ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

অবিশ্বাস্য ভাবে ব্যাপক হারে কমলো তেলের দাম

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ সেপ্টেম্বর ১২ ১৬:০৭:৫২
অবিশ্বাস্য ভাবে ব্যাপক হারে কমলো তেলের দাম

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম সম্প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, যা ২০২১ সালের পর প্রথমবারের মতো প্রতি ব্যারেল ৭০ ডলারের নিচে নেমেছে। বর্তমানে, ডব্লিউটিআই ক্রুড তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬৭.৬৮ ডলার এবং ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ৭১.০৫ ডলার।

আজ বুধবার সকালে বিশ্ববাজারে ডব্লিউটিআই ক্রুড তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৬৭ দশমিক ৬৮ ডলার। ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দামও কমেছে, যদিও তা এখনো ৭০ ডলারের নিচে নামেনি। প্রতিবেদন লেখার সময় এই তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৭১ দশমিক ০৫ ডলার। অয়েল প্রাইস ডটকম ও রয়টার্স সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

গত এপ্রিল মাসেও বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল প্রতি ব্যারেল ৯০ ডলার। মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার জেরে তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। অনেকেই তখন ধারণা করেছিলেন, তেলের দাম আবারও প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলারে চাড়িয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটল তার উল্টো ঘটনা, দাম কমে ৭০ ডলারের নিচে নেমে এল।

তেলের দাম কমে যাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে চাহিদার হ্রাসকে দায়ী করা হচ্ছে। বিশেষভাবে, চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হওয়ায় তাদের তেল আমদানি কমেছে। চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল আমদানিকারক দেশ, এবং তাদের চাহিদার উপর বিশ্ববাজারের তেল দাম ব্যাপকভাবে নির্ভর করে। চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ায় তাদের তেল মজুত এবং আমদানি উভয়ই হ্রাস পেয়েছে, যা তেলের দাম কমানোর মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের সরবরাহ উদ্বৃত্ত থাকায় দাম কমেছে। যদিও ওপেক (অলিভিয়েটেড কনসোর্টিয়াম অফ পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ) এবং অন্যান্য উৎপাদনকারী দেশরা উৎপাদন হ্রাস করার চেষ্টা করেছে, তবুও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি থাকার কারণে তেলের দাম কমছে।

কোভিড-১৯ মহামারির সময়, ২০২০ সালের প্রথম দিকে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ২০ ডলারে নেমে গিয়েছিল। সেসময় চাহিদা তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছিল, যার ফলে দাম নাটকীয়ভাবে কমে গিয়েছিল।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বেড়ে গিয়ে প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এরপর দাম কমে গিয়ে ৮০ ডলারে ফিরে আসে এবং বর্তমানে আরো কমে গিয়ে ৭০ ডলারের নিচে চলে এসেছে।

ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো (যেমন রাশিয়া) উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তবে বাজারে চাহিদার ঘাটতির কারণে তা কার্যকর হয়নি। আগামীতে ওপেক ও তাদের সহযোগী দেশগুলো উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করতে পারে, তবে চাহিদার বর্তমান অবস্থার মধ্যে তা কতটা কার্যকর হবে তা এখনও অস্বচ্ছ।

ওপেক অনুমান করছে যে ২০২৪-২৫ সালে তেলের চাহিদা আরো কমে যেতে পারে। বর্তমানে দৈনিক চাহিদা ১৭ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল হলেও ভবিষ্যতে এটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলে নেমে আসতে পারে।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার এই প্রবণতা তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জন্য অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। ভবিষ্যতে তেলের দাম কেমন হবে তা নির্ভর করবে বাজারের চাহিদা, সরবরাহ এবং ওপেকের সিদ্ধান্তের ওপর।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে