ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

নিষিদ্ধ হচ্ছে সব ধরনের খেলাধুলা!

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ২১ ২৩:৫৪:৫৩
নিষিদ্ধ হচ্ছে সব ধরনের খেলাধুলা!

সম্প্রতি এক বুদ্ধিজীবীর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি খেলাধুলার গুরুত্ব ও বলের পেছনে খেলোয়াড়দের দৌড়ানোর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা ও মেরুকরণ তৈরি হয়েছে। স্পোর্টসের গভীরতা, এর সামাজিক প্রভাব এবং খেলোয়াড়দের অবদানের গুরুত্ব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

বক্তব্যে তিনি বলেন, “একটি বলের পেছনে ১১ জন খেলোয়াড় দৌড়ায়, এটি দেখে হাজার হাজার গণমাধ্যম লাইভ সম্প্রচার করে এবং কোটি কোটি মানুষ দেখেও মুগ্ধ হয়। এর কোনো অর্থ কী?” এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ক্রীড়াজগতের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষত, ক্রীড়াপ্রেমীদের একাংশ মনে করেন, এই ধরনের মন্তব্যে ক্রীড়ার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ পায়।

একজন ক্রীড়া বিশ্লেষক এই বক্তব্যের তথ্যগত ভুলগুলো তুলে ধরেছেন। ফুটবল মাঠে ২২ জন খেলোয়াড় ছাড়াও তিনজন রেফারি বলের পেছনে কাজ করেন। সুতরাং, এটি শুধু ১১ জনের বিষয় নয়।

তিনি আরও বলেন, “বক্তব্যদানকারী হয়তো খেলাধুলার গভীরতা বা এর সামাজিক প্রভাব সম্পর্কে অবগত নন। একজন খেলোয়াড় শুধু মাঠেই নয়, তার কর্ম দিয়ে সমাজে বিশাল প্রভাব ফেলে।”

ক্রীড়াজগতের অসংখ্য দৃষ্টান্ত দেখায়, খেলাধুলা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এটি সমাজে ঐক্য স্থাপন এবং শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে পারে।

ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার পেলে একবার নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধ থামানোর জন্য বিশেষ ভূমিকা রেখেছিলেন। সান্তোস ক্লাবের একটি প্রীতি ম্যাচের শর্তে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি স্থাপন হয়েছিল। এই উদাহরণ প্রমাণ করে, একজন ক্রীড়াবিদ কেবল খেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন না; তার অবদান বিশ্বশান্তি এবং মানবতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

ক্রিকেটার থেকে নেতা হয়ে ওঠা পাকিস্তানের ইমরান খানও এর একটি দৃষ্টান্ত। বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়ক তার নেতৃত্বগুণ ও জনসেবার জন্য দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন।

বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। নুরুল হাসান সোহানের একটি ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি হাতের সার্জারি শেষে শহীদ মিনারে উপস্থিত হয়ে সমর্থন জানিয়ে এক উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন।

এছাড়াও সাম্প্রতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশ দল টিম স্পিরিটের এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে। মাঠে প্রতিপক্ষের একজন খেলোয়াড় আহত হলে রান নেবার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা সেই রান নেননি।

বক্তব্যের সমালোচকরা বলেছেন, “যে ব্যক্তি কখনো বলের পেছনে দৌড়াননি, ব্যাট হাতে খেলা বোঝেননি, তার পক্ষে খেলাধুলার তাৎপর্য বোঝা সম্ভব নয়।” খেলাধুলা শুধু বিনোদনের জন্য নয়, এটি সামাজিক পরিবর্তন, তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখা, এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

উপসংহারবক্তব্যকারী বুদ্ধিজীবীর মন্তব্য খেলাধুলার গুরুত্ব নিয়ে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। তবে ক্রীড়ার সামাজিক ও মানবিক প্রভাবের যে বিশালতাকে উপেক্ষা করা হয়েছে, তা পুনরায় সবার সামনে তুলে ধরেছে এই আলোচনা। খেলাধুলা শুধু বলের পেছনে দৌড়ানো নয়, এটি সমাজের গভীর প্রভাব ফেলে এবং মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে