ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

হঠাৎ স্টেডিয়ামের দোকান পরির্দশন ক্রীড়া উপদেষ্টার, ভাড়া নিয়ে বিশাল কার চুপি, বিসিবিতে তোলপাড়

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ সেপ্টেম্বর ১২ ২২:০২:০৫
হঠাৎ স্টেডিয়ামের দোকান পরির্দশন ক্রীড়া উপদেষ্টার, ভাড়া নিয়ে বিশাল কার চুপি, বিসিবিতে তোলপাড়

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এলাকার আকস্মিক দোকান পরিদর্শন দেশের ক্রীড়া প্রশাসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে। স্টেডিয়ামের ভেতরে ও আশপাশে থাকা অসংখ্য দোকান খেলার পরিবেশ নষ্ট করছে এবং এ থেকে যে আয় হচ্ছে তা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) এর জন্য খুবই কম। এই প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টার এই পরিদর্শনকে অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি অস্বচ্ছ এবং উপেক্ষিত সমস্যার সমাধানের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখছেন।

পরিদর্শনের মূল উদ্দেশ্য:

আসিফ মাহমুদ সজীব সবার অজান্তেই পরিদর্শনে যান এবং দোকানদারদের কাছ থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল বাস্তব পরিস্থিতি বোঝা এবং ক্রীড়া পরিসরের সাথে যে বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড চলছে, তার সাথে সংশ্লিষ্ট ভাড়া, আয়ের ব্যবধান, এবং ক্রীড়া পরিষদের আর্থিক পরিস্থিতির একটি ধারণা পাওয়া। এ সময় এনএসসির মাত্র দুই-তিনজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, যা ইঙ্গিত দেয় যে পরিদর্শনটি একেবারে আকস্মিক ছিল।

দোকান ভাড়ার বিষয়ে বিশাল পার্থক্য: বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের দোকানগুলোর ইজারাদারেরা এনএসসির কাছ থেকে স্কয়ার ফিটপ্রতি মাত্র ২৬ টাকা ভাড়ায় দোকানগুলো নিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তারা অন্যদের কাছে দোকানগুলো ভাড়া দিচ্ছেন প্রায় ২১৭-২২০ টাকা স্কয়ার ফিট দরে। এই ভাড়ার পার্থক্য কিভাবে তৈরি হলো এবং অতিরিক্ত ভাড়া কোথায় যাচ্ছে, তা নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন।

দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ভূমিকা: ক্রীড়া উপদেষ্টার মন্তব্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত ভাড়ার অর্থ কোথায় যাচ্ছে তা বের করতে হবে। এনএসসি এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কেউ এ প্রক্রিয়ায় জড়িত আছেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হবে। এ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে স্টেডিয়াম এলাকার দোকান ভাড়ার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে একটি অস্বচ্ছতার মধ্যে চলছে, যা ক্রীড়া পরিষদের আয়ের ওপর প্রভাব ফেলছে।

স্টেডিয়ামে দোকান রাখার প্রচলন: বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য দেশে স্টেডিয়াম এলাকায় দোকান রাখার প্রচলন খুবই কম। তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামসহ দেশের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া ভেন্যুতেই দোকান রয়েছে। দোকানগুলো ক্রীড়া পরিবেশের ক্ষতি করছে এবং খেলার মূল উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা: আসিফ মাহমুদ সজীব জানিয়েছেন, দোকানগুলোর বর্তমান ভাড়া কাঠামো এবং অন্যান্য দিক নিয়ে একটি সামগ্রিক পর্যালোচনা করা হবে। তিনি বলেন, “আমরা একটা জেনারেল সার্ভে করব এবং এরপর একটি নতুন নীতিমালা তৈরি করব।” এর মাধ্যমে দোকান ভাড়া বাড়িয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আয়ের উৎস আরও মজবুত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে দেশের বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনকে ক্রীড়া কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আরও বেশি অর্থ সহায়তা দেওয়া সম্ভব হবে।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থনৈতিক অবস্থা ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা: জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের আয়ের অন্যতম উৎস হচ্ছে স্টেডিয়াম এলাকার দোকান ভাড়া। কিন্তু এই আয়ের পরিমাণ অপ্রতুল। অধিকতর ভাড়া আদায় এবং এই অর্থ ফেডারেশনগুলোর মধ্যে সঠিকভাবে বণ্টন করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, অতিরিক্ত আয় থেকে বিভিন্ন ফেডারেশনকে সাহায্য করা হবে, যাতে দেশের ক্রীড়াঙ্গন আরও উন্নত হতে পারে।

এভাবে, এই পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে একটি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বার্তা দিয়েছেন, যা ভবিষ্যতে ক্রীড়া উন্নয়নের পথে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে