ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

পলকের সঙ্গেও ছিলেন, এখন বিএনপির সমাবেশেও আছেন, কে এই নারী জেনেনিন পরিচয়

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ০৭ ১৩:২০:২০
পলকের সঙ্গেও ছিলেন, এখন বিএনপির সমাবেশেও আছেন, কে এই নারী জেনেনিন পরিচয়

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বিএনপি আয়োজিত একটি জনসভায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের চাচাতো শ্যালিকা, যুব মহিলা লীগ কর্মী ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টিকে দেখা গেছে। ২০২০ সালে 'জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড' প্রাপ্ত এই নারী বর্তমানে বিএনপির সমাবেশে অংশগ্রহণ করায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে সিংড়া কোর্ট মাঠে অনুষ্ঠিত বিএনপির জনসভায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টিকে মঞ্চে উপস্থিত দেখা যায়। ঘটনাটি স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এম. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের চাচা শ্বশুর প্রভাষক আনিছুর রহমানের মেয়ে এবং সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি। জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি তার দুলাভাই পলকের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করতেন। সিংড়ায় তার বিরুদ্ধে লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক পরিচালনার অভিযোগ ওঠে এবং গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করতে গেলে পলকের প্রভাব ব্যবহার করে সংবাদকর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

এ বিষয়ে সিংড়া পৌর বিএনপির সদস্য সচিব তায়েজুল ইসলাম বলেন, "আওয়ামী লীগের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা এমন একজন মহিলা বিএনপির মঞ্চে ওঠার সুযোগ পায় কিভাবে? এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি পলকের প্রভাব দেখিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স দখল করেছেন এবং সেখানে একটি ক্লিনিক পরিচালনা করছেন।" তায়েজুল আরও বলেন, "উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম আনু তাকে মঞ্চে ওঠার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা এই ঘটনা নিন্দা জানাই এবং দলীয় হাই কমান্ডকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই।"

ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টি ঢাকা পোস্টে বলেন, "আমি বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত। আমার কোনো আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদও নেই এবং বিএনপিতেও কোনো পদে নেই। আমি আজকে যেহেতু সামাজিক কাজ করি, তাই একটি পক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছে।"

এদিকে, সিংড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ারুল ইসলাম আনু বলেন, "তাকে (ভাতিজি ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টিকে) আমি মঞ্চে ওঠাইনি। অনেক মানুষ জনসভায় এসেছে, কিভাবে উঠেছে জানি না। আর সে যে যুব মহিলা লীগের কোনো পদে রয়েছে, এ বিষয়টি আমি জানতাম না।"

এ সম্পর্কিত মন্তব্য করেছেন বিএনপির প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট এম. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যিনি বলেন, "মিটিংয়ে হাজার হাজার লোক এসেছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে কাউকে চিনি না। যখন বিষয়টি আমাদের কানে এসেছে, তাকে সড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।"

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) অ্যাডভোকেট শাহীন শওকত ঢাকা পোস্টে বলেন, "যদি তিনি (দৃষ্টি) আওয়ামী লীগের কোনো পদে থেকে থাকেন বা তার বিরুদ্ধে অপকর্মের প্রমাণ মেলে, তবে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

এদিকে, সিংড়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে ডা. ফারজানা রহমান দৃষ্টির উপস্থিতি নিয়ে চলমান আলোচনা ও ক্ষোভ তীব্রতর হচ্ছে। বিএনপি এখন এ ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে