ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

অবসরের পর সাকিবের নতুন বেতন নির্ধারণ করলো বিসিবি

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ অক্টোবর ০৪ ০৮:১৪:৪৭
অবসরের পর সাকিবের নতুন বেতন নির্ধারণ করলো বিসিবি

সাকিব আল হাসানের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার বিষয়টি শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেও আলোচিত ঘটনা। তাঁর এই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ এবং এর প্রভাবকে বিশ্লেষণ করলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে আসে, যা আরও বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা যায়।

### অবসরের কারণ:সাকিব দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সব ফরম্যাটে খেলে এসেছেন। তিনি বারবার বলেছেন যে, শারীরিক ও মানসিক চাপে ভুগছেন। যেহেতু ক্রিকেটের প্রতিটি ফরম্যাটের চাহিদা আলাদা, তিন ফরম্যাটেই খেলার কারণে তার উপর শারীরিক চাপ বেড়ে যাচ্ছিল। এর প্রেক্ষিতে সাকিব দুই ফরম্যাট থেকে বিদায় নিয়ে নিজেকে সীমিত ওভার তথা ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশি মনোনিবেশ করতে চান। তাঁর এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তিনি দীর্ঘমেয়াদে নিজের ক্যারিয়ারকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইছেন এবং ব্যস্ত সূচির মাঝে কিছুটা সময় নিজের জন্য বের করতে চান।

### আর্থিক প্রভাব:সাকিব আল হাসানের অবসরের ফলে তাঁর মাসিক বেতন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বিসিবি ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে তিন ফরম্যাট অনুযায়ী বেতন প্রদান করে। সাকিব সব ফরম্যাটে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন, এবং তাঁর প্রতি মাসের বেতন ছিল প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে টেস্টের জন্য ৪.৫ লাখ, ওয়ানডের জন্য ৪ লাখ, এবং টি-টোয়েন্টির জন্য ৩.৫ লাখ। তিন ফরম্যাটের বেতন কেমন করে প্রদান করা হয়, সেটির নিয়মও নির্দিষ্ট:

-টেস্ট ফরম্যাটের জন্য পূর্ণ বেতন (১০০%)- ওয়ানডে ফরম্যাটের জন্য ৫০%- টি-20 ফরম্যাটের জন্য ৪০%

যেহেতু সাকিব এখন কেবল ওয়ানডে ফরম্যাটে খেলবেন, তাই তিনি এখন থেকে মাসিক বেতন হিসেবে ৪ লাখ টাকা পাবেন। এ ছাড়া সাকিবের অবসরের ফলে বিভিন্ন ম্যাচ ফি এবং ফরম্যাটভিত্তিক ইনসেন্টিভ থেকেও তিনি বঞ্চিত হবেন, যা তাঁর আর্থিক আয়ে বড় প্রভাব ফেলবে।

### ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:সাকিব শুধু টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি থেকেই অবসর নিয়েছেন, কিন্তু তিনি ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ওয়ানডে ফরম্যাট থেকেও বিদায় নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সাকিবের মত একজন ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এবং তাঁর অবসর দেশীয় ক্রিকেটে বড় ফাঁকা জায়গা তৈরি করবে। সাকিব এই সময়ের মধ্য দিয়ে তাঁর ফিটনেস ও পারফরম্যান্সকে ধরে রাখতে চান, যাতে তিনি এই বড় টুর্নামেন্টে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।

### ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপ এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু:সাকিব আল হাসানের মাঠে পারফরম্যান্সের পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞাপন ও ব্র্যান্ডিং দুনিয়ায়ও একজন বড় মুখ। তাঁর জনপ্রিয়তা শুধু বাংলাদেশে নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও। যদিও তার কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে আয় কমে যাবে, তবে ব্র্যান্ড এনডোর্সমেন্ট এবং বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয় তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কারণ, সাকিবের ব্র্যান্ড ভ্যালু তার মাঠের বাইরেও স্থিতিশীল। তবে অবসরের পর তার খেলার উপস্থিতি কমে গেলে কিছু স্পন্সরশিপ চুক্তির ক্ষেত্রে তার আয়ের ধারা কিছুটা কমতে পারে।

### সাকিবের অবসরের ক্রিকেটে প্রভাব:সাকিবের মতো একজন অভিজ্ঞ এবং বিশ্বমানের অলরাউন্ডারের অবসর বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিশাল প্রভাব ফেলবে। টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে তার অবদান অতুলনীয়। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে, তিনি একজন ব্যাটসম্যান, বোলার এবং ফিল্ডার হিসেবে যে অবদান রেখেছেন, তা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে উন্নতির পথে চালিত করেছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও সাকিব একজন অগ্রণী খেলোয়াড় ছিলেন এবং বিশ্বকাপসহ বিভিন্ন টুর্নামেন্টে তিনি অসাধারণ পারফর্ম করেছেন।

সাকিবের অবসর পরবর্তী বাংলাদেশ দলে নেতৃত্বের অভাব পূরণ করা কঠিন হতে পারে। বিশেষ করে নতুন ও তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য সাকিব একজন অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন, এবং তাদের মধ্যে সাকিবের অভাব পূরণ করা কঠিন হবে।

সাকিবের অবসর ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করেছে, তবে একই সাথে তার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং ক্যারিয়ারকে আরও ভালোভাবে পরিচালনা করার ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছে অনেকেই।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে