বাশারই হতে পারেন প্রধান নির্বাচক, যা ইশারা করছে বিসিবি

অন্যত্র রদবদল হবে কি না প্রবল সংশয়, সংশয় থাকলেও অভ্যন্তরীণ খবর, বিসিবির নির্বাচক কমিটিতে পরিবর্তন আসন্ন। এদিকে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত মিনহাজুল আবেদিন নান্নু ও হাবিবুল বাশার সুমনের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে বিসিবির।
এর মানে হয় ১ জানুয়ারী ২০২৪ থেকে তাদের সাথে চুক্তি নবায়নের প্রশ্ন, বা একটি নতুন নির্বাচন কমিটি গঠন। শীর্ষে কথা বললে, বেশিরভাগ বিসিবি পরিচালক নির্বাচক কমিটিতে পরিবর্তনের পক্ষে বলে মনে হচ্ছে।
তাদের একটাই কথা, একজন প্রধান নির্বাচক পদে আছেন ৭ বছর। আর কমিটিতে রয়েছেন ১৩ বছর। কাজেই পরিবর্তন আনাটা যৌক্তিক; কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে মিনহাজুল আবেদিন নান্নুকে প্রধান নির্বাচক পদ থেকে সরালে, তার জায়গায় প্রধান নির্বাচক করা হবে কাকে?
বিসিবির প্রধান নির্বাচক ও নির্বাচক কমিটি গঠনের কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম নীতি নেই। তবে রীতি আছে। সে রীতি মানলে মিনহাজুল আবেদিন নান্নুকে সরালে হাবিবুল বাশার সুমনই হতে পারেন ফাস্ট চয়েজ।
কারণ হলো, মিনহাজুল আবেদিন প্রধান নির্বাচক হওয়ারও ৬ বছর আগে থেকে আকরাম খান এবং সর্বশেষ ফারুক আহমেদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিতেও নির্বাচক ছিলেন। পরে ফারুক আহমেদ ২০১৬ সালে প্রধান নির্বাচক পদ থেকে সরে দাঁড়ালে নান্নুকে নির্বাচক কমিটির প্রধান করা হয়। এখন নান্নু সরে দাঁড়ালে কিংবা তাকে বাদ দিলে তার সাথে নির্বাচক হিসেবে থাকা হাবিবুল বাশারই হতে পারেন প্রথম পছন্দ।
যোগ্যতা-অভিজ্ঞতায়ও হাবিবুল বাশার সুমন পিছিয়েও নেই। জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছিলেন। দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০০৭ সালে তার নেতৃত্বেই বাংলদেশ জাতীয় দল ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেরা আটে জায়গা করে নিয়েছিল।
কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে হাবিবুল বাশারের প্রতিও আস্থা কম বোর্ড পরিচালকদের। একাংশ তার পক্ষে। অন্যপক্ষ তাকে প্রধান নির্বাচক পদে চান না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নান্নু আর হাবিবুল বাশারকে একদমই নির্বাচক কমিটিতে না রেখে প্রধান পদে নতুন কাউকে বসানোর পাশাপাশি বাশারের জায়গায়ও অন্য কাউকে নিয়োগ দেয়ার কথাই ভাবা হচ্ছে বেশি।
সর্বশেষ খবর, বিসিবির হাতে প্রধান নির্বাচক পদে বিকল্প কম। কারণ, প্রধান নির্বাচক ও নির্বাচক মনোনয়নে বিসিবি একটা অঘোষিত রীতি অনুসরণ করে আসছে।
ইতিহাস জানাচ্ছে নির্বাচক কমিটির প্রধান পদে হয় জাতীয় দলের একজন সাবেক অধিনায়ক, না হয় জাতীয় দলের হয়ে খেলা কোন নামী, প্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় ক্রিকেটারকেই বেছে নিয়েছে বিসিবি।
এরই ধারাবাহিকতায় আইসিসি ট্রফি বিজয়ের আগে সাবেক সিনিয়র ক্রিকেটার লুৎফর রহমান মাখনকে প্রধান নির্বাচক করা হয়। এরপর তথা আইসিসি ট্রফি বিজয়ের পর ১৯৯৯ বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে এনায়েত হোসেন সিরাজ হন প্রধান নির্বাচক। এরপর পর্যায়ক্রমে মাইনুল হক মাইনু, তানভির হায়দার, আলিউল ইসলাম, ফারুক আহমেদ, রফিকুল আলম, আকরাম খান, ফারুক আহমেদ এবং সর্বশেষ সিলেকশন কমিটির প্রধান হন মিনহাজুল অবেদিন নান্নু।
ওপরে যাদের নাম বলা হলো, তাদের মধ্যে লুৎফর রহমান মাখন আর আলিউল ইসলাম ছাড়া সবাই জাতীয় দলের সবেক ক্রিকেটার এবং ফারুক আহমেদ, আকরাম খান ও মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব করেছেন।
একটু খেয়াল করে দেখুন, শেষ তিন প্রধান নির্বাচক আকরাম, ফারুক আর নান্নু তিনজনই জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। কাজেই নান্নুর বিকল্প হিসেবে জাতীয় দলের আরেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারকে প্রধান নির্বাচক করা হলে ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়।
তবে যেহেতু নান্নুর পাশাপাশি হাবিবুল বাশারকেও না রাখার চিন্তা প্রায় চূড়ান্ত, তাই বিসিবিকে বিকল্প পথে হাঁটা ছাড়া উপায়ও নেই। জাতীয় দলের সব সিনিয়র সাবেক অধিনায়ক শফিকুল হক হীরা, রকিবুল হাসান, গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর প্রধান নির্বাচক পদে যোগদানের সম্ভাবনা খুব কম।
আর তাদের উত্তরসূরি- আকরাম খান, নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং খালেদ মাহমুদ সুজনরা পরিচালক হিসেবে বোর্ড পরিচালনায় আছেন। সেক্ষেত্রে বাকি থাকলেন খালেদ মাসুদ পাইলট, মোহাম্মদ আশরাফুল, মাশরাফি বিন মর্তুজা, শাহরিয়ার নাফীস প্রমুখ। এর মধ্যে মাশরাফি এখনো খেলছেন। এছাড়া তিনি জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সদস্যও। আগামী নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন। তিনি বিসিবির একটি স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধান হবেন, সেটাও বড় প্রশ্ন।
আর খালেদ মাসুদ পাইলটের ব্যাপারে কেন যেন একটা নেতিবাচক মনোভাব বেশিরভাগ বোর্ড কর্তাদের কাছে। ভেতরের খবর, পাইলটকে প্রধান নির্বাচক করার কথা ভাবতে নারাজ অনেক পরিচালকই।
বাকি থাকলো মোহাম্মদ আশরাফুল। দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে মেধাবী ও প্রতিভাবান এ ক্রিকেটারের ব্যাপারে বিসিবি এখনো নিজেদের অবস্থান পাকা করেনি। তবে শোনা যায়, বোর্ড কর্মকর্তারা আশরাফুলের ব্যাপারে দ্বিধা বিভক্ত। একপক্ষের যুক্তি আশরাফুল ম্যাচ ফিক্সিংয়ে দায়ে অভিযুক্ত হয়ে শাস্তি ভোগ করেছেন। তাকে নির্বাচক করা হলে না আবার প্রশ্ন ওঠে!
অন্যপক্ষর দাবি, আশরাফুল শাস্তি শেষে ক্রিকেটার হিসেবে মাঠে ফিরেছেন। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় লিগ, বিপিএল ও বিসিএল খেলেছেন। গত বছরও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডনের পক্ষে খেলতে দেখা গেছে আশরাফুলকে। তাহলে তাকে দেশের ক্রিকেটের কোন বড় পদে দায়িত্ব দিলে সমস্যা কোথায়?
কাজেই ধরে নেয়া যায় আশরাফুলও নির্বাচক হচ্ছেন না। সুতরাং, বিসিবির সামনে অপশন গেছে কমে। এখন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আর জাতীয় দলের সাবেক ডাকসাইটে কোন ক্রিকেটারের পরিবর্তে জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব না করা কাউকে প্রধান নির্বাচক করা ছাড়া বিসিবির সামনে তেমন পথ খোলা নেই এখন।
ইতিহাস জানাচ্ছে গত দুইযুগেরও বেশি সময়ে যারা প্রধান নির্বাচক ছিলেন, তাদের মধ্যে জাতীয় দলে না খেলা ক্রিকেটার ২ জন; লুৎফর রহমান মাখন আর আলিউল ইসলাম। এর মধ্যে মাখন পূর্ব পাকিস্তান দলকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আর আলিউল ইসলাম স্বাধীনতার পর দেশের ক্রীড়াঙ্গনের ‘সুপার পাওয়ার’ হয়ে যাওয়া আবাহনীর প্রথম অধিনায়ক ছিলেন।
এছাড়া এনায়েত হোসেন সিরাজ, তানভির হায়দার, মাইনুল হক মাইনু, রফিকুল আলম প্রত্যেকে জাতীয় দলের ব্লেজার গায়ে চাপিয়েছেন। সুতরাং, এবার জাতীয় দলের বাইরের কাউকেই প্রধান নির্বাচক হিসেবে বেছে নেয়াকে শ্রেয় বলেই ভাবছে বিসিবি।
সম্ভাব্য প্রধান নির্বাচক হিসেবে সাবেক ক্রিকেটার, দেশের অন্যতম সেরা ক্রিকেট প্রশিক্ষক, দেশীয় ক্রিকেটের সুতিকাগার বিকেএসপির প্রথম তিন প্রশিক্ষকের অন্যতম নাজমুল আবেদিন ফাহিমের নামই উচ্চারিত হচ্ছে বেশি।
তেমনটা হলে, প্রায় ২ যুগ পর জাতীয় দলে খেলেননি- এমন কোনো একজনকে প্রধান নির্বাচক হিসেবে বেছে নেয়া হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, ৭০ দশকের একদম শেষভাগ থেকে আশির দশকের প্রায় পুরো সময় উদিতি, ওয়ারী আর সূর্যতরুণের হয়ে ঢাকার ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলেছেন ফাহিম।
এদিকে জাতীয় দল পরিচালনা, পরিচর্য্যা ও তত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান জালাল ইউনুসের কথায় আবার ভিন্ন সুর। মঙ্গলবার বিসিবির এ অন্যতম নীতি নির্ধারককে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘জাতীয় দলের নির্বাচক কমিটির সদস্য হওয়ার পূর্বশর্ত বা ‘ক্রাইটেরিয়া’ কি ? জাতীয় দলে না খেলা কেউ কি প্রধান কিংবা নির্বাচক কমিটির সদস্য হতে পারবেন না বা পারেন না?
জবাবে জালাল বলেন, ‘ন্যাশনাল টিমের সাবেক ক্রিকেটার হলেই ভাল হয়।’
এখন দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়, নান্নু আর হাবিবুল বাশার সুমনের জায়গায় কোন দু’জনকে নির্বাচক পদে বেছে নেয় বিসিবি?
খেলা - এর সব খবর
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আছিয়ার শেষ স্বীকারোক্তি: আছিয়া নিজে বলে গেছে ধ/র্ষণ করেছে কে (ভিডিওসহ)
- আইপিএলে তাসকিনকে দলে নিবে কি না জানিয়ে দিলো লখনৌ
- শেয়ারবাজারে কারসাজি: বিএসইসি'র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে সামনে এলো গুরুত্বপূর্ণ নাম
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার (১৩ মার্চ ২০২৫)
- আছিয়ার ধ/র্ষক দুলাভাই কে নিয়ে তথ্য দিলেন তার শ্রেণী শিক্ষক মাহফুজ
- দ্য হান্ড্রেডে বাংলাদেশের ২৯ ক্রিকেটার শেষ হলো নিলাম
- শিশু আছিয়া ধ/র্ষণ ও হ/ত্যা মামলার প্রধান আসামী হিটু শেখের আদালতে স্বীকারোক্তি
- বাড়লো সৌদি রিয়াল রেট বিনিময় হার
- শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসা নিয়ে ট্রাম্পের পোস্ট জানা গেল সত্যতা
- দুই কোটি নয় মুস্তাফিজকে দলে নিতে কলকাতাকে গুনতে হবে ৬.৫ কোটি রুপি
- মুস্তাফিজ নাকি তাসকিন আইপিএল খেলার জন্য কাকে এনওসি দিবে বিসিবি
- ৭৫ লাখ রুপিতে আইপিএলে দল পেলেন মুস্তাফিজের সতীর্থ
- আওয়ামী লীগের পতনের কারণ
- অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রজ্ঞাপন: সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য সুখবর
- লারার রেকর্ড ভেঙে টেস্টে ৪০৪ রানের ইনিংস খেললেন বাংলাদেশের মুস্তাকিম