ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

বাংলাদেশকে সিরিজ হারিয়ে বড় গলায় যা বললেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ নভেম্বর ১২ ০১:৫০:৩৭
বাংলাদেশকে সিরিজ হারিয়ে বড় গলায় যা বললেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচে পাঁচ উইকেটে হারল বাংলাদেশ। এই জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজটিও জিতে নিল আফগানিস্তান। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটিতে রহমানউল্লাহ গুরবাজের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির সুবাদে জয় ছিনিয়ে নেয় হাশমতউল্লাহ শহীদীর দল।

বাংলাদেশ টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে ভালো শুরু পায়। সৌম্য সরকার এবং তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে আসে ৫৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। তবে ইনিংসের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পেরে, দ্রুতই চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে টাইগাররা। সৌম্য সরকার করেন ২৩ বলে ২৪ রান এবং তানজিদ ২৯ বলে করেন ১৯ রান। জাকির হাসান ও তাওহিদ হৃদয়ের বিদায়ের ফলে ৭২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ কিছুটা বিপদে পড়ে।

এমন কঠিন পরিস্থিতিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মেহেদী হাসান মিরাজ দলের হাল ধরেন। তাদের ১৪৫ রানের কার্যকরী জুটির সুবাদে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। রিয়াদ দ্রুত রান তুললেও, মিরাজ খেলেছেন ধৈর্য ধরে। দুজনই ফিফটি স্পর্শ করেন এবং দলকে এগিয়ে নেন বড় সংগ্রহের দিকে। মিরাজ ১১৯ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন। রিয়াদ শেষ ওভার পর্যন্ত টিকে থেকে ৯৮ বলে ৯৮ রান করেন। তবে শেষ বলে রানআউট হওয়ায় সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন তিনি।

বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ২৪৪ রান। আফগানিস্তানের হয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই নেন ৪ উইকেট, এছাড়া রশিদ খান এবং মোহাম্মদ নবী পান একটি করে উইকেট।

২৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান উদ্বোধনী জুটিতে পায় ৪১ রান। অভিষিক্ত নাহিদ রানা ১৮ বলে ১৪ রান করা সেদিকউল্লাহ আতালকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন। তবে অপর প্রান্তে গুরবাজ টিকে ছিলেন এবং ক্রমাগত রান তুলছিলেন। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে রহমত শাহ (৮) ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদির (৬) বিদায়ের পর কিছুটা চাপে পড়লেও গুরবাজের ব্যাটিং দৃঢ়তায় টিকে থাকে আফগানিস্তান।

দলীয় সংগ্রহ যখন ১৮৪, তখন গুরবাজ তার সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ১২০ বলে ১০১ রানের ইনিংস খেলে তিনি আউট হন মেহেদী হাসান মিরাজের বলে। এই ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৭টি ছক্কার মার, যা আফগানিস্তানের জয়ের পথ সহজ করে দেয়।

গুরবাজের বিদায়ের পর আজমতুল্লাহ ওমরজাই এবং অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী মিলে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছায় আফগানিস্তানকে। ১০ বল হাতে রেখে ম্যাচটি শেষ করেন তারা। ওমরজাই ৭৭ বলে ৭০ রান এবং নবী ২৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে নাহিদ রানা এবং মুস্তাফিজুর রহমান দুটি করে উইকেট পান। মেহেদী হাসান মিরাজ নেন ১ উইকেট। তবে গুরবাজ ও ওমরজাইয়ের কার্যকরী ব্যাটিংয়ের সামনে তারা জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি।

সিরিজ জয়ের আশা নিয়ে নামলেও শেষ পর্যন্ত হারতে হলো বাংলাদেশকে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত ইনিংসের পরেও গুরবাজের সেঞ্চুরি এবং ওমরজাইয়ের জয়ের প্রতিরোধের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে টাইগাররা।

হাশমতউল্লাহ শহীদি (আফগানিস্তান অধিনায়ক):

"অধিনায়ক হিসেবে আমি খুবই খুশি। আমার দল যেভাবে দায়িত্ব নিয়েছে, আমি গর্বিত। আমরা টস হারার পর একটু হতাশ হয়েছিলাম, কারণ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করা কঠিন ছিল। কিন্তু আমাদের ছেলেরা গুরবাজ, ওমরজাই এবং নবীর মতোন দায়িত্ব নিয়ে খেলেছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। গুরবাজের সেঞ্চুরি নিয়ে বলতে গেলে, সে একজন ম্যাচ উইনার। সে রান করলে আমাদের দলের জয়ের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। আমরা আশা করছি, সে তার ফর্ম ধরে রেখে আগামী সিরিজ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পারফর্ম করতে পারবে। আমরা টানা তিনটি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি। সবাই দারুণ পারফর্ম করছে, যা আমাদের দলকে আরও শক্তিশালী করবে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ, এবং আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ভালো মোমেন্টাম নিয়ে যেতে চাই।"

মেহেদী হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ অধিনায়ক):

"আমাদের জন্য কাজটা কঠিন ছিল, তবে ছেলেরা ভালো খেলেছে, বিশেষ করে মাহমুদউল্লাহ ভাইয়ের সাথে আমার জুটিটা। গত দুই ম্যাচে দেখেছি উইকেট স্পিন করছে, এজন্যই আমরা প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু আজ কিছুটা শিশির পড়ছিল, যার কারণে বল বেশ সহজে আসছিল। গুরবাজ ও ওমরজাইয়ের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের জন্য তাদের কৃতিত্ব প্রাপ্য। আমরা মাঝের ওভারে উইকেট নিতে পারিনি, যা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে নাহিদ রানার পারফরম্যান্সে আমি খুশি। সে ভালো খেলছে এবং তার ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে।"

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে