হতাশা, নিরাশা, অভিশাপে গ্রাস করেছে বাংলাদেশকে

আশা করা যায়, বাংলাদেশ তার পূর্ণ শক্তি দেখাতে পারলে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি জমজমাট ও স্মরণীয় ম্যাচ উপস্থাপন করতে পারবে। সবাই ভালো জয়ের অপেক্ষায়।
চলতি বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার সব পথই বন্ধ বাংলাদেশের জন্য। গত ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৭ রানের পরাজয় সব তছনছ করে দিয়েছে! যে বাংলাদেশ আশা-স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপের বড় মঞ্চে খেলছিল, সেই এক পরাজয়ে সব তছনছ হয়ে গেল!
বাংলাদেশের ক্রিকেটের আকাশে এখন কালো মেঘ; বিরাজ করছে নৈরাজ্যের পরিবেশ। এই অপ্রত্যাশিত, অবিশ্বাস্যভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
ওডিআই ক্রিকেট খেলে বছরের পর বছর ধরে গড়ে উঠেছে এমন একটি ব্র্যান্ড- ক্রিকেট বিশ্ব মঞ্চে সেটা কোথায় দেখায়!
হ্যাঁ, দল সবসময় জিতবে এমন ধারণা করা একেবারেই ভুল। কারণ দল কখনও হেরে যাবে, কখনও কঠিন প্রতিযোগিতা তৈরি করবে, কখনও শিকার হবে, কখনও জয়ের ধারায় থাকবে – এগুলো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।
কিন্তু আমার মনে হয় কোনো এক অদৃশ্য, অজানা কারণে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নেই! প্রথম ম্যাচ ছাড়া এখন পর্যন্ত যে ছয়টি ম্যাচ খেলেছেন তার কোনোটিতেই স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলেননি তিনি। আশানুরূপ ফল আসেনি।
নেদারল্যান্ডস ম্যাচে সবকিছু হারানোর পর মঙ্গলবার পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানও হারানো অবস্থায় রয়েছে। তবে পাকিস্তান সবসময়ই বাংলাদেশের জন্য কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী। আমার মনে হয় এই পাকিস্তানের বিপক্ষে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হবে সাকিব। এই ম্যাচ সহজ হবে না। তবে এই ম্যাচে টাইগাররা ভালো জয় পেলে যে হতাশার রাজ্যে বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে তাতে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশের টানা পাঁচটি পরাজয়ের কারণ বিশ্লেষণ করলে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে। বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, বাংলাদেশ কোনোভাবেই তার স্বাভাবিক ব্যাটিং পারফরম্যান্স দেখাতে পারছে না। সেই সঙ্গে টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ফর্মও খারাপ হয়েছে। সংক্ষেপে যে রান আসছে তা লোয়ার মিডল অর্ডারের সৌজন্যে।
ভারতের মাটিতে টুর্নামেন্ট। রান হবে- এটাই ভবিষ্যদ্বাণী। এবং এখন তাই মনে হচ্ছে. তবে এই উইকেটে যেখানে অন্য দলের ব্যাটসম্যানরা তাদের দক্ষতা দেখিয়ে রান সংগ্রহ করছেন, সেখানে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা রয়েছেন সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে। টপ অর্ডারে ব্যাপক রদবদলও এর জন্য দায়ী। একজন ব্যাটসম্যান যদি আগে থেকে জানেন না তাকে কোথায় ব্যাট করতে হবে- তার প্রস্তুতি কী হবে, কীভাবে রান করতে হবে, তাহলে সে একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ে। ইনিংসের শুরুটা ভালো না হলে স্কোর বড় হবে কীভাবে?
বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা ভালো হচ্ছে না, মাঝমাঠেও ভালোভাবে সামলানো যাচ্ছে না- সব জায়গায় ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হচ্ছে। তারা কোনো ব্যক্তি বা দলগত পারফরম্যান্স দেখাতে পারেনি। তামিম ইকবালকে ছাড়া ওপেনিং জুটি চলেনি। তামিম লিটন খারাপ ফর্মে থাকায় বড় ম্যাচের চাপ সামলাতে পারছেন না নবাগত তানজিদ। তিনের নিচে যেতেও সফল নন মেহেদী হাসান মিরাজ। চার নম্বরে নেমে টানা ম্যাচে হতাশার ছবি এঁকেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। যেখানে অধিনায়ক সাকিবের ব্যাট বেশিদিন কার্যকর নেই।
বিশ্বকাপের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ ঢাকায় এসে সাকিবের ব্যাটিং সমস্যার সমাধান খুঁজি। এরপর মুশফিকও হয়ে ওঠেন নিজের ছায়া। হৃদয় দৌড়াতে না পারায় একাদশে জায়গা হারিয়েছে তৌহিদ। মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে কিছু রান আসছে। কিন্তু লোয়ার মিডল অর্ডারের দিকে তাকিয়ে বড় স্কোর কী? ব্যাটিংয়ের আসল কাজটা করেন শীর্ষ সারির ব্যাটসম্যানরা। সেখানে সুপার ফ্লপ বাংলাদেশ।
নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ব্যাটিং ছিল খুবই হতাশাজনক, অপ্রত্যাশিত এবং অগ্রহণযোগ্য। ব্যাটিংয়ের এই ব্যর্থতার সঙ্গে যোগ হয়েছে দুর্বল বোলিংও। স্পিনাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এভাবে দায়িত্ব সামলাতে পারেননি ফাস্ট বোলাররা।
উইকেট সব সময় বোলারদের জন্য সহায়ক হবে, যা বিশ্ব টুর্নামেন্টে প্রত্যাশিত নয়। এখানে আপনাকে প্রতিভা, বৈচিত্র্যময় বোলিং পারফরম্যান্স দেখিয়ে সফল হতে হবে। আর এতেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। কেন
আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বোলারদের দৃঢ়তা থাকলেও পরের ম্যাচে তাদের পারফরম্যান্স 'আশাজনক' ছিল না। ব্যাটিং-বোলিং- এই দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও বাংলাদেশের দুর্দশা দেখা গেছে। শেষ ম্যাচে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ মিস হয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে সব দিক থেকেই পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
আমার মতে, এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে ইতিবাচক ক্রিকেট খেলা। বাকি তিন ম্যাচে ভালো পারফর্ম করতে পারলে পরিস্থিতি থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে।
এদিকে টানা চার ম্যাচ হেরে হতাশার সাগরে ডুবেছে পাকিস্তান দলও। কিন্তু এই দল ক্রিকেট খেলতে জানে, বাংলাদেশের জন্য ম্যাচ জেতা খুব কঠিন হবে। ধারাবাহিকতা না থাকলেও পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ খুবই শক্তিশালী। সাড়ে তিনশ রান তাড়া করে জেতার ক্ষমতা আছে তার। এই ব্যাটিং শক্তিতে বাংলাদেশ তাদের বিধ্বংসী পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে নিজেদেরকে সমস্যায় ফেলতে পারে। শাহীন শাহ আফ্রিদির জন্য বল সামলানো কঠিন হবে। তার দ্রুত এবং বৈচিত্র্যময় বোলিং আজকের ম্যাচে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এছাড়া স্পিনেও এগিয়ে দলটি।
সব মিলিয়ে পাকিস্তান খুবই শক্তিশালী। এগুলো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। সেই হিসাব মাথায় রেখেই মাঠে নামতে হবে বাংলাদেশের। কোন ভুল করা যাবে না।
বাংলাদেশ তার পূর্ণ শক্তি দেখাতে পারলে পাকিস্তানকে হারাতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- অলস টাকা আর নয়! শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সুখবর দিল বিএসইসি
- পুঁজিবাজার সংকটে সরকার নিচ্ছে দ্রুত পদক্ষেপ: ৪ মূল সমস্যা চিহ্নিত
- গাজার মতো হামলার হুমকি বাংলাদেশকে! মুখ খুললো ভারতীয় মিডিয়া
- চীনের সহায়তায় পাঁচ জেলায় স্বাস্থ্য বিপ্লব: আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে
- শেয়ারবাজারে বড় পরিবর্তনের আভাস! বৈঠকে বসছে সরকার ও শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠান
- পুঁজিবাজার সংকটে সরকারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট, ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে বিনিয়োগকারীরা
- শেখ হাসিনার ৮ মিনিটের ভিডিও বার্তা: ইতিহাস, শিল্প ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
- আগামী দিনে বিশ্ব ক্রিকেটে দাপট দেখাবে যে পাঁচ ক্রিকেটার
- চট্টগ্রাম-১১ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা: বাবা-ছেলের লড়াই!
- Real Madrid vs. Arsenal: একাদশ, পরিসংখ্যান ও ম্যাচ প্রেডিকশন
- রিয়াল মাদ্রিদ বনাম আর্সেনাল কোয়ার্টার ফাইনাল স্কোর আপডেট
- শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ ও স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা
- ৫৪ বছরেই শেষ! আত্মহত্যা করলেন জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা নিকি ক্যাট
- বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিতের দোরগোড়ায় বাংলাদেশ, সামনে সহজ সমীকরণ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা