ঢাকা, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

শতাব্দীর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় চিডোর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড সবকিছু, মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়াতে পারে হাজার

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ১৬ ১১:১৯:৩৬
শতাব্দীর প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় চিডোর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড সবকিছু, মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়াতে পারে হাজার

শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় চিডোর তাণ্ডবে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ফরাসি দ্বীপ মায়োট কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। গত শনিবার স্থানীয় সময় ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে ঘূর্ণিঝড়টি দ্বীপে আছড়ে পড়ে। ভয়াবহ এই দুর্যোগে কয়েকশ', এমনকি হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে দ্বীপটির যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। এখনও অনেক এলাকা বিচ্ছিন্ন থাকায় উদ্ধারকর্মীরা জীবিতদের সন্ধানে হিমশিম খাচ্ছেন। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন দ্বীপে পানি ও খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

মায়োটে অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার। এর মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠী এবং অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা মানুষরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।

মামুদজু শহরের একজন বাসিন্দা জানান, "আমরা তিন দিন ধরে পানির অভাবে ভুগছি। বেঁচে থাকার ন্যূনতম প্রয়োজন মেটানোর জন্য সংগ্রাম করছি। জানি না, পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে।"

অন্যদিকে, জন ব্যালোজ নামের এক বাসিন্দা বলেন, "ঘূর্ণিঝড়ের সময় মনে হয়েছিল, আমার জীবন শেষ হয়ে যাবে। বাতাসের প্রচণ্ড গতি দেখে আমি আতঙ্কে চিৎকার করছিলাম।"

প্রত্যক্ষদর্শী মোহামেদ ইসমাইল এই পরিস্থিতিকে "পারমাণবিক যুদ্ধ পরবর্তী ধ্বংসযজ্ঞের মতো" বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, "দারিদ্র্যপীড়িত এবং অনিবন্ধিত অভিবাসীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের অস্থায়ী ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।"

ফরাসি অর্থ সহায়তার ওপর নির্ভরশীল মায়োট দীর্ঘদিন ধরে দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার সঙ্গে লড়াই করে আসছে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় চিডোর আঘাত দ্বীপটির সংকট আরও প্রকট করেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন এবং দ্বীপটির পুনর্গঠনের জন্য ব্যাপক আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে ফরাসি সরকার জরুরি সহায়তা পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতারা।

ঘূর্ণিঝড় বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী দিনে আরও তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। চিডোর মতো ঘূর্ণিঝড় শতাব্দীর ভয়াবহ দুর্যোগগুলোর একটি। এই পরিস্থিতিতে মায়োটের মতো দ্বীপ অঞ্চলে দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন তারা।

দ্বীপের পরিস্থিতি যত দ্রুত স্বাভাবিক করা যায়, ততই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবন বাঁচানো এবং পুনর্গঠন কার্যক্রম সহজ হবে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে