ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

এক জোড়া জুতার দাম ৩৩৫ কোটি টাকা: ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠল জাদুকরী জুতো

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ০৯ ১৬:১০:২১
এক জোড়া জুতার দাম ৩৩৫ কোটি টাকা: ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠল জাদুকরী জুতো

এক জোড়া জুতার দাম ৩৩৫ কোটি টাকা। অবিশ্বাস্য শোনালেও ঘটনাটি সত্যি। এই জুতো কোনো মূল্যবান ধাতু যেমন সোনা বা রুপা দিয়ে তৈরি নয়। তবে এর ঐতিহাসিক মূল্য এটিকে করেছে অত্যন্ত মহামূল্যবান।

এই জুতোটি ব্যবহৃত হয়েছিল ১৯৩৯ সালে মুক্তি পাওয়া বিখ্যাত ক্লাসিক চলচ্চিত্র ‘দ্য উইজার্ড অব দ্য ওজ’-এ। অভিনেত্রী জুডি গারল্যান্ডের পরা লাল রঙের চুমকি খচিত এই জুতোটি চলচ্চিত্রটির অন্যতম প্রতীক হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে আয়োজিত এক নিলামে এটি বিক্রি হয়েছে ২ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৩৫ কোটি টাকার সমান।

‘দ্য উইজার্ড অব দ্য ওজ’ চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছিল শিশুদের জন্য লেখা ফ্রাঙ্ক বমের বই ‘দ্য ওয়ান্ডারফুল উইজার্ড অব ওজ’ অবলম্বনে। বইটিতে ডরোথি চরিত্রের জুতো ছিল রুপার, কিন্তু সিনেমার নির্মাতারা সেটিকে লাল রঙে পরিবর্তন করেন এবং পরিচয় করিয়ে দেন ‘রুবি স্লিপারজ’ নামে।

চলচ্চিত্রে জুডি গারল্যান্ড বেশ কয়েক জোড়া জুতো ব্যবহার করেছিলেন। তবে এগুলোর মধ্যে মাত্র চার জোড়া আজও টিকে আছে। এর একটি প্রদর্শিত হচ্ছে স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব আমেরিকান হিস্টরিতে। নিলামে বিক্রি হওয়া জুতোটি অবশ্য সম্পূর্ণ আলাদা।

এই বিখ্যাত জুতোগুলো একবার চুরির শিকার হয়েছিল। ২০০৫ সালে মিনেসোটার গ্র্যান্ড র‌্যাপিডসে অবস্থিত জুডি গারল্যান্ড মিউজিয়ামে প্রদর্শনের সময় পেশাদার চোর টেরি জন মার্টিন এটি চুরি করেন। তিনি ভেবেছিলেন, জুতোজোড়া রত্নখচিত এবং এর মূল্য অনেক বেশি। তবে পরে বুঝতে পারেন, এগুলোতে রত্ন নয় বরং কাচ ও চুমকি ব্যবহার করা হয়েছে। হতাশ হয়ে জুতোজোড়া তিনি অন্য এক ব্যক্তির কাছে দিয়ে দেন।

চুরি হওয়ার প্রায় ১৩ বছর পর, ২০১৮ সালে, এফবিআই একটি বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে এই জুতোগুলো উদ্ধার করে। অবশেষে ২০২৩ সালে, টেরি জন মার্টিন চুরির দায় স্বীকার করেন।

জুতোজোড়ার নিলাম পরিচালনা করে হেরিটেজ অকশন। প্রতিষ্ঠানটি এই জুতোজোড়াকে হলিউড স্মৃতিচিহ্নের ‘হলি গ্রেইল’ হিসেবে আখ্যা দেয়। এটি সিনেমার ইতিহাসে সর্বোচ্চ মূল্যে বিক্রি হওয়া স্মারক। ডালাসে অনুষ্ঠিত নিলামে বিজয়ী ঘোষণার পর করতালির মাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন উপস্থিত সবাই।

কাকতালীয়ভাবে, ‘দ্য উইজার্ড অব দ্য ওজ’-এর প্রিক্যুয়েল ‘উইকেড’ সম্প্রতি মুক্তি পাওয়ায় চলচ্চিত্রটির প্রতি নতুন করে আগ্রহ দেখা দিয়েছে।

১৯৩৯ সালের এই ক্লাসিক চলচ্চিত্রে ডরোথি চরিত্রে অভিনয় করার সময় জুডি গারল্যান্ডের বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত জনপ্রিয় হয় এবং ভ্যারাইটি ম্যাগাজিনের ‘১০০ সেরা সিনেমা’ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে স্থান পায়।

চলচ্চিত্রে ডরোথি জাদুকরী জুতোর সাহায্যে জাদুর দেশ ওজ থেকে নিজের বাড়ি ক্যানসাসে ফিরে যাওয়ার একটি বিশেষ দৃশ্য এখনও দর্শকদের মনে গেঁথে আছে। সেই জাদুকরী মুহূর্তের অংশ হওয়া জুতোটি আজ ইতিহাসের অমূল্য ধন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে