ঢাকা, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

দুপুরে খিচুড়ির পরিবর্তে ডিম, দুধ ও রুটি নেওয়ার দাবি প্রাধমিক শিক্ষার্থীদের

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ জানুয়ারি ২৩ ১৫:৩৬:০৪
দুপুরে খিচুড়ির পরিবর্তে ডিম, দুধ ও রুটি নেওয়ার দাবি প্রাধমিক শিক্ষার্থীদের

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড-ডে মিলের শিক্ষার্থীদের দুধ, ডিম ও রুটি দিতে চায়। দেশের ১৫০টি উপজেলার ১৯ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৫ লাখ শিক্ষার্থীকে বৈচিত্র্যময় খাদ্য সরবরাহের লক্ষ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

এর আগে শিক্ষার্থীদের মধ্যাহ্নভোজে খিচড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এই প্রকল্প শুরু হয়েছিল। তবে সমালোচনার মুখে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়।

নতুন প্রকল্প প্রস্তাবে শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে পাঁচ দিন মিড-ডে মিল দেওয়ার বিধান রয়েছে। ডিম-রুটি দুই দিন, দুধ-রুটি একদিন, শুধু বিস্কুট একদিন এবং মৌসুমি ফল ও অন্যান্য খাবার দেওয়া হবে। এ প্রকল্প সফল হলে সারা দেশে এ কার্যক্রম শুরু করা হবে।

খিচুড়ির পরিবর্তে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যালয়ে ডিম, রুটি, দুধ ও বিস্কুট বিতরণ করা যেতে পারে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো দুর্নীতির ব্যাপকতা। পুরো প্রক্রিয়াটিকে দুর্নীতিমুক্ত ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হবে। খাবারে পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করুন।রাশেদা কে চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, জন সাক্ষরতা অভিযান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা

সরকারি স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম (প্রথম পর্যায়) নামে এই প্রস্তাবিত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে ৪ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) ৬৪ কোটি টাকা অনুদান দেবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার এ প্রকল্প নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডেকেছে পরিকল্পনা কমিশন। পরিকল্পনা কমিশন ইঙ্গিত দিয়েছে যে প্রকল্পটি শীঘ্রই অনুমোদন পেতে পারে কারণ শিশুদের জন্য দুপুরের খাবার সরবরাহ করা সরকারের অগ্রাধিকার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বিভিন্ন ধরনের খাবার সরবরাহ করাই যথেষ্ট নয়। পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার নিশ্চিত না হলে খিচড়িকে অন্য খাবারের সাথে প্রতিস্থাপন করা উপকারী হবে না। এর আগে ২০২১ সালে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ১ কোটি ৪.৮ লাখ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে সপ্তাহে পাঁচ দিন খিচড়ি এবং একদিন বিস্কুট খাওয়ানোর প্রস্তাব করেছিল। এরপর এই প্রস্তাব নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। একই বছরের ১ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় 'প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খাবার' শীর্ষক প্রকল্পটি উত্থাপিত হলে খিচুড়ি বিতরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবসম্মত ও কার্যকর বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের তরফে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল স্কুলগুলিতে শিক্ষার্থীদের জন্য কী বিকল্প খাবার দেওয়া যেতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরা দুধ, রুটি ও ডিমের ওপর জোর দেয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রথম ধাপের মেয়াদ তিন বছর। পরে মেয়াদ বাড়ানো হবে।

সরকারী ক্রয় বিধিমালার আলোকে সকল আইটেম ক্রয় করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মীরা এবং প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মীরা এই খাবার বিতরণ করবেন। প্রথম ধাপে দারিদ্র্যপীড়িত উপজেলাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।মিজানুর রহমান, পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)

কী আছে প্রকল্প প্রস্তাবেপ্রকল্পের নথিতে দেখা যায়, এই প্রকল্পের অধীনে খাদ্য সামগ্রী ক্রয়ে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ১৮১ কোটি টাকা, যা মোট প্রকল্পের প্রায় ৮৮ শতাংশ। এছাড়া ঠিকাদার নিয়োগ, স্টোরেজ, পরিবহন, সার্ভিস চার্জ, খাবার ডেলিভারি এবং প্যাকেজিংয়ের খরচ ধরা হয়েছে ২৮৩ কোটি টাকা। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে ২১ হাজার শ্রমিকের ওপর। তাদের সম্মানী বাবদ ৪০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া এপ্রোন ও রুমাল কিনতে খরচ হয়েছে ৩০ কোটি টাকা।

তবে খাদ্যসামগ্রী কেনার জন্য ৪ হাজার ১৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ কীসের ভিত্তিতে এবং ১৫০টি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় কীসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের।

প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের তরফে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল স্কুলগুলিতে শিক্ষার্থীদের জন্য কী বিকল্প খাবার দেওয়া যেতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরা দুধ, রুটি ও ডিমের ওপর জোর দেয়। প্রস্তাবিত প্রকল্পের প্রথম ধাপের মেয়াদ তিন বছর। পরে মেয়াদ বাড়ানো হবে।এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মিজানুর রহমান বলেন, সরকারি ক্রয় বিধিমালার আলোকে সবকিছু কেনা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মীরা এবং প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মীরা এই খাবার বিতরণ করবেন। প্রথম ধাপে দারিদ্র্যপীড়িত উপজেলাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

জন সাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী কে বলেন, পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে খিচুড়ির পরিবর্তে ডিম, পাউরুটি, দুধ ও বিস্কুট স্কুলে বিতরণ করা যেতে পারে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো দুর্নীতির ব্যাপকতা। পুরো প্রক্রিয়াটিকে দুর্নীতিমুক্ত ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হবে। খাবারে পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করুন।

খেলা - এর সব খবর

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ