ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ব্রেকিং নিউজ: বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুর, যা বলছে ভারত

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ ডিসেম্বর ০২ ২০:০১:১৫
ব্রেকিং নিউজ: বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুর, যা বলছে ভারত

ভারতের ত্রিপুরার আগরতলার কুঞ্জবনে অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) স্থানীয় একটি হিন্দুত্ববাদী সমিতির বিক্ষোভ চলাকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও ভারত সরকার তাৎক্ষণিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে এবং নিরাপত্তা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেয়।

জানা গেছে, বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাস নামে একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আগরতলায় স্থানীয় একটি হিন্দুত্ববাদী সমিতি বিক্ষোভের আয়োজন করে। বিক্ষোভটি আগরতলার সার্কিট হাউসে অবস্থিত গান্ধী মূর্তির সামনে শুরু হলেও, পরে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীদের একটি দল বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে।

বিক্ষোভকারীরা হাইকমিশনের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে এবং প্রাঙ্গণে থাকা সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সহিংসতার এই ঘটনা দ্রুতই কূটনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

এ ঘটনার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র দুঃখ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে:

“আগরতলার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। কূটনৈতিক ও কনস্যুলার সম্পত্তির সুরক্ষা ভারতের সরকার ও জনগণের দায়িত্ব। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভারত সরকার ইতোমধ্যে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ ভারতের অন্যান্য শহরে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের সহিংসতা দুই দেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নষ্ট করার চেষ্টার অংশ হতে পারে। তবুও, ভারত সরকারের দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং দুঃখ প্রকাশ কূটনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ ঘটনার বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার ভারতের দেওয়া নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখছে এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতে নানা মহলে ক্ষোভ দেখা দেয়। এসব অভিযোগকে কেন্দ্র করেই এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষের উস্কানি হতে পারে। তদন্তে এই হামলার সঙ্গে কারা জড়িত এবং এর পেছনে প্রকৃত উদ্দেশ্য কী, তা উদ্ঘাটন করার ওপরই এখন জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই দেশের সরকার যদি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারে, তবে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানো সম্ভব হবে।

হাইকমিশনে হামলার এই ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তিতে এই পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুই দেশের পক্ষ থেকেই শান্তি বজায় রাখতে কূটনৈতিকভাবে দায়িত্বশীল আচরণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে