ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সদ্য সংবাদ

শীত এলেই গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ার কারণ জানালো কতৃপক্ষ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৪ জানুয়ারি ২০ ২১:৩২:০১
শীত এলেই গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ার কারণ জানালো কতৃপক্ষ

ইউরোপে শীতকালে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই মহাদেশের দেশগুলো সংকট এড়াতে আগাম পর্যাপ্ত মজুদ নিশ্চিত করে। এবারও তাই করা হয়েছে। কিন্তু শীতকালে বাংলাদেশে গ্যাসের চাহিদা বাড়ে না বরং কমে যায়। তবে গ্যাসের সংকটের কারণে দিনের বেলায় ঘরে রান্নার চুলা জ্বালানো যাচ্ছে না। গ্যাস সরবরাহের অভাবে শিল্পগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

দেশে প্রতিবছর শীতকালে এমনটা দেখা যায়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সংকট বেশি। প্রশ্ন হলো, শীত এলেই গ্যাসের চাপ কমে যায় কেন? শীতকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় পাইপলাইনে তরল জমার কারণে গ্যাস প্রবাহের চাপ কমে যায়- এই ব্যাখ্যাটি প্রতিবছর জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) দিয়ে থাকে। শীতের সময়. এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে শুধু এই একটি কারণেই এত সংকট সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। বরং ভূতাত্ত্বিক ও জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা সরবরাহ কমানোর পেছনে দুটি বড় কারণের কথা বলছেন।

তারা বলছেন, এই শীতে গ্যাস সরবরাহ কমার পেছনে প্রধান দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমটি হল গার্হস্থ্য গ্যাস ক্ষেত্র থেকে অনুসন্ধানে হ্রাস। দ্বিতীয়টি হল তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) কম আমদানি। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক কম। তাই বিদ্যুতের চাহিদা কমলেও শিল্প ও আবাসিক খাতের গ্রাহকরা গ্যাস পাচ্ছেন না।

শীতকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সাথে সাথে পাইপলাইনে তরল জমা হওয়ার কারণে গ্যাস প্রবাহের চাপ কমে যায় - প্রতি বছর শীতকালে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং পেট্রোবাংলা এই ব্যাখ্যা দেয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে শুধু এই একটি কারণেই এত সংকট সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। বরং ভূতাত্ত্বিক ও জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা সরবরাহ কমানোর পেছনে দুটি বড় কারণের কথা বলছেন।দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র থেকে নিয়মিত গ্যাস উৎপাদনের পর তা প্রক্রিয়াজাত করে জাতীয় গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইনে সরবরাহ করা হয়। গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলনের সময় গ্যাসের চাপ প্রতি বর্গ ইঞ্চি (পিএসআই) প্রায় চার হাজার। গ্যাস প্রবাহ এই চাপের উপর নির্ভর করে। জাতীয় পাইপলাইন প্রাথমিকভাবে ১,০০০ চাপে গ্যাস সরবরাহ করে। তারপর ধাপে ধাপে এর চাপ আরও কমে যায়। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা বুঝে গ্যাসের চাপ ঠিক রাখার কাজ করে থাকে। এটি সাধারণত বড় শিল্প কারখানায় ১৫ থেকে ২০ পিএসআই চাপে গ্যাস সরবরাহ করে। এখন অনেকেই এক থেকে দুই পিএসআই পাওয়ার অভিযোগ করছেন। এমন চাপে গ্যাসের প্রবাহ এলে কারখানা চালু রাখা যাবে না। আবার আবাসিক খাতে সাধারণত ফাইভ পিএসআই রাখা হয়। এখন রান্নার চুলা জ্বালাতে দিনের বেলা গ্যাস পাওয়া যায় না।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির ভূতাত্ত্বিক বিভাগের প্রধান ড. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শীতকালে তাপমাত্রা কমলে পাইপলাইনে গ্যাসের সঙ্গে কনডেনসেট (গ্যাসের উপজাত) মতো তরল পদার্থ আসে। এ কারণে পাইপলাইনের ভেতরে প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং গ্যাসের চাপ কমে যায়। এ কারণে গ্যাস সরবরাহ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তবে সঠিক চাপে গ্যাসের প্রবাহ ঠিক রাখতে এ খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়মিত পাইপলাইন পরিষ্কারের কাজ করে থাকে।

শীতকালে পাইপলাইনে কনডেনসেট জমে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ার কারণে সংকট সৃষ্টি করা উচিত নয়। এটা সবসময় ছিল. এই শীতে গ্যাসের সংকট আগের চেয়ে বেশি। এর প্রধান কারণ দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমে গেছে। একই সঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে না। সামনে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।বদরুল ইমাম, ভূতত্ত্ববিদ মোদেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ মিলিয়ন ঘনফুট। ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট সরবরাহ প্রায় সব সেক্টরের চাহিদা মেটাতে পারে। এমনিতেই সারা বছর এক খাতে কমিয়ে অন্য খাতে বাড়ানোর কাজ (রেশনিং) করতে হয় গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে। এই শীতে কোনোভাবেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না। দৈনিক সরবরাহ ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট কম। চাহিদা মেটানো কঠিন। সরবরাহ কমে গেলে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জে সংকট বেশি। আগামী মার্চে গ্যাস সরবরাহ বাড়তে পারে।

গ্রীষ্মকালে সর্বোচ্চ চাহিদা থাকাকালীন বিদ্যুৎ খাতে ১১০ থেকে ১১২ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। এখন প্রতিদিন ৭০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে সার কারখানায় সরবরাহ বেড়েছে। বেশিরভাগ সার কারখানা সাধারণত গ্যাসের সংকটের সময় বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববাজারে সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। এখন সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে প্রতিদিন ২২০ মিলিয়ন ঘনফুট।

এর আগে দেশের নিজস্ব গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছিল। এক বছর ধরে তা কমছে। এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ২০০ কোটি ঘনফুট। হবিগঞ্জে শীর্ষ উৎপাদক বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন হয়েছে মৌমাছি

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে