ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসালেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ আগস্ট ২৬ ১০:৩৯:০৪
বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসালেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা

৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল পাকিস্তান, সেটি ছিল টেস্টের দ্বিতীয় দিন। শেষ বেলায় ১২ ওভার ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জ দারুণভাবে সামলেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির ও সাদমান। এরপর থেকে রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে দেখা গেছে বাংলাদেশ দলের দাপট—ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও।

সাদমানের লড়াকু ৯৩ রানের পর মুশফিকের ১৯১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে বাংলাদেশ পায় ৫৬৫ রানের বড় সংগ্রহ। এরপর সাকিব ও মিরাজের ঘূর্ণিতে বিপাকে পড়ে পাকিস্তান, দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ১৪৬ রানেই। তাতে বাংলাদেশে সামনে আসে ৩০ রানের লক্ষ্যের আনুষ্ঠানিকতা। যেটি বাংলাদেশ পেরিয়ে গেল কোনো উইকেট না হারিয়েই।

বিদেশের মাটিতে এটি বাংলাদেশের সপ্তম জয়, পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম। ১৮৭৭ সাল থেকে শুরু হওয়া টেস্ট ক্রিকেট ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত পাকিস্তান তাদের দেশের মাটিতে ১০ উইকেটের ব্যবধানে হারেনি। ১৪৭ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে বাংলাদেশ প্রথম দল হিসেবে এই কীর্তি অর্জন করলো। এই ঐতিহাসিক জয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- তিন বিভাগে এগিয়ে থেকেই ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর দলের এমন জয়ে মুগ্ধ হয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার রশিদ লতিফ। লাল-সবুজের দলের সিরিজ জয়ের সম্ভাবনাও দেখছেন তিনি।

সাবেক এই ক্রিকেটারের মতে, সিরিজ শুরুর আগে পাকিস্তান ফেভারিট থাকলেও বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন। দশ উইকেটের এই জয় বাংলাদেশের মানসিকতা বদলে দিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এই ম্যাচে জিততে হলে পাকিস্তানের টপ অর্ডারকে রানে ফিরতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

রশিদ লতিফ বলেন, 'বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে। ম্যাচের পর সবসময় অবস্থার পরিবর্তন হয়। পাকিস্তান এগিয়ে ছিল, তবে এখন অবস্থা অন্যরকম। এটাই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য। বাংলাদেশের ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- সবই বেশ ভালো।'

'পাকিস্তানকে খুব ভালো খেলতে (জিততে হলে) হবে। টপ অর্ডারে শান মাসুদকে রান করতে হবে। আবদুল্লাহ শফিক আছে, সায়েম আইয়ুব, বাবর আজম- সবাইকেই ভালো করতে হবে। রিজওয়ান নিজের কাজ করছে সে ছাড়াও বাকিদের এগিয়ে আসতে হবে। রান তো করতেই হবে, আউটও করতে হবে।'

গেল ম্যাচে পাকিস্তান কোনও বিশেষজ্ঞ স্পিনার না নিয়েই খেলেছে। সালমান আঘা প্রথম ইনিংসে ৪১ ওভার বোলিং করেও উইকেটশূন্য থেকেছে। রশিদের মতে, একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার দলে থাকতে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত।

একইসঙ্গে রশিদের মতে, তাইজুল ইসলাম খেললে আরও বেশি বিপদে পড়তে পারত পাকিস্তান। সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজদের মুন্সিয়ানার প্রশংসা করেছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। এ ছাড়া নেতৃত্বে শান মাসুদের থেকে শান্তকে বেশ এগিয়ে রেখেছেন তিনি।

রশিদ লতিফ আরও বলেন, 'বিশেষজ্ঞ স্পিনার না নিয়ে ওরা (পাকিস্তান) ভুল করেছে। নোমানকে নিতে পারতো, আবরারকে নিতে পারত। যেকোনো একজনকে নিতে পারত। ম্যাচের আগেই বলেছিলাম চার পেসার নেয়া ঠিক হয়নি। একজন বিশেষজ্ঞ (স্পিনার) দরকার ছিল। আঘা সালমান ছিল। যদিও ৪০ ওভারে সে কোনও উইকেটই নেয়নি। সে ভালো বোলার। কিন্তু অপরপ্রান্ত থেকে তার সমর্থন দরকার ছিল।'

'সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যদি তাইজুল থাকতো তাহলে ম্যাচ এতো চ্যালেঞ্জিংও হতো না। মেহেদী হাসান মিরাজ- তিনিও অসাধারণ খেলেছেন। তারা একসঙ্গেই খেলছে, নতুন কেউ নেই এখানে। এই ম্যাচে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ অনেক ভালো খেলেছে। নেতৃত্বও ভালো দিয়েছে তারা। শান মাসুদকে আমি বলব পাকিস্তানের জন্য যেটা ভালো হয় সেই সিদ্ধান্ত নিতে।'

অধিনায়ক ও টিম ম্যানেজমেন্টের সমালোচনা করেছেন আফ্রিদি।

তিনি লিখেছেন, কন্ডিশন সম্পর্কে ধারণাই ছিল না পাকিস্তানের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শহীদ আফ্রিদি লিখেছেন, '১০ উইকেটের হার এই ধরনের পিচ প্রস্তুত করার সিদ্ধান্ত, চার জন ফাস্ট বোলার খেলানো এবং বিশেষজ্ঞ স্পিনার না রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়। হোম কন্ডিশন সম্পর্কে সচেতনতার অভাব পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি আমি। একই সঙ্গে, টেস্টজুড়ে যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট বাংলাদেশ খেলেছে সেটার কৃতিত্ব তাদের দিতেই হবে।'

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে