ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের লিটনকে নিয়ে করা পোস্ট ভাইরাল, সারা দেশে চলছে আলোচনা ঝড়

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ সেপ্টেম্বর ০১ ২২:৩২:৪২
ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের লিটনকে নিয়ে করা পোস্ট ভাইরাল, সারা দেশে চলছে আলোচনা ঝড়

চলছে বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তানের মধ্যকার দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ। প্রথম ইনিংসে ২৭৪ রানে অল-আউট হয় পাকিস্তান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তবে লিটন ও মিরাজের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ২৬২ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ। মিরাজ করেন ৭৮ রান ও লিটন দাস করেন ১৩৮ রান। তাদের দুজনের কারণেই মাত্র ১২ রানের লিড পেয়েছে পাকিস্তান।

১২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করে পাকিস্তান। নিজের প্রথম আর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই হাসান মাহমুদের আঘাত। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন আবদুল্লাহ শফিক (১০ বলে ৩ রান)।

হাসান প্রথম ইনিংসে উইকেট পাননি। তবে ব্যাট হাতে ৫১ বলে ১৩ রানের ধৈর্যশীল এক ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে নিয়েই উইকেট! আবদুল্লাহ শফিক আউট হওয়ার পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমেছিলেন খুররম শেহজাদ। তাঁকে বোল্ড করে দিয়েছেন হাসান মাহমুদ। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ রান তুলতেই ২ উইকেট হারাল পাকিস্তান। আর এরই মধ্যে দিয়ে শেষ হলো তৃতীয় দিনের খেলা।

লিটন আউটের পর বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস টিকল আর মাত্র দুই বল। আগা সালমানের বলে এলবিডব্লু হয়েছেন শেষ ব্যাটসম্যান নাহিদ রানা। অবশ্য আম্পায়ার আউট না দিলে বেঁচে যেতেন, এমনটাই বোঝা গেছে রিভিউ দেখে।

বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেমেছে ৭৮.৪ ওভারে ২৬২ রানে। পাকিস্তান প্রথম ইনিংসে লিড পেয়েছে ১২ রানের।

এদিকে প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার খুব কাছে যখন দল, তখনই লিটনের বিদায়। অনবদ্য সেঞ্চুরি করা লিটন ফিরলেন আগা সালমানের বলে লং অনে সাইম আইয়ুবের ক্যাচ হয়ে। ২২৮ বলে খেলা ১৩৮ রানের ইনিংস নিয়ে যখন মাঠ ছাড়ছিলেন, বাংলাদেশ ড্রেসিংরুম থেকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানানো হল লিটনকে। ফেসবুকে মিরাজকে নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা "অনবদ্য শতক, অভিনন্দন লিটন দাস "

এদিনও সেঞ্চুরি পেলেন না মিরাজ। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৭৭ রান। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফিরলেন ৭৮ রান করে। গুড লেংথের বলে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে বোলার খুররাম শেহজাদের হাতে ক্যাচ তুলেছেন মিরাজ।

টেস্টে এটি খুররমের প্রথম ৫ উইকেট। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে এসে এই কীর্তির দেখা পেলেন খুররম। বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ১৯১।

ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটারের মতো বলের গতি। খুররমের শেহজাদের বাউন্সার পিক করতে লিটনের কোনো সমস্যাই হলো না। পুল করে পাঠিয়ে দিলেন স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে সীমানার বাইরে। বাংলাদেশ ও লিটনের ইনিংসে এটি প্রথম ছক্কা। বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৬৯।

মিরাজ ছন্দে আছেন। সেটা বোঝা গেছে তাঁর ইনিংসের প্রথম বল থেকেই। বাংলাদেশের ব্যাটিং ধসের পর উইকেটে এসে ব্যাটিং করেছেন ওয়ানডে মেজাজে। এরপর পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং কৌশল বদলেছেন। ফিফটি পেয়েছেন ৮১ বলে। টেস্টে এটি মিরাজের অষ্টম ফিফটি। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৩৫।

প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফিফটি করেছিলেন। খেলেছিলেন ৫৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসেও ফিফটি পেলেন। টেস্টে এটি লিটনের ১৮তম ফিফটি। ২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর যেভাবে দলকে টেনেছেন, গুরত্বের বিচারে নিঃসন্দেহে এটি তাঁর অন্যতম সেরা।

লিটন- মিরাজ যেন অন্য উইকেটে ব্যাটিং করছেন। লাঞ্চের পর থেকেই ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করছেন দুজন। শেষ দুই ওভারে বাউন্ডারি মেরেছেন ৬টি। দুজনেই আছেন ফিফটির কাছাকাছি। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১১৫।

বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বশেষ আউট হয়েছেন সাকিব আল হাসান। ১০ বলে ২ রান করে সাকিব আউট হয়েছেন খুররমের বলে। খুররম নিয়েছেন ৪ উইকেট, মীর হামজা নিয়েছেন ২ উইকেট।

ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে জাকিরকে দিয়ে শুরু। এরপর সাদমান ফেরেন অষ্টম ওভারে। একই ওভারে নাজমুলকে ফিরিয়েছেন খুররম শেহজাদ। খুররমের জোড়া আঘাতের পর নবম ওভারের প্রথম বলে মুমিনুলকে মোহাম্মদ আলীর ক্যাচ বানান মীর হামজা। সব মিলিয়ে ১৪ বলের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ফলো অনের শঙ্কা জেগেছে বাংলাদেশের। এই মুহূর্তে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪ রান বাংলাদেশের।

দিনের তৃতীয় ওভারে একপ্রকার ‘জীবন’ই পেয়েছেন জাকির হাসান। কিন্তু পরের ওভারে আর ‘জীবন’ পেলেন না তিনি। দিনের চতুর্থ ওভারে খুররম শেহজাদের বলে স্কয়ার লেগে আবরার আহমেদের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি ব্যক্তিগত ১ রান করে।

ইনিংসের প্রথম বলেই ‘জীবন’ পেয়েছিলেন সাদমান ইসলাম। মীর হামজার বলে স্লিপে ক্যাচ ফেলেছিলেন সৌদ শাকিল। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেন না বাংলাদেশের ওপেনার। ২৩ বলে ১০ রান করে খুররম শেহজাদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন তিনি। ২ উইকেটে ২০ রান করেছে বাংলাদেশ।

রেকর্ড গুলো এখানে:

দলের স্কোর ৫০ রানও হয়নি, কিন্তু প্রথম পাঁচের পর ব্যাটিংয়ে নেমে তিনটি সেঞ্চুরি—প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এমন কীর্তি গড়লেন লিটন দাস। আজ রাওয়ালপিন্ডির আগে ২০২১ সালে চট্টগ্রামে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১৪ রান করেছিলেন বাংলাদেশ দল ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর। পরের বছর মিরপুরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪১ রান করেন বাংলাদেশ ২৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর।

দ্বিতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে দেশের বাইরে এক টেস্টে ৫ উইকেট ও ফিফটি পেয়েছেন মিরাজ। প্রত্যাশিতভাবেই প্রথম এই কীর্তি করেছেন সাকিব আল হাসান। দুটোই ওয়েস্ট ইন্ডিজর মাটিতে, তাদের বিপক্ষেই। একটি ২০০৯ সালে অন্যটি ২০১৮ সালে। সব মিলিয়ে সাকিব এই কীর্তি গড়েছেন আটবার। মিরাজ করেছেন দুইবার।

রেকর্ডটি হয়েছে সিরিজের প্রথম টেস্টে। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম ইনিংসে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ১৯৬ রানের জুটি গড়েছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান।

দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে সপ্তম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১৬৫ রানের জুটি গড়েছেন মিরাজ ও লিটন। যা টেস্টে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

৮ নম্বর কিংবা এর পরে নেমে টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ফিফটি:

৭—মেহেদী হাসান মিরাজ

৬—মাহমুদউল্লাহ

৫—মোহাম্মদ রফিক

৩—মাশরাফি বিন মুর্তজা

৩—মুশফিকুর রহিম

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে