ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১

চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস: জীবিত স্বামীকে মৃত বানিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ নভেম্বর ১২ ২৩:১৩:৪০
চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস: জীবিত স্বামীকে মৃত বানিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঘটনার সূত্র ধরে সাভারের আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন কুলসুম নামে এক নারী। মামলায় তার স্বামী আল আমিনকে মৃত দেখিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩০ জনকে আসামি করা হয়। কুলসুমের দাবি ছিল, আন্দোলনের সহিংসতায় নিহত ওই ব্যক্তি তার স্বামী আল আমিন।

পুলিশ জানায়, ৫ আগস্টের আন্দোলনের সময় আশুলিয়া থানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির মরদেহ পাওয়া যায়, যার পরিচয় ছিল অজানা। সেই অজ্ঞাত ব্যক্তিকেই নিজের স্বামী বলে দাবি করেন কুলসুম। ২৪ অক্টোবর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি শেখ হাসিনাসহ আরও ১৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন, যা পরে ৮ নভেম্বর আশুলিয়া থানায় এজাহারভুক্ত হয়।

তদন্তের এক পর্যায়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে আল আমিন আসলে জীবিত এবং সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার এলাকায় অবস্থান করছেন। র‌্যাবের সহায়তায় আল আমিনের সন্ধান পাওয়া যায় এবং তার সাথে সরাসরি কথা বলে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তিনি কোনো আন্দোলনে নিহত হননি এবং সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।

মঙ্গলবার ভোরে সিলেট মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানার একটি কক্ষে বসে আল আমিন নিজে র‌্যাবের কাছে জানান তার জীবিত থাকার কথা এবং পুরো ঘটনায় তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, এই মামলার বিষয়ে তিন দিন আগে তার বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলমের মাধ্যমে জানতে পারেন এবং তার পরে পুলিশ ও থানায় সহযোগিতা চাইলেও কোনো সমাধান পাননি।

আল আমিন হেসে হেসে বলেন- ‘আমি মরিনি। আমি বেঁচে আছি।’

বাদী কুলসুমের ছবি দেখে নিশ্চিত করেন ছবির মানুষটি মামলার বাদী ও তার স্ত্রী কুলসুম। এরপর জানান একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে এসব জানাজানির পর থেকে কুলসুমের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

আল আমিন বলেন, বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে মোবাইল ফোনে কথার সূত্র ধরে ভালোবেসে বিয়ে করি কুলসুমকে। ঘরে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। কয়েক মাস ধরে পারিবারিক কলহ বেড়ে যাওয়ায় সময়টা ভালো যাচ্ছিল না। দেশে গণ্ডগোলের পুরোটা সময় আমি ও আমার স্ত্রী মৌলভীবাজারের জুড়িতে অবস্থান করেছি। সেই সময় আশুলিয়ায় একবারের জন্যও যাইনি। অথচ আমাকে মৃত দেখিয়ে মিথ্যা মামলা করেছে আমার স্ত্রী।

আল আমিন আরও বলেন, আন্দোলনের সময় স্ত্রীর সঙ্গে সাংসারিক বিষয়ে রাগারাগি হয়। পরে কুলসুম তার বাড়িতে চলে যায়। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ হয়নি।

জীবিত ছেলেকে মৃত দেখিয়ে মামলার ঘটনায় হতবাক আল আমিনের বাবা নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এমনটা হওয়ায় আমাদের পুরো পরিবার এখন আতঙ্কিত। ছেলের বউ কুলসুম কেন এমনটি করেছে তা মাথায়ও আসছে না। বিষয়টি নিয়ে কুলসুম কোনো কথাও বলছে না।

আশুলিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানা থেকে আল-আমিনকে উদ্ধার করার জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাকিব সিলেটে গিয়েছেন। তাকে উদ্ধারের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কুলসুমের ব্যাপারে তিনি যুগান্তরকে বলেন, তিনি কোথায় আছেন আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে