ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

আল্লাহর জিকিরে আসে আত্মার প্রশান্তি

২০২৪ নভেম্বর ১৫ ১০:২৮:২৫
আল্লাহর জিকিরে আসে আত্মার প্রশান্তি

জিকির মানুষের অশান্ত হৃদয়ে প্রশান্তি দান করে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা ইমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের অন্তর প্রশান্ত হয়, জেনে রেখ, আল্লাহর জিকির দ্বারাই অন্তরগুলো প্রশান্ত হয়।’ (সূরা রাদ, আয়াত : ২৮)। আল্লাহর জিকিরে মগ্ন থাকা যে আমাদের জীবনে কত বড় নেয়ামত সেটার মর্ম আমরা অনেকেই বুঝি না। রাসূল (সা.) বলেছেন আল্লাহ বলেন, ‘আমার জিকির যাকে এমনভাবে নিমগ্ন রাখে যে, সে আমার কাছে কিছু চাওয়ার সময় পায় না, তাকে আমি এমন বস্তু দান করব, যা প্রার্থনাকারীদের প্রাপ্য বস্তুর চেয়েও উত্তম।’ (সহিহ বুখারি)। আমরা প্রতিদিন নানাভাবে আমাদের সময় ব্যয় করে থাকি। কোনো সাফল্য অর্জনের জন্য আমরা মরিয়া হয়ে ছুটে বেড়াই। অথচ ইসলাম জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার কত সুন্দর সুযোগ করে দিয়েছে। প্রতিদিনের কাজের ফাঁকে আমরা আল্লাহর বিভিন্ন জিকিরের (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার) মাধ্যমে আল্লাহর কাছে আমাদের সব চাহিদা নিবেদন করতে পারি।

আবার আল্লাহর জিকির শয়তানকে দূরে সরিয়ে দেয় ও তার শক্তিকে নষ্ট করে দেয়। আমরা প্রতিদিন ইচ্ছায় অনিচ্ছায় শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে নানা পাপ কাজ করে ফেলি। শয়তান আমাদের পথভ্রষ্ট করার জন্য প্রতিদিনই কোনো না কোনো ফাঁদ তৈরি করে। শয়তানের এ ফাঁদ থেকে রক্ষার অন্যতম হাতিয়ার হলো আল্লাহর জিকিরে মগ্ন থাকা। আবার আল্লাহর প্রতি জিকির মানুষের দুশ্চিন্তা কমিয়ে দেয় এবং অন্তরে প্রশান্তি দান করে। আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের রিজিকে বারাকাহ দান করেন। আল্লাহ আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর তার জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অতঃপর যখন তোমরা নামাজ শেষ কর, তখন দাঁড়িয়ে, বসে এমনকি শায়িত অবস্থায় আল্লাহর জিকির কর।’ (সূরা নিসা-১০৩)।

আমাদের জীবনের অনেক সময় আমরা কর্মব্যস্ততায় কাটাই। সেই ব্যস্ততার মাঝে প্রতিদিন নিয়ম করে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার বলার মাধ্যমেও আমরা আল্লাহর সান্নিধ্যে আসতে পারি। ‘প্রতিদিন ১০০ বার সুবহানাল্লাহ পাঠ আল্লাহর রাস্তায় ১০০ উট দানের চেয়ে উত্তম, ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ পাঠ জিহাদের জন্য আরোহণকারীসহ ১০০ অশ্ব দানের চেয়ে বেশি উত্তম, ১০০ বার আল্লাহু আকবার পাঠ ১০০ কৃতদাস মুক্ত করার চেয়ে উত্তম’-(আত তারগিব ওয়াত তারহিব)। অর্থাৎ অতিঅল্প সময়ের এ জিকিরগুলোর মাধ্যমে অধিক সওয়াব অর্জনের পাশাপাশি আমাদের আকুতিগুলো সহজেই আল্লাহর কাছে নিবেদন করতে পারি। এছাড়া কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমরা প্রতিদিন দরুদ ও ইস্তেগফারও পড়তে পারি। রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পড়বে, আল্লাহ তার প্রতি দশবার রহমত নাজিল করবেন এবং তার দশটি গুনাহ মাফ করা হবে, আর তার মর্যাদা দশগুণ উচ্চ করা হবে।’ (নাসাঈ-১২৯৬)। আর এ জিকিরগুলো ওজু ছাড়াও সর্বাবস্থায়ই পড়ার নির্দেশ রয়েছে। কাজেই আমাদের উচিত জীবনের সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকিরে নিমগ্ন থাকার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে