ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর হ*ত্যা নিয়ে অবিশ্বাস্য তথ্য দিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ০৩ ২০:১৫:১৩
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর হ*ত্যা নিয়ে অবিশ্বাস্য তথ্য দিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা

বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট-২ আসনের তিনবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন। সেদিন রাতেই বনানীর বাসায় ফেরার পথে তার সঙ্গে নিখোঁজ হন তার গাড়িচালক আনসার আলী। এ ঘটনার পর থেকেই বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনগুলো ইলিয়াস আলীর সন্ধানে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে। তবে এক দশকেরও বেশি সময় পরও তার কোনো খোঁজ মেলেনি।

সম্প্রতি, ইলিয়াস আলীর গুম নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বিএনপির সাবেক জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর (অব.) মিজানুর রহমান। এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, ইলিয়াস আলীর গুমে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জড়িত। তিনি আরও বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে ডিজিএফআই, র‌্যাব এবং র‌্যাবের একটি বিশেষ ইউনিট এই ঘটনায় সরাসরি অংশ নিয়েছিল।

মেজর মিজানুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “২০১২ সালের ২৭ মার্চ ঢাকায় যুবদলের একটি বড় কর্মসূচির পরিকল্পনায় ইলিয়াস আলী ছিলেন মুখ্য ভূমিকা পালনকারী। ওই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল ঢাকায় কয়েক লাখ মানুষ জমায়েত করা, যা সরকারের জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন ধারণা করেন, এই পরিকল্পনার মাধ্যমে তার সরকার উৎখাত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে ইলিয়াস আলীকে গুম করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেন বাকিরা শিক্ষা পায়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ইলিয়াস আলীকে গুম করার ঘটনার পেছনে শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশ ছিল। এর সঙ্গে ডিজিএফআই, র‌্যাব এবং র‌্যাবের একটি বিশেষ ইউনিট সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল।”

মেজর মিজান শেখ হাসিনার সরকারকে স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে বলেন, “পৃথিবীর কোথাও স্বৈরাচার চিরস্থায়ী হয়নি। শেখ হাসিনাও এর ব্যতিক্রম হবেন না। তার অন্যায় ও ষড়যন্ত্রের বিচার একদিন হবে। তবে আমি চাই, সেই বিচার লিগাল ওয়েতে হোক। কাউকে বিনা বিচারে হত্যা করা বা ক্রসফায়ারের নামে প্রাণ নেওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলমের মতো অসংখ্য প্রতিপক্ষকে হত্যা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকার নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছে। কিন্তু ইতিহাস বলে, এসব স্বৈরাচারী শাসনের শেষ কখনো ভালো হয় না।”

ইলিয়াস আলীর গুমের পর থেকেই বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এই ঘটনা ঘটেছে। তবে মেজর মিজানের এই দাবির বিষয়ে সরকার এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ইলিয়াস আলীর পরিবার এখনও তার ফিরে আসার আশায় অপেক্ষা করছে। তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা একাধিকবার বলেছেন, “আমার স্বামী কোথায় আছেন, তা সরকার জানে। আমরা শুধু তার খোঁজ চাই। জীবিত থাকলে তাকে ফেরত দিন, আর না থাকলে তার মরদেহ হলেও দিন।”

ইলিয়াস আলীর গুম বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অমীমাংসিত অধ্যায় হয়ে রয়ে গেছে। এ ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক, অভিযোগ ও পাল্টা-অভিযোগ থাকলেও সত্যিকারের বিচার বা অনুসন্ধান আজও অধরা। মেজর মিজানের সাম্প্রতিক বক্তব্য নতুন করে ইলিয়াস আলীর গুমের ঘটনা আলোচনায় এনেছে, যা হয়তো ভবিষ্যতে এ ঘটনার নতুন মোড় আনতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে