ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজে ম্যাচ সেরা ও সিরিজ সেরা হলেন যারা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ নভেম্বর ১২ ০০:৩৫:১১
বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের মধ্যকার ওয়ানডে সিরিজে ম্যাচ সেরা ও সিরিজ সেরা হলেন যারা

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে পাঁচ উইকেটে হেরে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেওয়া ২৪৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজের সেঞ্চুরি ও আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের দায়িত্বশীল ইনিংসে জয় নিশ্চিত করে আফগানিস্তান।

ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থান

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান সংগ্রহ করে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৮ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, যিনি শেষ বলে রান আউট হয়ে সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন। রিয়াদের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজের ৬১ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের স্কোরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ক্র্যাম্পের কারণে সঠিক সময়ে সেঞ্চুরি করতে না পারলেও রিয়াদ দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।

গুরবাজের পাল্টা আক্রমণ এবং ম্যাচের রূপান্তর

আফগানিস্তানের ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ শুরুতেই তার শক্তিশালী ব্যাটিং প্রতিভার প্রমাণ দেন। দুই ম্যাচে তাসকিন আহমেদের বলে আউট হলেও, আজকের একাদশে তাসকিনের অনুপস্থিতিতে গুরবাজ বোলারদের ওপর চড়াও হন। অভিষিক্ত নাহিদ রানা দ্রুত গতির বল করে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করলেও গুরবাজ ও আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের পাল্টা আক্রমণে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। এই জুটি চতুর্থ উইকেটে ১০০ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তানকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।

বাংলাদেশি ফিল্ডিংয়ে সুযোগ মিস এবং গুরবাজের সেঞ্চুরি

গুরবাজ দুইবার জীবন পেয়ে আরও শক্ত হাতে বাংলাদেশের বোলারদের মোকাবিলা করেন। প্রথমবার রিশাদ হোসেনের হাত থেকে এবং দ্বিতীয়বার জাকের আলি অনিকের স্টাম্পিং মিসের কারণে তাকে আউট করা সম্ভব হয়নি। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে না পারায় গুরবাজ ১২০ বলে ৫ চার ও ৭ ছক্কায় দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেন, যা ওয়ানডেতে তার অষ্টম সেঞ্চুরি এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয়।

শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত

গুরবাজের আউট হওয়ার পরেও আজমতুল্লাহ ওমরজাই এবং অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবি মিলে সহজেই আফগানিস্তানকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যান। পেনাল্টিমেট ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন ওমরজাই। ইনিংস শেষে ওমরজাই অপরাজিত ৭০ এবং নবি অপরাজিত ৩৪ রানে ক্রিজে ছিলেন।

বাংলাদেশি বোলারদের পারফরম্যান্স

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে মুস্তাফিজুর রহমান এবং অভিষিক্ত নাহিদ রানা দুটি করে উইকেট নেন। তবে শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজকে গুরবাজ ও ওমরজাই ভালোভাবেই সামলেছেন, যার ফলে ম্যাচটি আফগানিস্তানের পক্ষে চলে যায়। এছাড়া নাসুম আহমেদ তার ১০ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে রান আটকে রাখলেও দলের জন্য শেষ পর্যন্ত তা যথেষ্ট হয়নি।

শেষ কথা

এ ম্যাচের পর বাংলাদেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ হারার কষ্ট নিয়ে দেশে ফিরবে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দুর্দান্ত ইনিংসের পরেও বাংলাদেশের বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে কিছু ভুলের কারণে জয়ের মুখ দেখা সম্ভব হয়নি।

**মোহাম্মদ নবী, সিরিজ সেরা খেলোয়াড়:** "আমার মনে, শেষ বিশ্বকাপের পর থেকেই আমি অবসরের দিকে ছিলাম, কিন্তু আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য যোগ্যতা অর্জন করায় ভেবেছিলাম যদি সেখানে খেলতে পারি, দারুণ হবে। (তার ভূমিকা সম্পর্কে) আমার ছোট ছোট অবদান তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক হতে পারে। বেশিরভাগ সময় গজনফর ও খারোটের সাথে বলের গতি নিয়ে আলোচনা করি, যা অনেক সহায়ক। আগের মৌসুমে ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারিনি, কিন্তু এই সিরিজের আগে অনেক পরিশ্রম করেছি এবং লক্ষ্য ছিল এই সিরিজে পারফর্ম করা। দলের জন্য কিছু করতে পেরে ভালো লাগছে। ওমরজাইকে এক রান নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম, কারণ উইকেট সহজ ছিল এবং বল ব্যাটে ভালো আসছিল। তাই বলের দিকে নজর রেখে সোজা খেলা এবং বাউন্ডারি আসবে এমনটাই ছিল আমার বার্তা।"

**আজমতুল্লাহ ওমরজাই, ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়:** "ব্যাটিং করার সময় আমার মনের মধ্যে কী ছিল তা নিয়ে বলতে চাই, প্রথমে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা। পরপর দুটি খারাপ ম্যাচের পর আমার জন্য এটি কঠিন ছিল। আমি ইতিবাচক ছিলাম এবং যেখানে বল মারতে চেয়েছি সেখানে মারার চেষ্টা করছিলাম। গুরবাজ উইকেটে ছিল, তাই আত্মবিশ্বাস ছিল। কয়েকটি বল মিস করলেও আমার চিন্তা ছিল না, কারণ গুরবাজ আমাকে কভার দিতে পারবে। যখনই ঢিলেঢালা বল পেলাম, তখনই বাউন্ডারি আনার চেষ্টা করেছি। (বোলিংয়ে) উইকেটটা ধীর ছিল, বল কিছুটা আটকে যাচ্ছিল। তাই বৈচিত্র্য ব্যবহার করার চেষ্টা করেছি। রশিদ ভাই বলেছিল বিভিন্ন ধরনের ডেলিভারি করতে, যা কাজে লেগেছে। (ডেথ ওভারে বল করা) আমার জন্য কঠিন ছিল, কারণ আগে কখনো শেষ ওভারে বল করিনি। এই পুরস্কার পেয়ে আমি খুবই খুশি; এটি আমার প্রথম ওডিআই ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার এবং আমি অত্যন্ত আনন্দিত।"

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে