ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতির পাল্টা জবাব দিল বাংলাদেশ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ নভেম্বর ২৭ ০৯:৩৪:৩০
চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতির পাল্টা জবাব দিল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র এবং পুণ্ডরীক ধামের সাবেক অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারত যে মন্তব্য করেছে, তা ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির প্রেক্ষিতে রাতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রতিক্রিয়া জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে একটি নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু তার গ্রেফতার নিয়ে কিছু মহল ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। এটি সত্যকে বিকৃত করার পাশাপাশি দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও বোঝাপড়ার চেতনাকে আঘাত করছে।

এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিন্ময় দাসের গ্রেফতার এবং জামিন নাকচ হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারা উল্লেখ করে, বাংলাদেশের হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিক হামলার প্রেক্ষাপটে এ ঘটনা গভীরভাবে উদ্বেগজনক।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এ ঘটনার অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলেও একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ চাপানো হয়েছে, যিনি শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে ন্যায্য দাবিগুলো উপস্থাপন করেছিলেন। হিন্দুসহ সব সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

এর প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি বিবৃতি বাংলাদেশ সরকারের নজরে এসেছে।

ঢাকা বলছে, অত্যন্ত হতাশা এবং গভীর দুঃখের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার উল্লেখ করছে যে শ্রী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেফতার করার পর থেকে তার গ্রেফতারকে কিছু মহল ভুলভাবে ব্যাখ্যা করছে। বাংলাদেশ সরকার বলতে চায়, এই ধরনের ভিত্তিহীন বিবৃতি শুধু সত্যকে বিকৃত করে না বরং দুই প্রতিবেশি দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বোঝাপড়ার চেতনার পরিপন্থি।

বিবৃতিটি সব ধর্মের জনগণের মধ্যে বিদ্যমান সম্প্রীতি এবং এই বিষয়ে সরকার ও জনগণের প্রতিশ্রুতি এবং প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করে না বলে মন্তব্য করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে জনগণের ওপর গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি চলে আসছিল তা সমাপ্ত করার বিষয়ে সরকারের যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা রয়েছে এবং সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুদের একই নজরে দেখার যে দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, ভারতের বিবৃতি সেটি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে নিশ্চিত করে, প্রত্যেক বাংলাদেশির তার ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে, নিজ নিজ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, বজায় রাখা বা পালন করার বা বাধা ছাড়াই মতামত প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে। সব নাগরিকের, বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকারের একটি দায়িত্ব। গত মাসে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা পালনের মাধ্যমে এটি আবারো প্রমাণিত হয়েছে।

আরো বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার আবারো বলতে চায় যে, দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং এটি বিচার বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ করে না। প্রশ্নধীন বিষয়টি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারও দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আজ বিকেলে চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যেকোনো মূল্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য কর্তৃপক্ষ বন্দর নগরীতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে