ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩১

বিদেশি ঋণ পরিশোধে রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ৩০ ১৫:৪৫:০৬
বিদেশি ঋণ পরিশোধে রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বাংলাদেশ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে প্রায় ১৭১ দশমিক ১ কোটি মার্কিন ডলার, যা ওই সময়ের মধ্যে নতুন ঋণ আসার চেয়ে অনেক বেশি। এই সময়ে বিদেশি দাতা সংস্থা ও দেশগুলি বাংলাদেশকে মোট ১৫৪ দশমিক ৩ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) রোববার প্রকাশিত মাসিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচ্য সময়ে ঋণ প্রতিশ্রুতি ৯১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কমেছে এবং গত বছরের তুলনায় ঋণ বিতরণ ২৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কমেছে। তবে ঋণ পরিশোধ ২৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে, যা দেশের আর্থিক পরিস্থিতির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। এই সময়ে বাংলাদেশ ১৭১ দশমিক ১ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করেছে, যেখানে বিদেশি ঋণের নতুন প্রতিশ্রুতি এসেছে ১৫৪ দশমিক ৩ কোটি ডলার।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি সময়ে উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ায় উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলি এবং সংস্থাগুলি অর্থছাড়ে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। নভেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হারের ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। উচ্চ সুদের কারণে বিদেশি ঋণ শোধে চাপ বেড়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জুলাই-অগাস্ট মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ঋণ প্রতিশ্রুতি এবং অর্থছাড় কমে এসেছে। ইআরডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাঘাত ঘটায় ঋণের বিতরণও কমে গেছে। বিদেশি পরামর্শক এবং কর্মীরা অনুপস্থিত থাকার কারণে অনেক প্রকল্প স্থগিত হয়ে গেছে। বর্তমানে সরকার ঋণ প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করছে এবং সাময়িকভাবে কিছু ঋণ চুক্তি স্থগিত রেখেছে।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, পর্যালোচনার পর ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সহ উন্নয়ন অংশীদাররা বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন করতে আগ্রহী।

অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি অর্থায়নে নেয়া প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইআরডি সংস্থাগুলোকে বৈদেশিক ঋণ বরাদ্দের জন্য অগ্রাধিকার প্রকল্পের তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে এডিবি, যা ৩১৮ মিলিয়ন ডলার। এরপর রয়েছে জাপান, যার বিতরণ ছিল ৩০৮ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া, রাশিয়া ২৪৫ মিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংক ২০৫ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৬৩ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার ঋণ বিতরণ করেছে।

অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান ড. জাহিদ হোসেন বলেন, চলতি অর্থবছর বিভিন্ন দিক থেকে ব্যতিক্রমী। বিশেষ করে প্রথম দুই-তিন মাসে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থমকে ছিল। বিদেশি ঋণ মূলত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আসে, তবে এই সময়ে বাস্তবায়ন অনেক ধীর গতিতে চলছিল, যার প্রভাব জুলাই-অগাস্ট আন্দোলনে আরও বাড়ে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে