ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

শেষ চারের লক্ষ্য নিয়েই বাংলাদেশ বিশ্বকাপ মিশন শুরু এইচপিসিএ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ অক্টোবর ০৭ ১১:১৮:৪৯
শেষ চারের লক্ষ্য নিয়েই বাংলাদেশ বিশ্বকাপ মিশন শুরু এইচপিসিএ

সাকিবদের চাপমুক্ত রাখার কৌশল হিসেবে আগে এমনটাই জানিয়েছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।

বিশ্বকাপ শুরুর অনেক আগেই যদি প্রধান কোচ বলতেন, 'আমাদের স্বপ্ন অনেক বড়', তাহলে সেই প্রত্যাশার চাপই বয়ে যেতে হতো সাকিব আল হাসানকে। কিন্তু এখন সময় এসেছে। যে কোনো প্রচারণা শুরু করার আগে লক্ষ্যটা জানা জরুরি। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অভিযানও শুরু হচ্ছে আজ, ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। সেই যাত্রা শুরুর আগে কোচ হাথুরুসিংহে সবাইকে সরাসরি বলেছিলেন, 'সেমিফাইনালে যাওয়াই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। আমি মনে করি এটা করার জন্য আমাদের যথেষ্ট ভালো দল আছে।

প্রাথমিক লক্ষ্য যদি সেমিফাইনাল হয়, সেটা যদি অর্জন করা যায়, আর মাত্র দুটি ম্যাচ বাকি এবং বড় স্বপ্ন হাতের নাগালে। তাই কয়েকদিন আগে প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে হাথুরু নিজেই বলেছেন যারা বড় স্বপ্ন দেখছেন, ‘ঘুম থেকে জেগে উঠুন’! গতকাল হিমাচল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা মনে করিয়ে দেওয়ার পর বাংলাদেশের প্রধান কোচ বলেন, 'আমার কাজ খেলোয়াড়দের ওপর চাপ কমানো।'

তারপর তিনি স্বপ্ন ও লক্ষ্য সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করলেন, 'মানুষ স্বপ্ন দেখতে পারে, মানুষ লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারে, লক্ষ্য থাকতে পারে। আপনি যে শব্দ ব্যবহার করুন না কেন, এটি একই জিনিস। আমরা ভালো বিশ্বকাপ খেলার চেষ্টা করছি, ম্যাচ জেতার চেষ্টা করছি। এটা আমার জন্য মূল লক্ষ্য। আগেই বলেছি, লক্ষ্য সেমিফাইনালে যাওয়া। এটি একটি স্বপ্ন হতে পারে, এটি একটি লক্ষ্য হতে পারে, এটি কোন ব্যাপার না।

বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশ ক্রিকেটে বেশ কিছুদিন ধরে যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে, বড় স্বপ্নের কথা বলাটা ছিল অতিরঞ্জন। গত জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচের পর হঠাৎ করেই অবসর নিয়েছিলেন তামিম ইকবাল, যাকে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে অধিনায়ক করার পরিকল্পনা করেছিল। তখন থেকেই শুরু হয় উত্তাল পরিস্থিতি। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে তামিম সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন।

কিন্তু অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এমন জরুরী পরিস্থিতিতে বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের নেতৃত্ব ভার সাকিব আল হাসানের কাঁধে। তামিম নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য খেলায় ফিরলেও চোটের কারণে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাননি। অন্তত এটাই টিম ম্যানেজমেন্টের অফিসিয়াল সংজ্ঞা। তবে আসল কারণ যে শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের দুই সুপারস্টার সাকিব ও তামিমের দ্বন্দ্বও এখন আর গোপন নেই।

এই বিতর্কের স্তূপ মাড়িয়ে ভারতে যেতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। সেই বিতর্ককে বাংলাদেশ কতটা পিছিয়ে রাখতে পেরেছে তারই পরীক্ষা হবে আজ। অতীত যেমন বলছে, বড় টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ কতদূর যাবে তা দেখা যাবে প্রথম ম্যাচেই। সাকিবের দল নিশ্চয়ই জয় ছাড়া আর কিছু ভাবছে না। একটি ভালো শুরু বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে ওঠার লক্ষ্যে কিছুটা আত্মবিশ্বাস দেবে।

ভারসাম্যপূর্ণ বাউন্স এবং রান লুকিয়ে থাকবে ২২ গজ সবুজ ঘাসের মাটিতে যেখানে বাংলাদেশ আজ খেলবে হিমাচল প্রদেশে। আফগানদের হারাতে বাংলাদেশেরও দরকার দুজনের। গত মাসে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ম্যাচে শেষ দেখা হয়েছিল দুই দলের। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ৩৩৪ রান করে এবং ৮৯ রানে জিতেছিল। সেই সুখস্মৃতি বাংলাদেশকে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস দেবে। তবে এটাও সত্যি যে গত জুলাইয়ে ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে সিরিজে (২-১) হারিয়েছিল আফগানরা। ওই সিরিজে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং মোটেও ভালো ছিল না। গত বছরও দ্বিপাক্ষিক সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। বাংলাদেশ সিরিজ (২-১ ) জিতলেও ব্যাটিংই বাংলাদেশকে কষ্ট দিয়েছে।

আর সেই নড়বড়ে ব্যাটিং নিয়েই আজ খেলবে বাংলাদেশ। ফজল হক ফারুকী, মুজিব উর রহমানের নতুন বলে বাংলাদেশ দলের টপ অর্ডার, মিডল ওভারে রশিদ খান ও মোহাম্মদ নবী পরীক্ষা করবে। বোলিংয়ের এই পরীক্ষায় আফগানিস্তান পাস করলে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। আর আফগান ব্যাটিংকে উড়িয়ে দিতে যে পেস দরকার সেটাই বাংলাদেশের মূল শক্তি। অভিজ্ঞ তাসকিন-মোস্তাফিজের পাশাপাশি ত্রয়ী তরুণ শরিফুল, হাসান ও তানজিম, যাকেই মাঠে নামানো হোক না কেন, আক্রমণাত্মক বোলিংয়ে কোনো কমতি থাকবে না। সাকিব-মিরাজের সঙ্গে বাড়তি স্পিনার হতে পারেন মেহেদি বা নাসুম।

আফগানরাও এই কৌশলের খেলা জানে। দুটি দল সম্প্রতি একে অপরের বিরুদ্ধে এত বেশি খেলেছে যে তাদের শক্তি এবং দুর্বলতা কমবেশি সবারই জানা। তবে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ হওয়ায় স্নায়ুর সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হবে ক্রিকেটারদের দক্ষতার ওপর। সাকিবের দল কি পারবে?

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ