ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

লাগামহীন ভাবে বাড়ছে ডিমের দাম, দেখেনিন নতুন মূল্য

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ অক্টোবর ০৭ ০৯:৩৮:০৪
লাগামহীন ভাবে বাড়ছে ডিমের দাম, দেখেনিন নতুন মূল্য

বর্তমানে ডিমের বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে, যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকায় পৌঁছেছে, যা কয়েক মাস আগেও কল্পনাতীত ছিল। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ চরম অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে, কারণ ডিম একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে পরিচিত।

সরকার ডিমের এই লাগামহীন দামের পেছনে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও তার সুফল মিলছে না। ডিমের দাম কমানোর উদ্দেশ্যে উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এমনকি ভারত থেকে ডিম আমদানি করা হচ্ছে, কিন্তু বাজারের চিত্র পরিবর্তন হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেট মুনাফা করার লক্ষ্যে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ডিমের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাজার তদারকির ক্ষেত্রে দুর্বলতা বড় ভূমিকা রাখছে। যদিও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর তদারকি করছে, কিন্তু অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর কার্যক্রমে ঘাটতি থাকায় সিন্ডিকেটগুলো দাপট দেখাচ্ছে। এর ফলে সরকার নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের চিত্র আরও ভয়াবহ। রামপুরা, বাড্ডা, জোয়ারসাহারা, এমনকি ছোট ছোট মহল্লা বাজারগুলোতেও ডিমের দাম নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি। খুচরায় ডিম প্রতি হালি ৬০ টাকা এবং ডজন প্রতি ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাড়ায় আবার এ দাম ১৮০ টাকায় পৌঁছেছে। শুধু ডিম নয়, সবজির দামও বেশ বেড়ে গেছে, কাঁচা মরিচসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজি প্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের মতে, দেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা ৪ কোটি পিস, অথচ বর্তমান উৎপাদন হচ্ছে ৩.৭ থেকে ৩.৮ কোটি পিসের মতো। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং খামারের ক্ষতির কারণে উৎপাদন কমে গেছে, কিন্তু চাহিদা অপরিবর্তিত থাকায় বাজারে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই ঘাটতির সুযোগ নিয়ে কিছু করপোরেট ব্যবসায়ী ও তেজগাঁওয়ের কিছু ডিম ব্যবসায়ী বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তাদের মুনাফা বাড়িয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই সংকট নিরসনে সরকার ভারত থেকে ডিম আমদানি করছে। গত কয়েক সপ্তাহে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৪০ পিস ডিম আমদানি হয়েছে। আমদানিকৃত ডিমের খরচ পড়েছে ৭ টাকা করে, যা স্বল্পমেয়াদে কিছুটা সহায়ক হতে পারে। তবে এ উদ্যোগ সত্ত্বেও বাজারে ডিমের দামে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি, বরং তা কৃত্রিমভাবে বাড়তেই থাকছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে নেমেছে। গতকাল রাজধানীর নিউ মার্কেট কাঁচাবাজার ও গুলশান কাঁচাবাজারে দুটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসব অভিযানে বাজারে অনিয়ম পাওয়ায় কয়েকটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানকে ২৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এই ধরনের অস্থায়ী পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, কারণ বাজারে গভীর তদারকি ছাড়া সংকট নিরসনের সম্ভাবনা কম। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

এভাবে চলতে থাকলে, সাধারণ মানুষকে ডিমের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কিনতে আরও বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে