ঢাকা, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ডলার বাজারে হঠাৎ রেকর্ড দাম বৃদ্ধি

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ নভেম্বর ১০ ১৪:৪২:৩০
ডলার বাজারে হঠাৎ রেকর্ড দাম বৃদ্ধি

ডলার সংকটের অজুহাতে খোলা বাজারে রেকর্ড হার

খোলাবাজারে ডলার সংকট ও ব্যাংকগুলোতে ডলারের উচ্চমূল্যের প্রভাবের অজুহাতে খোলা বাজারে ডলারের দামে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এইদিন বাজারে এক ডলার বিক্রি হয়েছিল ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায়। একদিন আগে এই রেট ছিল ১২২ টাকা। এর আগে দীর্ঘদিন খোলা বাজারে ডলারের দর ছিল ১১৯-১২০ টাকা।

ব্যাংক ও খোলা বাজারের মধ্যে ডলারের বিনিময় হারের ব্যবধান গত কয়েকদিন স্বাভাবিক থাকার পর গতকাল হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। ব্যাংকগুলোতে ডলার যেমন ১২৪ টাকা থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, তেমনি খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২৬ টাকা থেকে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী এখন খোলা বাজারে প্রতি ডলারের দাম ১১৫ টাকা ৫০ পয়সা হওয়ার কথা।

ব্যাংকগুলোতে আবারও ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ ব্যাংকে গিয়ে প্রয়োজনীয় ডলার পাচ্ছেন না। ডলারের প্রয়োজনে তারা খোলা বাজারে যেতে বাধ্য হচ্ছে। আর এ সুযোগে কাঙ্খিত দাম নিচ্ছে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে দেশের খোলা বাজারে আবারও বেড়েছে ডলারের দাম।

খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটের ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় খোলা বাজারে ডলারের সরবরাহ কম হওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। দেশে প্রবাসীদের আগমন কমেছে, বিদেশি পর্যটকও কম আসছে। এ ছাড়া চলমান অবরোধের ভয়ে কেউ ডলার আনছেন না। এসব কারণে ডলারের সরবরাহ খুবই কম। এছাড়াও যে কেউ খোলা বাজার থেকে ডলার কিনতে পারেন। ব্যাঙ্ক থেকে কেনার জন্য পাসপোর্ট অনুমোদন প্রয়োজন। এ কারণে অনেকেই এখন খোলা বাজার থেকে ডলার কিনতে আসেন। ফলে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। তাই বেশি দামে কিনতে হয় বলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানির কর্ণধার কালবেলাকে বলেন, আমরা সর্বোচ্চ ১২৫ টাকায় ডলার কিনেছি এবং সর্বোচ্চ ১২৬ টাকা ৫০ পয়সায় বিক্রি করেছি।

খোলা বাজারে ডলারের দর বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল শিকদার কালবেলাকে বলেন, ব্যাংকের ডলারের দর অনেক বেড়েছে। ফলে খোলা বাজারেও চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞাসহ নানা কারণে খোলা বাজারে ডলারের সরবরাহ কিছুটা কম ছিল। আবার দাম আরও বাড়তে পারে এমন আশায় অনেক ব্যবসায়ী ডলার বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব কারণে দাম একটু বেশি হতে পারে। তবে দু-একদিনের মধ্যে ব্যাংক রেট কমলে খোলা বাজারেও তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। স্বাভাবিক না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোলাবাজারে ডলারের দাম বাড়ার কারণগুলো হচ্ছে ব্যাংকগুলোতে ডলারের মজুদ কম, ডলারের দাম নির্ধারণ এবং শিক্ষার্থীর বিদেশে যাওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমে লেনদেন বেড়ে যাওয়া। এতে রেমিটেন্স প্রবাহে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা। এ অবস্থায় খোলাবাজারে ডলারের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঠেকাতে খোলাবাজারে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ ও ডলার লেনদেন বন্ধের পরামর্শ দিয়েছেন তারা। কারণ খোলাবাজারে দাম বাড়লে প্রবাসীদের অবৈধ আয় বাড়ে। আবার অবৈধ উৎস থেকে আয় বাড়লে মানি লন্ডারিংও বাড়ে। তাই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করে কেউ সুবিধা নিচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করেন তারা।

এর আগে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করায় সাত মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া একই কারণে আরও ১০ মানি চেঞ্জারের কাছ থেকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। তবে ছয়টি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের ক্ষমা চাওয়ার পর তাদের লাইসেন্স স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ



রে