ঢাকার অবস্থা ভ*য়া*ব*হ খারাপ

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকার স্কোর ছিল ২০৫, যা ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আইকিউএয়ারের তালিকায় বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে।

ঢাকার দূষণের অবস্থা

আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার ছয়টি এলাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

মার্কিন দূতাবাস এলাকা: স্কোর ২৫৩

মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং: স্কোর ২৪৬

আগা খান একাডেমি: স্কোর ২৪৫

গুলশান লেক পার্ক: স্কোর ২২৬

গুলশান ২ (রব ভবন): স্কোর ২২৬

কল্যাণপুর: স্কোর ২১১

বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহরগুলোর তালিকা

একই দিনে দূষণের মাত্রায় বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের রাজধানী দিল্লি, যার একিউআই স্কোর ছিল ৩৪৬। এটি ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ক্যাটাগরিতে পড়ে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাকিস্তানের লাহোর (২৩৫), তৃতীয় স্থানে ঢাকা (২০৫) এবং চতুর্থ স্থানে ছিল ঘানার আক্রা (২০৩)।

একিউআই স্কোর ও এর মানদণ্ড

আইকিউএয়ারের স্কোর অনুসারে বায়ুমানের বিভিন্ন স্তর চিহ্নিত করা হয়:

০–৫০: বাতাসের মান ভালো

৫১–১০০: মাঝারি বা সহনীয়

১০১–১৫০: সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর

১৫১–২০০: সাধারণভাবে অস্বাস্থ্যকর

২০১–৩০০: খুবই অস্বাস্থ্যকর

৩০১ বা তার বেশি: দুর্যোগপূর্ণ

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও প্রভাব

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ঢাকার বায়ুমান শিশু, বয়স্ক, এবং শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে। নিয়মিত দূষিত বাতাসে শ্বাস নেওয়া শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, হৃদরোগ এবং ফুসফুসের ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। সরকারের নেওয়া উদ্যোগগুলোর মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে:

শহরে গাছ লাগানো এবং সবুজায়ন বৃদ্ধি।

রাস্তার ধুলা নিয়ন্ত্রণ।

পরিবহন থেকে নির্গত ধোঁয়া কমাতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার।

কলকারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন।

জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশবান্ধব জীবনযাপনে উৎসাহ দেওয়া।

ঢাকার বায়ুদূষণ পরিস্থিতি কেবল শহরের নয়, গোটা দেশের জন্যই একটি বড় হুমকি। বায়ুদূষণের ভয়াবহ প্রভাব মোকাবিলায় সরকার ও জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।