ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বিকেএসপিতে প্রেম, এরপর বিয়ে, দুই জাতীয় দলের দুই নক্ষত্রের গল্প

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ২২ ২২:০৯:৫০
বিকেএসপিতে প্রেম, এরপর বিয়ে, দুই জাতীয় দলের দুই নক্ষত্রের গল্প

বাংলাদেশ ক্রীড়াঙ্গনে অনুপ্রেরণার গল্প বলতে গেলে একটি নাম অবধারিতভাবে উঠে আসে—নাফিসা তাবাসুম ও জাকের আলী অনিক। একজন বাংলাদেশের জাতীয় শুটার, আরেকজন জাতীয় ক্রিকেট দলের উদীয়মান তারকা। তারা কেবল স্ব স্ব ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাননি, একে অপরের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন এবং দেশের জন্য গর্বের কারণ হয়েছেন।

নাফিসা তাবাসুম বাংলাদেশের জাতীয় শুটিং দলের গর্বিত সদস্য। ২০১৫ সাল থেকে তিনি দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তার সাফল্যের মধ্যে রয়েছে ২০২১ সালে বাংলাদেশ গেমসে সোনা জয়, জাতীয় যুব শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জয় এবং ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় আইএসএসএফ গ্র্যান্ড প্রিক্সে ব্রোঞ্জ জয়। এই অর্জনগুলোর অধিকাংশই এসেছে বিয়ের পর, যা প্রমাণ করে তার স্বামী ও পরিবারের অসাধারণ সাপোর্ট।

জাকের আলী অনিক বাংলাদেশের ক্রিকেটে বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সদ্য শেষ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দলকে হোয়াইটওয়াশে বড় ভূমিকা রেখেছে। তার অভিষেকের সময়ের ৯১ রানের ইনিংস বা বছরের শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৭২ রানের ইনিংস তাকে পরিচিতি এনে দিয়েছে।

তবে তার ক্যারিয়ারের শুরুটা খুব সহজ ছিল না। বিপিএলে ভালো পারফর্ম করার পরও জাতীয় দলে ডাক না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছিলেন। এই সময়ে তার পাশে ছিলেন স্ত্রী নাফিসা, যিনি তাকে ধৈর্য ধরতে এবং নিজের স্বপ্নে অবিচল থাকতে উৎসাহ জুগিয়েছেন।

নাফিসা ও জাকেরের পরিচয় হয় বিকেএসপিতে। তাদের লক্ষ্য ছিল এক—দেশের জন্য খেলবেন। যদিও তারা ভিন্ন ভিন্ন খেলার সাথে যুক্ত, তবে এই লক্ষ্যই তাদের একত্রিত করেছিল। ২০২০ সালে তারা পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন।

বিয়ের পর নাফিসার সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে, জাকের আলী তার স্ত্রীর সাহসে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। এই দম্পতি প্রমাণ করেছেন, সঠিক সমর্থন এবং বিশ্বাস থাকলে প্রতিকূলতাকে জয় করা সম্ভব।

জাকের আলীর পরিবার বরাবরই ক্রীড়াবান্ধব। তার বাবা শওকত আলী ছিলেন সেনাবাহিনীর অ্যাথলেট এবং বোন শাকিলা বাবি ছিলেন হবিগঞ্জ মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। এই পরিবারে ক্রীড়ার প্রতি উৎসাহ সবসময়ই ছিল।

বিয়ের পর নাফিসার সাফল্যের সময় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া সাপোর্ট তাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। অন্যদিকে, নিজের হতাশার সময় স্ত্রীর অনুপ্রেরণায় জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন জাকের।

নাফিসা তাবাসুম ও জাকের আলী অনিক এখন দেশের গর্ব। তাদের মধ্যে সম্পর্কের শক্তি এবং পারস্পরিক সমর্থন ক্রীড়াঙ্গনে অনুপ্রেরণার এক অনন্য উদাহরণ। এই দম্পতি শুধু নিজেদের সফলতার জন্য নয়, দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অগ্রগতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।

এখন জাকের আলী অনিকের নামেই পরিচিত তাদের পরিবার। তবে নাফিসা এই পরিচিতি নিয়ে দারুণ খুশি। তিনি বলেন, "ও আমার অহংকার, ও বাংলাদেশের অহংকার।"

নাফিসা ও জাকেরের গল্প আমাদের শেখায়, স্বপ্ন পূরণের পথে সঙ্গীর সমর্থন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই সফলতম জুটি দেশের জন্য গর্ব এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে