ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

এবার চিরতরে বাংলাদেশের মায়া ত্যাগ করলেন অভিমানি সাকিব

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ সেপ্টেম্বর ২৯ ১৩:৪১:৪১
এবার চিরতরে বাংলাদেশের মায়া ত্যাগ করলেন অভিমানি সাকিব

বাংলাদেশের ক্রিকেট তারকা সাকিব আল হাসান এক বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বের আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। কানপুরে ভারত বনাম বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে আর টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দেশের হয়ে খেলবেন না। শারীরিক চ্যালেঞ্জ, চোখের সমস্যা এবং আঙুলের চোটের কারণে তার পারফর্ম্যান্সে যে প্রভাব পড়েছে, তা নিয়ে আগেই আলোচনা হচ্ছিল।

সাকিব নিজেই হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন যে তার সেরা সময় পেরিয়ে গেছে, এবং তাই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের এই ফরম্যাটগুলো থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, টেস্ট ক্রিকেটে বিদায় জানাতে চান দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে, যদি পরিস্থিতি ঠিক থাকে। তবে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেই সিরিজ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

এদিকে, সাকিবের রাজনৈতিক জীবনও বিতর্কিত। তিনি আওয়ামী লীগের একজন প্রাক্তন সাংসদ হওয়ায় একটি বড় অংশের মানুষের কাছে ভিলেন হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে খুনে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলাও হয়েছে। এসব কারণে দেশে ফেরা তার জন্য কঠিন হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। তাই কানপুরের এই ম্যাচটিই হয়তো তার শেষ টেস্ট ম্যাচ হতে পারে বলে সাকিব নিজেও স্বীকার করেছেন।

বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার জানান, “আমি দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের জন্য উপলব্ধ। কিন্তু যেহেতু দেশে এখন অনেক কিছু ঘটছে, সেহেতু সম্পূর্ণ বিষয়টি আমার হাতে নেই। আমি টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আমার পরিকল্পনাগুলো বিসিবি’র সাথে আলোচনা করেছি। আমি ফারুখ (আহমেদ) ভাই ও নির্বাচকদের সাথে কথা বলেছি। যদি খেলার সুযোগ পাই তাহলে মীরপুরেই হবে আমার শেষ টেস্ট ম্যাচ।

বোর্ড চেষ্টা করছে যাতে আমি নিরাপদে খেলতে পারি, একইসাথে যাতে কোনো সমস্যা ছাড়াই দেশ’ও ছাড়তে পারি।” যদিও সাকিব’কে আলাদা করে নিরাপত্তা দেওয়া যে সম্ভব নয় তা পরে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। “কাউকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা বোর্ডের হাতে নেই,” বলেছেন বিসিবি প্রধান ফারুখ আহমেদ।

টেস্টের পাশাপাশি টি-২০ ক্রিকেট থেকেও আপাতত অবসরই নিচ্ছেন, ঘোষণা করেছেন সাকিব আল হাসান । সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশ তারকা বলেন, “টি-২০তেও অনেকটা একই রকম আমার ভাবনা। আমি নির্বাচক, বোর্ড সভাপতি’র সাথে কথা বলেছি। আমি মনে করি যে এটাই আমার টি-২০ থেকে সরে দাঁড়ানোর সেরা সময়। আগামী কিছু সিরিজে নতুন মুখেরা জায়গা পাক।” তবে কৌশলে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনাও জিইয়ে রেখে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-২০’র তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। “যদি আমি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে ভালো খেলি আর বিসিবি মনে করে টি-২০তে আমার দলকে কিছু দেওয়ার আছে আর আমি যদি তখন ফিট থাকি, তাহলে ভেবে দেখা যাবে। এই মুহূর্তে আমি নিজেকে টি-২০তে দেখছি না। তাই বলাই যায় যে আমি দুটো ফর্ম্যাটে দাঁড়ি টানছি।

আন্তর্জাতিক টেস্ট ও টি-২০ থেকে সরে দাঁড়ালেও বাইশ গজকে পুরোপুরি যে বিদায় সাকিব জানাচ্ছেন না তা স্পষ্ট তাঁর বক্তব্য থেকেই। আপাতত কিছু দিনের বিশ্রামের পরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দুনিয়ায় ফিরতে পারেন তিনি। ভারতের আইপিএল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিপিএল, আমেরিকার মেজর লীগ ক্রিকেটের মত টুর্নামেন্টে নিয়মিত তিনি। আগামীতে সেই প্রতিযোগিতাগুলোতেই প্রধান ফোকাস রাখতে চলেছেন তিনি।

এই মুহূর্তে বাংলাদেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করা সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। হতে পারে গ্রেপ্তারও। ফলত দেশ ছেড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আপাতত বসবাস করতে পারেন সাকিব। ২০২২ সালে মার্কিন মুলুকে পাকাপাকি বসবাস করার জন্য গ্রিন কার্ড পেয়েছেন ক্রিকেট তারকা। তাই সপরিবারে বিদেশে গিয়ে থিতু হতে বিশেষ সমস্যা হবে না তাঁর।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে