ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১

ভুল স্বীকার করে যে যুক্তি দেখালেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ২৭ ২১:৫২:৪৯
ভুল স্বীকার করে যে যুক্তি দেখালেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এবং জনপ্রিয় ছাত্রনেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি সময় টিভির পাঁচজন গণমাধ্যমকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় নিজের বক্তব্য ও অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।

পোস্টে হাসনাত দাবি করেন, তাকে পরিকল্পিতভাবে একটি ষড়যন্ত্রে ফাঁসানো হয়েছে এবং সময় টিভি ও সিটি গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে তাকে জড়িয়ে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

২৬ ডিসেম্বর বিবিসির এক প্রতিবেদনে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে বলা হয়, হাসনাত আব্দুল্লাহ সিটি গ্রুপের হেড অফিসে গিয়ে কয়েকজন সাংবাদিককে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার জন্য চাপ দেন। সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হাসানও এ দাবি করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের অভিযোগ, গত ১৮ ডিসেম্বর হাসনাত ও তার সঙ্গীরা সময় টিভির এমডির কার্যালয়ে গিয়ে ১০ জনের একটি তালিকা জমা দেন এবং তাদের চাকরিচ্যুত করার চাপ দেন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ এ অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, এ ঘটনা ষড়যন্ত্রমূলক এবং তার ভাবমূর্তি নষ্ট করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে সাজানো।

তার বক্তব্য অনুযায়ী, ১৭ ডিসেম্বর বিকেলে সময় টিভির একজন সাংবাদিকের মাধ্যমে সিটি গ্রুপের এমডি মো. হাসানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাদের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক হয়, যেখানে সময় টিভির সাংবাদিকতার নীতিগত বিষয়ে আলোচনা হয়।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন:

তিনি কোনো সাংবাদিকের নামের তালিকা জমা দেননি।

চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের তিনি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না।

চাকরিচ্যুতির বিষয়ে তার কোনো ভূমিকা নেই।

তিনি বিবিসি বাংলা ও এএফপির কাছে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, তাদের কাছে তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ থাকলে তা প্রকাশ করতে হবে।

হাসনাত পোস্টে দাবি করেন, সময় টেলিভিশন দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রচারযন্ত্র হিসেবে কাজ করেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল ও নেতাদের বিরুদ্ধে ভুয়া এবং অনৈতিক সাংবাদিকতা চালিয়ে আসছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তার ভাষ্য অনুযায়ী, সময় টিভি বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার পরিবর্তে প্রোপাগান্ডামূলক সংবাদ পরিবেশনে লিপ্ত, যা জনস্বার্থবিরোধী।

হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বীকার করেন, সিটি গ্রুপের এমডির সঙ্গে দেখা করা তার একটি ভুল ছিল। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত এবং তাকে ষড়যন্ত্রে ফাঁসানো হয়েছে।

হাসনাত আব্দুল্লাহ এ ঘটনায় চারটি দাবি তুলে ধরেছেন:

চাকরিচ্যুত পাঁচ সাংবাদিককে অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে হবে।

ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।

সিটি গ্রুপের এমডি মো. হাসানকে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রদান ও ষড়যন্ত্রের জন্য তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পোস্টে স্পষ্ট করেন যে তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পক্ষে তিনি বরাবরই সোচ্চার।

তিনি বলেন, "আমি কখনো কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ ছিলাম না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আমি লড়াই করেছি এবং ভবিষ্যতেও করব। মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে আমার অবস্থান ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা বন্ধ করতে হবে।"

এ ঘটনায় তিনি তদন্ত প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

সময় টিভি ও সিটি গ্রুপের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের এই ঘটনা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। হাসনাত আব্দুল্লাহর দাবি ও চ্যালেঞ্জ তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে এ বিষয়ে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন সম্ভব হবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে