ঢাকা, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত, বিশ্বকাপে নাজমুল শান্ত’র জায়গাতে সাকিব

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ মে ১৭ ১০:১০:০৯
সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত, বিশ্বকাপে নাজমুল শান্ত’র জায়গাতে সাকিব

সদ্য শেষ হওয়া শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে সিরিজে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছে টপ অর্ডার্রে ব্যাটিং ব্যর্থতা। বিশেষ করে জিম্বাবুয়ে সিরিজে নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাসের ব্যাটিং ছিল আলোচনায়। এতোটাই খারাপ খেলছিলেন যে নিজের ব্যাটিং পজিশন পাল্টে পেলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। শেষ দুই ম্যাচে ব্যাটিং করতে নামেন চারে। তিনে ব্যাটিং করেন সাকিব আল হাসান। এখন বিশ্বকাপে তিন নম্বরে কে ব্যাটিং করবেন।

নাজমুল তাঁর ৩৬ টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ারে ১৮টি ম্যাচই খেলেছেন ৩ নম্বরে। এর বেশির ভাগই গত এক বছরের মধ্যে। কিন্তু মার্চে শ্রীলঙ্কা ও চলতি মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে খুব একটা ছন্দে দেখা যায়নি তাঁকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে ৩৬ রানের পরও সিরিজের চার ইনিংসে রান মোটে ৮১। কম রানের পাশাপাশি নাজমুলের ব্যাটিংয়ে অস্বস্তির আরেক দিক—স্ট্রাইক রেটের দুর্দশা। ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮১ রান করতে খেলেছেন ৭৮ বল, স্ট্রাইক রেট ১০৩.৮৪। শুধু জিম্বাবুয়ে সিরিজে নয়, নাজমুলের টি-টোয়েন্টি স্ট্রাইক রেটই দৃষ্টিকটু রকমের কম (১১১.১৬)। এবারের বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়া ২০ অধিনায়কের মধ্যে যা ১৯তম।

নাজমুলের আগে অধিনায়ক থাকার সময় সাকিবও তিনে ব্যাট করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। টি-টোয়েন্টিতে তাঁর ব্যাটে সবচেয়ে বেশি রানও এ পজিশনেই—৪২ ইনিংসে ১০৮৫। ক্যারিয়ারের ১২ ফিফটির ৭টিও করেছেন তিনে নেমে। সাকিব তিনে খেলে হাজারের বেশি রান করেছেন ২৯.৩২ গড় আর ১২৩.১৫ স্ট্রাইক রেটে। অবশ্য শুধু স্ট্রাইক রেট বিবেচনা করলে সাকিবের সেরা পজিশন ৪ নম্বর। এখন পর্যন্ত ৪৫ ইনিংসে চারে ব্যাট করে ১২৭.১৬ স্ট্রাইকে ৮৮০ রান তাঁর (৬ নম্বরে নেমে ৬ ইনিংসে স্ট্রাইক রেট ১৩০)। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এক ম্যাচ ছাড়া বাকিগুলোতে ৪ নম্বর পজিশনেই ব্যাট করেছেন ৩৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।

তবে মোটের ওপর রানসংখ্যা, গড় ও স্ট্রাইক রেট বিবেচনায় সাকিব তিনেই বেশি সফল। এবারের বিশ্বকাপের দুই ভেন্যু ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর পারফরম্যান্স তো ক্যারিয়ার–গড়ের চেয়েও বেশি। ক্যারিবীয় অঞ্চলে খেলা ৭ ইনিংসে সাকিবের গড় ৩৫.৫০ (মোট ২১৩ রান), স্ট্রাইক রেট ১৩৭.৪১। আর যুক্তরাষ্ট্রে খেলা দুই টি-টোয়েন্টিতে ৪২ গড় ও ১৪০ স্ট্রাইক রেটে রান ৮৪।

নির্দিষ্ট কন্ডিশন ও ৩ নম্বরের অভিজ্ঞতা ও সাফল্যে সাকিবই যে এগিয়ে, সেটি এসব পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে। তবে এসব বিবেচনায় নিয়ে সাকিবকে তিনে ফেরানো মানে আবারও ব্যাটিং অর্ডারে অদলবদল। সেটার সম্ভাবনা কেমন, বিশেষ করে গত বছর ভারত বিশ্বকাপে তেতো অভিজ্ঞতার পর—এমন প্রশ্নই উঠেছিল দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ দলের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে।

মজার বিষয় হচ্ছে, কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তো বটেই, অধিনায়ক নাজমুলও এই বিশ্বকাপে আরেকটি ওলট-পালটের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। হাথুরুর জবাব ছিল সোজাসাপটা, ‘হ্যাঁ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তিত হবে। এটা ক্রিকেটে স্বাভাবিক ব্যপার। এটা আসলে আপনি কোথায় ব্যাট করছেন এবং কতটা সেরা ব্যাটিং করছেন, তার ওপর নির্ভর করে।’ আর অধিনায়ক নাজমুল, যিনি নিজেই ওয়ানডে বিশ্বকাপে ওলট-পালট বেশি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁর জায়গায় তিনে সাকিবের খেলার সম্ভাবনায় দিয়েছেন কূটনৈতিক জবাব, ‘এটা নির্ভর করবে কন্ডিশন এবং প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তার ওপর।’

যার অর্থ, আগামী ১ জুন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে অদলবদলের সম্ভাবনা ভালোভাবেই থাকছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ