ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

‌‌‘অস্থির পরিস্থিতি’তে ডলারের দর, কঠিন চিন্তায় ব্যাংকের মালিকরা

অর্থনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ নভেম্বর ০৯ ২১:৪২:৪৮
‌‌‘অস্থির পরিস্থিতি’তে ডলারের দর, কঠিন চিন্তায় ব্যাংকের মালিকরা

বর্তমান ডলারের বাজার খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ ও নির্ধারিত মূল্যে ডলার বিক্রি এবং বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেডা) শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে এই সহায়তার অনুরোধ করা হয়। বৈঠকে ২১টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আরএফ হুসেইন বলেন, ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গতকাল (নভেম্বর ৮) এবিবি এবং বাফেট একটি ডলার ক্রয় হারে সম্মত হয়েছে যার মধ্যে সবাই বাস করবে। সর্বশেষ নির্দেশনা অনুসারে, বিদেশী আয় সহ ব্যাংকগুলি সরকারী এবং বেসরকারী প্রণোদনা সহ যে কোনও ক্ষেত্রেই ডলারের বিপরীতে ১১৬ টাকার বেশি দিতে পারবে না। কিন্তু ব্যাংকগুলোকে আমদানিকারকদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে ১১১ টাকায়; এর বেশি নেওয়া যাবে না। কেউ এর লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

ডলারের দর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগের ডলারের হারে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বৈদেশিক এবং রপ্তানি আয় সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ৫০ পয়সা মূল্যে ক্রয় করতে হবে। আর আমদানি দায় মেটাতে ডলারের দাম আগের মতো নেওয়া যেতে পারে ১১১ টাকা। এখন একটি ব্যাংক বেশি দামে অর্থাৎ আড়াই শতাংশ বেশি দামে ডলার কেনে; তখন তাকে নিজের খরচ থেকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। তবে এখন প্রবাসী আয়ে সরকারের ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা এবং ব্যাংকের ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা ডলার সর্বোচ্চ ১১৬ টাকায় নিয়ে যেতে পারে। এর মানে হল অভিবাসী আয় পাঠালে, আত্মীয়রা প্রতি ডলারে সর্বোচ্চ ১১৬ টাকা পাবে।

আমদানিকারকদের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১১১ টাকা বেশি নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের নেতা বলেন, কোনো ব্যবসায়ী বেশি দাম নিলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যবস্থা নেবে।

ডলারের দাম বারবার পরিবর্তনের কারণ জানতে চাইলে এবিবির চেয়ারম্যান বলেন, ডলারের বাজার খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমরা টেকসইতার জন্য সকল স্টেকহোল্ডারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। কোনো কোনো ব্যাংক বেশি সমস্যায় পড়েছে, তাদের এই হার মানতে সমস্যা হচ্ছে। তাই সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। যাতে বাজার অস্থিতিশীল না হয়।

জরুরি বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মজবুল হক বলেন, গত ৬ মাসে এমন কোনো সমস্যা হয়নি; ডলারের মূল্য ১২৪ টাকায় পৌঁছায়নি। অতিরিক্ত উদ্দীপনা জারি করায় ডলারের বাজারে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এখন তারা (এবিবি ও বাফেডা) বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে একটি রেট নির্ধারণ করেছে। তিনি তার নির্ধারিত হার বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছেন। কারণ এবিবি ও বাফেডা কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে না। তাই এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

যারা বেশি দামে ডলার কিনেছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, প্রধান শাস্তি হল তাদের ১২ টাকা লোকসানে ১১১ টাকায় ডলার বিক্রি করতে হবে। আমি মনে করি না নতুন কোনো শাস্তির প্রয়োজন আছে।

গত মার্চে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক প্রাথমিকভাবে ডলারের দাম নির্ধারণ করে। তবে এটি সংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনকে (বাফেডা) এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় ডলারের দর নির্ধারণে বৈঠক করছেন তারা।

এদিকে, আজ খোলা বাজারে নগদ খুচরা ডলার বিক্রি হয়েছে ১২৪ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২৬ টাকা পর্যন্ত। বুধবার তা ছিল ১২২ থেকে ১২৪ টন। ডলারের মূল্য এত বেশি আগে কখনো হয়নি।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে