ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভারতের দেয়া টিডি এর শক্তিতে যা যা করতে পারবেন শেখ হাসিনা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ অক্টোবর ১১ ১৭:২৯:৩৫
ভারতের দেয়া টিডি এর শক্তিতে যা যা করতে পারবেন শেখ হাসিনা

৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ এবং ভারত পালানোর ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকার তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে, যা তাকে একটি "কূটনৈতিক সংকটে" ফেলেছে। এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, তিনি ভারতে কীভাবে এবং কোন পরিচয়ে অবস্থান করছেন।

একটি সংবাদসূত্র জানিয়েছে যে, শেখ হাসিনা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট (টিডি) পেয়েছেন। সাধারণত, ট্রাভেল ডকুমেন্ট শরণার্থী বা অন্য কোনো বিশেষ পরিস্থিতির কারণে আশ্রয়প্রার্থীদের দেওয়া হয়, যা তাদের ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত হয়। ভারতের ক্ষেত্রে, তিব্বতি শরণার্থীদের উদাহরণ টানা হয়, যারা ভারতের টিডি ব্যবহার করে অন্যান্য দেশে ভ্রমণ করেছেন। বিশেষ করে তিব্বতি আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামার উদাহরণটি গুরুত্বপূর্ণ। তাকে টিডি দিয়ে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ ও কূটনৈতিক কার্যক্রম চালানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, যা বর্তমানে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে।

শেখ হাসিনার টিডি পাওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের ওই নেতা বলেন, ‘নেত্রীকে (শেখ হাসিনা) ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দেওয়া হয়েছে, সেই ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে বিশ্বের যেকোনো দেশের ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন তিনি।’ তিনি বলেন, ‘ভারতেই শেখ হাসিনাকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। তার বোন শেখ রেহানাও সেখানে অবস্থান করছেন। অবশ্য ট্রাভেল ডকুমেন্ট পেলেও আপাতত শেখ হাসিনা ভারতেই থাকবেন। শিগগিরই ভারতের বাইরে ভ্রমণে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই তার।

অবশ্য শেখ হাসিনার জন্য ভারত ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ ইস্যু করেছে কি না, ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি।

এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন ঢাকার একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী ব্রিফিংয়ের জন্য অপেক্ষা করুন। সেখানে প্রশ্ন করে দেখুন, মুখপাত্র কী বলেন!’

ভারতের সাবেক এক কূটনীতিক বলেছেন, ‘ভারত যদি শেখ হাসিনাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট সত্যিই দিয়ে থাকে, আমি তাতে এতটুকুও অবাক হবো না। কারণ এই পরিস্থিতিতে এটাই সবচেয়ে স্বাভাবিক ও প্রত্যাশিত পদক্ষেপ।’

তিনি আরো বলেছেন, ‘ভারতে ম্যাকলিয়ডগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় যে কয়েক লাখ তিব্বতি শরণার্থী থাকেন, তারাও কিন্তু বেশির ভাগই ভারতের পাসপোর্টধারী নন। বরং এই ধরনের ট্রাভেল ডকুমেন্ট (সংক্ষেপে যেটাকে বলে টিডি) নিয়েই তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সফর করেন।’ ওই কূটনীতিক আরো বলেন, ‘জানি না ভারত শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম) দেবে কি না। কিন্তু গত দুই মাসের ঘটনাপ্রবাহ যেভাবে গড়িয়েছে, তাতে দালাই লামার ঘটনার সঙ্গে আমি কিন্তু শেখ হাসিনার কেসের অনেক মিল পাচ্ছি। ভারতে যত দিনই থাকুক, শেখ হাসিনা হাত গুটিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে থাকবেন, এটা তো আর হতে পারে না। দালাই লামাও তাই করেছেন, রাজনীতি ও কূটনীতি চালিয়ে গেছেন এবং পৃথিবীর বহু দেশে সফর করেছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘একইভাবে রাজনৈতিক প্রয়োজনে, বিশ্বময় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে শেখ হাসিনাকেও ভারতের বাইরে যেতে হবে, এটাই স্বাভাবিক। সেই বাস্তবতা অনুধাবন করে ভারত যদি তাকে টিডি বা আইসি দিয়ে থাকে, সেটাতে তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই।’

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে