ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাইয়ের নেপথ্য নায়ক কোচ সালাউদ্দীন

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ২০ ১৬:০৫:৩১
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাইয়ের নেপথ্য নায়ক কোচ সালাউদ্দীন

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাম্প্রতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ছিল এক অনন্য মিশন। ক্যারিবিয়ান মাটিতে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করার কৃতিত্ব শুধু খেলোয়াড়দের নয়, বরং এ সাফল্যের নেপথ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন প্রধান সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীন।

সফরের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য খুব একটা সুখকর ছিল না। টেস্ট সিরিজে পিছিয়ে পড়ার পর কোনোভাবে সিরিজ ড্র করা এবং ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার হতাশা নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল টাইগাররা। কিন্তু সেই হতাশা কাটিয়ে শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা প্রশংসার দাবিদার। এ ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে দলটির ক্রিকেটারদের পাশাপাশি কোচ সালাউদ্দীনের ভূমিকা আলাদা করে উল্লেখ করার মতো।

বাংলাদেশ দলের অধিকাংশ খেলোয়াড় কোনো না কোনো সময়ে ক্লাব ক্রিকেট কিংবা বিপিএলে সালাউদ্দীনের কোচিং পেয়েছেন। তাদের সামর্থ্য, সীমাবদ্ধতা, এবং দক্ষতার জায়গাগুলো সালাউদ্দীনের নখদর্পণে। সালাউদ্দীনকে দলের সঙ্গে যুক্ত করার পর ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস ও পারফরম্যান্সে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গেছে।

ড্রেসিংরুমে তার উপস্থিতি ক্রিকেটারদের মানসিকভাবে উজ্জীবিত রেখেছে। বাংলাদেশের সাবেক ক্রিকেটার ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সালাউদ্দীনের মতো অভিজ্ঞ কোচ দলের সঙ্গে থাকলে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

সালাউদ্দীনের কোচিং কৌশল এবং ক্রিকেটারদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দলের পরিবেশকে অনেকটাই বদলে দিয়েছে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সময় যেখানে ড্রেসিংরুম ছিল চাপা উত্তেজনায় ভরা, সেখানে সালাউদ্দীনের উপস্থিতি ক্রিকেটারদের মাথার ওপর এক ধরনের নির্ভরতার ছায়া তৈরি করেছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে তরুণ এবং অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে এক সংহত দল হিসেবে খেলেছে বাংলাদেশ। তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদসহ অন্যদের পারফরম্যান্সে সালাউদ্দীনের অনুপ্রেরণামূলক ভূমিকা স্পষ্ট।

টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগাররা প্রতিটি ম্যাচে সেরাটা দিয়েছে। মাঠের ক্রিকেট থেকে শুরু করে টিম বাস এবং অনুশীলনের সময় সালাউদ্দীনের উপস্থিতি ক্রিকেটারদের মানসিক চাপ কমিয়ে দলীয় সংহতি তৈরি করেছে।

সিরিজে বাংলাদেশ দলকে দেখা গেছে একটি ইউনিট হিসেবে খেলতে। দলীয় পরিবেশ এতটাই শান্ত ও স্বচ্ছ ছিল যে, ক্রিকেটাররা নিজেদের সেরাটা দিতে পেরেছেন। একক পারফরম্যান্স নয়, বরং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে টাইগাররা সিরিজ জয়ের আনন্দ উপভোগ করেছে।

কোনো সিরিজের প্রথম টেস্টে নাকাল হওয়ার পর শেষ টেস্টে ঘুরে দাঁড়ানো কিংবা ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই হওয়ার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রতিপক্ষকে একইভাবে হারানো, এমন নজির খুব একটা নেই। এই সাফল্যের পেছনে কোচিং স্টাফ এবং বিশেষ করে সালাউদ্দীনের কৌশলী নেতৃত্বের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

বাংলাদেশ দলের এই ঐতিহাসিক সাফল্য দেখিয়ে দিয়েছে, কোচ এবং খেলোয়াড়দের পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং একতাবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে যেকোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় সম্ভব। টাইগারদের এই সিরিজ জয় শুধু একটি ক্রীড়া সাফল্য নয়, বরং বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে