ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে সরাসরি যাকে দায়ি করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ০৯ ১০:২২:৫৪
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে সরাসরি যাকে দায়ি করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মিরাজ

সেন্ট কিটসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে লড়াই করেও জয় পাওয়া হলো না বাংলাদেশের। টেস্ট সিরিজে সমতা ফেরানোর আত্মবিশ্বাস সাদা বলের ক্রিকেটে ধরে রাখতে ব্যর্থ হলো মেহেদী হাসান মিরাজের দল। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯৪ রান তুলেও ৪৭.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম এবং সৌম্য সরকার। গ্লোবাল সুপার লিগে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সৌম্য জাতীয় দলের জার্সিতেও ভালো শুরু করেছিলেন। তবে ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন তিনি। ১৮ বলে ১৯ রান করে আলজারি জোসেফের বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাকে।

সৌম্যের বিদায়ের পর তিনে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাসও বেশি সময় টিকতে পারেননি। মাত্র ৭ বলে ২ রান করে রোমারিও শেফার্ডের শিকার হন। এদিকে, তানজিদ তামিম শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে রানের চাকা সচল রাখেন। মাত্র ৪৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করা তামিম শেষ পর্যন্ত ৬০ রান করে আউট হন।

মিডল অর্ডারে প্রায় এক বছর পর ওয়ানডে দলে ফেরা আফিফ হোসেন ২৮ রান করেন। রোমারিও শেফার্ডের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। তবে দলের হয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ব্যাট থেকে আসে ১০১ বলে ৭৪ রানের ইনিংস। যদিও ইনিংসটি ছিল ধীরগতির, তবে সেটাই দলের বড় সংগ্রহের ভিত্তি গড়ে দেয়।

ইনিংসের শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং জাকের আলি দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। মাহমুদউল্লাহ ৪৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন এবং শেষ পর্যন্ত ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে, জাকের আলি ৪০ বলে ৪৮ রান করেন। তাদের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৯৬ রান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে আলজারি জোসেফ ৫৩ রানে ২ উইকেট শিকার করেন। রোমারিও শেফার্ড এবং জেইডেন সিলসও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট তুলে নেন।

২৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শুরুটা ভালো হয়নি। স্কোরবোর্ডে ২৭ রান যোগ করতেই দুই ওপেনারকে হারায় তারা। তানজিম হাসান সাকিবের বলে লেগ বিফোর হয়ে ফেরেন ব্র্যান্ডন কিং (৯)। অন্য ওপেনার এভিন লুইস নাহিদ রানার গতির ফাঁদে পড়েন। তিনি করেন ৩১ বলে ১৬ রান।

তৃতীয় উইকেটে শাই হোপ এবং কেসি কার্টি মিলে দলের হাল ধরেন। কার্টি ২১ রানে রিশাদ হোসেনের বলে আউট হলেও হোপ এগোতে থাকেন শতকের পথে। তবে ৮৬ রানে তাকে ফেরান মেহেদী মিরাজ।

এরপর মিডল অর্ডার ব্যাটার শারেফানে রাদারফোর্ড ঝড়ো ইনিংস খেলেন। মাত্র ৮০ বলে ১১৩ রান করে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার সঙ্গে ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন জাস্টিন গ্রেভস।

বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট শিকার করেন নাহিদ রানা, তানজিম সাকিব, মেহেদী মিরাজ, রিশাদ হোসেন এবং সৌম্য সরকার। তবে রাদারফোর্ড এবং গ্রেভসের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের সামনে বোলাররা কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হন।

মেহেদী হাসান মিরাজ ম্যাচ শেষে বলেছেন:

"আমাদের স্কোর নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম। এই ধরনের পিচে ২৯৪ রান খুবই ভালো। তাদেরও কৃতিত্ব দিতেই হবে, বিশেষ করে শাই হোপ এবং রাদারফোর্ডকে, যারা এই উইকেটে চমৎকার একটি পার্টনারশিপ গড়েছে। আমাদের বোলারদের জন্য দিনটি কঠিন ছিল। শুরুটা আমরা ভালো করেছিলাম, বিশেষ করে নাহিদ, তাসকিন এবং তানজিম দারুণ বল করেছে। তবে, মাঝের ওভারে আমরা ভালো বল করতে পারিনি এবং উইকেট নিতে ব্যর্থ হয়েছি, যা আমাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করেছে।

এ ধরনের পরিস্থিতি ক্রিকেটে হতে পারে, তবে উইকেট ভালো ছিল এবং তারা তা ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে। এই ম্যাচ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখব এবং আমাদের ভুলগুলো নিয়ে কাজ করব। এখনও দুটি ম্যাচ বাকি আছে, তাই আমরা মনে করি ঘুরে দাঁড়ানোর ভালো সুযোগ আছে।"

সংক্ষেপে স্কোর

বাংলাদেশ: ২৯৪/৬ (মিরাজ ৭৪, তামিম ৬০, মাহমুদউল্লাহ ৫০*; জোসেফ ২/৫৩)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৯৬/৫ (রাদারফোর্ড ১১৩, হোপ ৮৬; নাহিদ রানা ১/৪৫)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০ ব্যবধানে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল। পরের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নামবে টাইগাররা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে