ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

জাহাজে ৭ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা, রোমহর্ষক বর্ণনা দিলো খুনি নিজেই

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ২৫ ১৩:৫৮:০৬
জাহাজে ৭ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা, রোমহর্ষক বর্ণনা দিলো খুনি নিজেই

চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল বাখেরা জাহাজে ঘটে যাওয়া রোমহর্ষক সাত খুনের ঘটনায় জড়িত খুনি আকাশ মন্ডল ইরফানকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) র‌্যাব জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। ক্ষোভের বশে মাস্টারকে হত্যা করার পর বাকি সদস্যদের বিষয়টি ফাঁস করার আশঙ্কায় গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জানান, আকাশ মন্ডল ইরফান হত্যাকাণ্ডের আগে জাহাজে থাকা সবাইকে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে অচেতন করেন। এরপর মাস্টারসহ সাতজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। এ ঘটনায় জাহাজের সুকানি মো. জুয়েল প্রাণে বেঁচে গেলেও গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।

জাহাজে মোট নয়জন সদস্য ছিলেন। নিহতরা হলেন মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার মো. সজিবুল ইসলাম, লস্কর মো. মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, সালাউদ্দিন, আমিনুর মুন্সী, এবং বাবুর্চি রানা কাজী। আহত সুকানি জুয়েল বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

র‌্যাব জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর আকাশ মন্ডল ইরফান পালিয়ে বাগেরহাটের চিতলমারীতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ রক্তমাখা চাইনিজ কুঠার, একটি ফোল্ডিং চাকু, দুটি স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন, একটি মানিব্যাগ, নগদ ৮ হাজার টাকা, একটি বাংলা খাতা, একটি সিল ও একটি হেডফোন জব্দ করে।

জাহাজের মালিক মাহবুব মুর্শেদ এই ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করেন। আহত সুকানি জুয়েল লিখে জানান, আকাশ মন্ডল ইরফান হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তার সঙ্গে আরও কেউ ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মোহসীন উদ্দিন নিহতদের পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন। পরিবারগুলোকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের একটি। আকাশ মন্ডল ইরফানের পরিকল্পিত ও নির্মম আচরণে দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তদন্ত শেষে এই ঘটনার পেছনের মূল কারণ ও অন্যান্য জড়িতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে বলে আশা করছে পুলিশ।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে