদের তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে ভর্তির চূড়ান্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

কম নম্বরে ভর্তির সুযোগ এবং বেশি নম্বরে বঞ্চিত হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সংগঠক সারজিস আলম ফেসবুকে লিখেছেন, “কোটার নামে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা বন্ধ হওয়া উচিত। মেধার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ দেওয়া না হলে এই বৈষম্য কখনো দূর হবে না।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাহিন সরকার লিখেছেন, “৭০ পেয়ে যদি মেডিক্যালে চান্স না পাওয়া যায়, তবে এই সিস্টেমের পরিবর্তন দরকার। কোটা সংস্কারের দাবি তুলতেই হবে।”

কোটার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য যাচাইয়ের প্রয়োজন। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে চূড়ান্ত মন্তব্য করা কঠিন।”

মেডিক্যালে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটার প্রভাব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক কোটার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করলেও, অধিকাংশই এই পদ্ধতিকে সংস্কারের আহ্বান জানাচ্ছেন।

কোটার কারণে সৃষ্ট এই বৈষম্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের হতাশ করছে। বিষয়টি সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ দাবি করছে। কোটার সংস্কার না হলে মেধাবীরা ক্রমাগত পিছিয়ে পড়বে, যা শিক্ষাব্যবস্থার জন্য দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে