ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

কোহলির আফসোসের দিনে, ভারতের পাঁচে পাঁচ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ অক্টোবর ২৩ ১০:২৫:০৮
কোহলির আফসোসের দিনে, ভারতের পাঁচে পাঁচ

ড্যারিল মিচেলের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও এই সংগ্রহকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। তা কাটিয়ে উঠতে লড়াই করতে হয়েছে ভারতকে।

কিন্তু বিরাট কোহলি থাকায় স্বাগতিক ড্রেসিংরুমে উদ্বেগের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। গত ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা কোহলি আজ রান তাড়ায় অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন। দলটি তার টানা পঞ্চম জয়ে আনন্দিত।দলগুলি তাদের অপরাজিত শিরোপা ধরে রাখতে চেয়েছিল কারণ তারা আজ ধর্মশালা স্টেডিয়ামে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। ভারত সেই ধারাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল প্রথমবার নিউজিল্যান্ডকে হারের স্বাদ এনে দিয়ে। স্বাগতিক দল কিউইদের বিপক্ষে ১২ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটে জিতেছে। ২০০৩ বিশ্বকাপের পর প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে নিউজিল্যান্ড ভারতের কাছে হেরেছে।

২৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ভারতকে দারুণ সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। তাদের ওপেনিং জুটি থেকে এসেছে ৭১ রান। দ্বাদশ ওভারে রোহিতকে বোল্ড করে লকি ফার্গুসনের বলে জুটি ভেঙে যায়। এই বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ভারতীয় অধিনায়ক ৪০ বলে ৪টি চার ও ছক্কায় ৪৬ রান করেন।

রোহিতের বিদায়ের পর টিকতে পারেননি গিল। ফার্গুসনের পর দ্বিতীয় শিকার হন ডানহাতি ওপেনার। কিন্তু এর আগে আমলার একটি রেকর্ড ভেঙে দেন গিল। ২৬ রানের একটি ইনিংস খেলার পর, এই ভারতীয় ওপেনার ওডিআইতে দ্রুততম ২০০০ রান করার মালিক হয়েছেন। ৪০ ইনিংসে ব্যাট করে এই রেকর্ড গড়েন আমলা। ২ ইনিংস কম খেলে তার থেকে এগিয়ে গেলেন গিল।

দুই ওপেনারের বিদায়ের পর ইনিংসের হাল ধরেন বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ার। তবে ১৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মাঠে নেমেছে কুয়াশা। পরের ওভার শেষে ঘন কুয়াশার কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। মিনিট দশেক পর কুয়াশা কেটে গেলে আবার খেলা শুরু হয়। এরপর ইনিংসের উন্নতিতে মনোযোগ দেন কোহলি ও আইয়ার। দুজনেই যোগ করেন ৫২ রান। দুর্দান্ত খেলতে থাকা আইয়ার (৩৩) ২২তম ওভারে কিউই ফাস্ট বোলার ট্রেন্ট বোল্টের বলে আউট হন।

৩ উইকেট হারলেও বড় বিপদে পড়েনি ভারত। কারণ কোহলি আবার দায়িত্ব নিলেন। ৫০ রান যোগ করার পর রাহুল আউট হওয়ার সাথে সাথেই জুটি ভেঙে যায়। কিউই স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের বোলিংয়ে ৩৫ বলে ২৭ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি। কিন্তু কোহলি হাল ছাড়েননি। তিনি ৬০ বলে তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৬৯তম হাফ সেঞ্চুরি করেন।

এই হাফ সেঞ্চুরির মাধ্যমে বিশ্বকাপে ৫০ বা তার বেশি রানের ইনিংস খেলার ক্ষেত্রে সাকিবের রেকর্ড স্পর্শ করেছেন কোহলি। দুজনই বিশ্বকাপে ৫০ বা তার বেশি রানের ১২টি ইনিংস খেলেছেন। একই কৃতিত্ব শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারার নামেও। এই তিনজন যৌথভাবে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। ২১ বার ৫০ বা তার বেশি রান করে শীর্ষে রয়েছেন ভারতীয় কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার।

কোহলির ফিফটি দেখে পরের ওভারেই রান আউট হন সূর্যকুমার যাদব (২)। কোহলির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির কারণে নিজের উইকেট তুলে দেন তিনি। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে ৭৮ রানের জুটি গড়েন কোহলি। তার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির কাছাকাছি এসেও, তিনি ১০৪ বলে ৮ চার এবং ২ ছক্কার সাহায্যে ৯৫ রান করার পর আউট হন। অপরাজিত থাকতেই ম্যাট হেনরির বলে ক্যাচ দেন চার রানে। ভালো সমর্থন পাওয়া জাদেজা জয় নিশ্চিত করেন এবং ৪৪ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। প্রথমে ব্যাট করে ২৭৩ রানে আউট হন তিনি। শুরুতেই তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ভারতের দুই ফাস্ট বোলার মহম্মদ শামি ও মহম্মদ সিরাজের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেননি নিউজিল্যান্ডের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ডেভন কনওয়ে এবং উইল ইয়াং। এর মধ্যে ৯ বল খেলে শূন্য রানে সিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কনওয়ে। এরপর ১৯ রানে ইয়াংয়ের (১৭) উইকেট হারায় কিউই দল। শামি তাকে সোজা বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন।

চাপের মুখে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস সামলেছেন রচিন রবীন্দ্র ও মিচেল। এই জুটি ১৫৯ রান করে। এর মধ্যে ৮৭ বলে ৭৫ রান করে শামির দ্বিতীয় শিকার হন রবীন্দ্র। এদিকে ব্যক্তিগত ১৭ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম। কিন্তু মিচেল ওয়ানডে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি করেন ঠিক ১০০ বলে।

তবে ব্যক্তিগত ৭৩ রানে জসপ্রিত বুমরাহ মিচেলের একটি সহজ ক্যাচ ফেলে দেন। এর আগে, ৬০ রানের ব্যক্তিগত স্কোরেও উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল তার ক্যাচ মিস করলে মিচেল রক্ষা পান। দুটি জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি করেন তিনি। কিন্তু শেষ ছয় ওভারে কিউই দলের রানের গতি কমে যায়। সেই চাপে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকেন।

শেষ ৬ ওভারে কিউই দল ৬ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩০ রান করে। এদিকে, শেষ ওভারের পঞ্চম বলে সেট ব্যাটসম্যান ড্যারিল মিচেলকে ফিরিয়ে দিয়ে শামি তার পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন। মিচেলের ব্যাট থেকে ১২৭ বলে ১৩০ রান; মারেন ৯টি চার ও ৫টি ছক্কা। নিউজিল্যান্ডের শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউই দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি।

ভারতের হয়ে কুলদীপ ২টি এবং বুমরাহ ও সিরাজ ১টি করে উইকেট পান। পাঁচ উইকেট নেওয়া শামি দলে ফেরার পর ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ