ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

শেষ ভরসা মুশফিক, নতুন আলো দেখাতে চাই বাংলাদেশের হয়ে

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ অক্টোবর ১১ ১৬:১৮:১১
শেষ ভরসা মুশফিক, নতুন আলো দেখাতে চাই বাংলাদেশের হয়ে

ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে, সামনে মরুভূমি। পথটা মোটেও সুবিধাজনক নয়। ভুলগুলো বিপজ্জনক। তাই সাবধানে এগিয়ে যান। একবার পাস করলেই আলো দেখতে পাবেন। যেখানে আছে শুধু অর্জন, আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। সেই আনন্দ ভাগাভাগি করতে চান মুশফিকুর রহিমও। তাই বিশ্বকাপকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে ভারত।

হয়তো এটাই শেষ, এখানেই থেমে যেতে হবে মুশফিককে। তবে ব্যতিক্রম থাকলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। কারণ বয়স যাই হোক না কেন, পারফরম্যান্সের গ্রাফ যদি উপরের দিকে যায়। হ্যাঁ, এটা ঠিক, তিনি ইতিমধ্যেই বলেছেন, 'কখনও বোঝা হবেন না।' পারফর্ম করতে পারলেই আরও কিছু সময় নিন। না হলে আপনি আপনার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ লাইনটি লিখে হাসিমুখে চলে যাবেন।

যে কারণে মুশফিককে এত পছন্দ! যা বলবেন সোজা কথা। যেখানে অবসরের ঐতিহ্য দাঁড়ায়নি। নতুনদের স্বাগত জানানো হয় না। অন্তত মুশফিকরা সেই পথ অনুসরণ করবেন না যেখানে এক সময়ে অভিজ্ঞরা ছিটকে পড়েন। তাই আপনি আপনার দেওয়া এবং আপনি যা কিছু পেয়েছেন তার সবকিছুকে বিদায় জানাতে চান। আগের দিনগুলো একটু রঙিন হলে দোষ কি?

ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন কম দেখা যায়নি। মুশফিক সবসময় দলকে জেতার জন্য লড়েছেন। তার ব্যাট হাসলে বাংলাদেশও হাসে। দলের প্রয়োজনে কীভাবে ঠাণ্ডা মাথায় এগোবেন তাও তার ঠোঁটে। এখন সেই অধ্যায়গুলো সংশোধন করে বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করার পালা। 'শেষ ভালো, তার জন্য সব ভালো' এমন কোনো কথা নেই। মুশফিক সেই মনোভাব নিয়ে ভারতের মাটিতে আরেকটি গর্জন দিতে প্রস্তুত।

২০০৭ থেকে ২০২৩ দীর্ঘ ১৬ বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপ সফরে, প্রথম দুটি স্মরণীয় নয়। কিন্তু শেষের দুটি তাকে আলাদা করে। এখন শুধু ব্যাটিং নয়, উইকেটরক্ষক হিসেবেও নিজেকে শাণিত করেছেন। আরও কয়েক কেজি ওজন কমিয়েছেন তিনি। অবস্থান কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে, যাতে স্পিনে চলাচলে সমস্যা হয় না। স্পোর্টিং উইকেটে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ক্যাচ ও স্টাম্পিং ঠিকমতো করতে হবে! ভুল হলে রেহাই নেই!

মুশি অনুশীলনের ঘনত্বও মাঝে মাঝে সমালোচিত হয়। এটা ঠিক, আজ তিনি যেখানে দাঁড়িয়েছেন, সেখানে মুশফিকের 'চরম' অনুশীলন অনেক কথায় বড় ভূমিকা রেখেছে। তিনি প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন যে তিনি প্রতিভাবান হয়ে জন্মগ্রহণ করেননি। অনেকেই জানেন না, ২০০৪ সালে বয়সের শ্রেণীতে নাম লেখানোর পর থেকে তাকে বাংলাদেশের 'ভবিষ্যত' অধিনায়ক হিসেবে ভাবা হয়। তিনি কতটা ভালো তার উদাহরণ দেওয়া যায় তৎকালীন বগুড়ার কিউরেটরের বিশ্লেষণে।

মুশফিক যখন ব্যাট দিয়ে বল স্পর্শ করেন, তখন মনে হয় না খুব বেশিদূর যাবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, টাইমিং সবসময়ই এত ভালো যে বল বাউন্ডারির দড়ি ধরে পড়ে। এত ভালো টাইমিং কিন্তু ওই বয়সে অনেক দেখিনি। অসাধারণ প্রতিভা আছে।তবে মুশফিকের মতে, তিনি একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার যিনি মাঝে মাঝে বাংলাদেশের জয়ে ছোট ভূমিকা পালন করেন। এশিয়া কাপ তার পছন্দ হয়নি।

বিশ্বকাপের প্রস্তুতির শেষ পর্বে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অভিজ্ঞ মুশফিকের তার নতুন পাওয়া পুরানো মাঠ সম্পর্কে অনেক কিছু বলার আছে। তিনি ক্যাচ খেলবেন, মারবেন কি না- তা নিয়ে সংশয়ের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তারা পরিস্থিতির চাহিদা মেটাতে পারে বলে অনেকেই দ্বিমত পোষণ করেন।

মুশফিকুর রহিম বিশ্বকাপের শেষ স্তবকে ক্ষোভের সুরে নাকি জয়ের ঝিলিক দিয়ে নিজেকে মেলে ধরবেন তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে দেশের বড় নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানরা ধীরে ধীরে ছায়া থেকে সরে এসে এখন পতনের উজ্জ্বল রোদ হতে চায়। সেটা হলে বাংলাদেশ লাভবান হবে। কারণ তিনি হাসলে বাংলাদেশও হাসবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ