আজকের ম্যাচে যত রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ

২৫৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ওপেন করতে নামেন সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। দিলশান মাদুশঙ্কার গুড লেংথ থেকে একটু বাড়তি বাউন্সের বল ঠিকঠাক খেলতে পারেননি লিটন দাস। টেনে এনেছেন স্টাম্পে। ১ বলে ০ রানে ফিরেছেন তিনি। এরপর মাদুশঙ্কার শিকার হন সৌম্য সরকার। ৯ বলে ৩ রান করেন তিনি। প্রমোদ মাদুশানের বলে কাটা পড়েন তাওহিদ হৃদয়। ৮ বলে ৩ রান করেন তিনি। এরপর ব্যাটিং কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও নাজমুল হোসেন শান্ত।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩৭ বলে ৩৭ রান করে কুমারার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেও সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শান্ত। তার সেঞ্চুরি ও মুশফিকের ফিফটিতে জয়ের বন্দরে পৌছে যায় বাংলাদেশ। ৬ উইকেটের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। শান্ত করেন অপরাজিত ১২২ রান ও মুশফিক ৭৩ রান অপরাজিত থাকেন।

টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। ৪৮.৫ ওভারসব কয়টি উইকেট হারিয়ে২৫৫ রান করে শ্রীলঙ্কা। জয়ে বাংলাদেশে প্রয়োজন ২৫৬ রান। ব্যাট করতে নেমে দারুন শুরু করে শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার। গড়েন ৭১ রানের জুটি। ৩৩ বলে ৩৩ রান করে তানজিম সাকিবের বলে মুশফিকের হাতে ধরা পড়েন আভিস্কা ফার্নান্ডো। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার পাতুম নিশাঙ্কা। সেই তানজিম সাকিবের বলে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। ২৮ বলে ৩৬ রান করেন তিনি।

আবারও শ্রীলঙ্কার শিবিরে আঘাত হানেন তানজিম সাকিব। ফেরান সদ্য ক্রিজে আসা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে। ৫ বলে তিন রান করেন তিনি। এরপর সতর্ক ভাবে এগোতে থাকে শ্রীলঙ্কা। বোলিংয়ে আসেন মিরাজ। তুলে নেন আসালাঙ্কার উইকেট। ৩৭ বলে ১৮ রান করেন তিনি। এরপর জুটি গড়েন অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস ও লিয়ানাগ। তাদের ৬৯ রানে জুটি ভাঙেন তাসকিন। ৭৫ বলে ৫৯ রান করা কুশল মেন্ডিসকে ফেরান তাসকিন।

আবারও উইকেট তুলে নেন তাসকিন। ফেরান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে। ১৪ বলে ১৩ রান করেন তারা। আর নিজের তিন নম্বর শিকারটা বানান মহীশ তিকশানাকে। ৭ বলে ১ রান করে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন তিনি। উইকেটে আটকে থাকা জানিত লিয়ানাগেকে ফেরান শরিফুল। ৬৯ বলে ৬৭ রান করে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৫ বলে ৮ রান করে শরিফুলের বলে আউট হনপ্রমোদ মাদুশান।শেষ উইকেটটাও নেন শরিফুল। তানজিম সাকিব, তাসকিন ও শরিফুল ৩টি করে উইকেট নেন। মিরাজ নেন একটি উইকেট।

আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের যত রেকর্ড:

সাকিব (৩), আশরাফুল (১), মুশফিক (১) ও তামিমের (১) পর পঞ্চম বাংলাদেশী অধিনায়ক হিসেবে ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি পেলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ বার গোল্ডেন ডাক পেলেন লিটন, অর্থাৎ প্রথম বলেই আউট হলেন কোনো রান না করে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে গোল্ডেন ডাকে লিটনের ওপর আছেন শুধু হাবিবুল বাশার—৭ বার।বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে এখন সর্বোচ্চ স্কোর নাজমুলের। আগের সর্বোচ্চ ছিল মুশফিকের ১১৭ রান, ২০১৪ সালে ফতুল্লায় ভারতের বিপক্ষে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি এখন নাজমুল ও মুশফিকের। আগের সর্বোচ্চ ১১১ রান ছিল মুশফিক ও সাব্বির রহমানের। এ নিয়ে চতুর্থবার মুশফিকের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়লেন নাজমুল। ৪ বার ৫০ রানের জুটি তাঁর আছে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গেও। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার কোনো ম্যাচে দ্বিতীয়বার দুই অধিনায়কই কমপক্ষে ৫০ রানের দেখা পেলেন। এর আগের একমাত্র ঘটনাটি ছিল ২০১৪ সালে। মিরপুরে সেবার ফিফটি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও বাংলাদেশের মুশফিক। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে কোনো উইকেটে এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি নাজমুল-মুশফিকের। পঞ্চম উইকেটে যে কোনো প্রতিপক্ষের সঙ্গে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি।

বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মাহমুদউল্লাহ ও তানজিম হাসান।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: আভিস্কা ফার্নান্ডো, পাতুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস (অধিনায়ক), সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিত আসালাঙ্কা (সহ-অধিনায়ক), জানিত লিয়ানাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মহীশ তিকশানা, দিলশান মাদুশঙ্কা, প্রমোদ মাদুশান ও লাহিরু কুমারা।

খেলা - এর সব খবর

গুগল নিউজে ফলো করুন