ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

বৃষ্টির বাগড়ায় ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ পরিত্যাক্ত কি বলছে সমীকরণ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ সেপ্টেম্বর ০২ ২২:৪৬:৪৫
বৃষ্টির বাগড়ায় ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ পরিত্যাক্ত কি বলছে সমীকরণ

ভারতীয় দলের ইনিংস শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টির কয়েক মিনিট পরে, আবরণ সরানো হয়। ক্রিকেটাররাও মাঠে নামেন ওয়ার্ম আপ করতে। আম্পায়াররাও মাঠে নজরদারি করেন। বিশ মিনিটের মধ্যে সবকিছু ট্র্যাকে ফিরে এসেছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু সেই সময় পাল্লেকেলেই আরেক দফা প্রবল বৃষ্টি হয়। দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াইয়ে বৃষ্টিতে ভেসে গেল।

ভারত টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৮ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রান করে। এতে হার্দিক পান্ডিয়া ৮৭ রান করেন এবং দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান। এছাড়া ৮২ রান করেন ইশান কিষান। ৩৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার ছিলেন আফ্রিদি। এরপর বৃষ্টির কারণে লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি পাকিস্তান। ফলাফল শেয়ার করে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান।

সকাল থেকেই কালো মেঘে ঢাকা ছিল পাল্লেকেলের আকাশ। এ নিয়ে চিন্তিত ক্রিকেট ভক্তরাও। তবে সময় বাড়ার সাথে সাথে ভয়ের মেঘ কেটে যায়। নির্ধারিত সময়ে টস হয়েছিল। সেখানে জিতেছেন রোহিত শর্মা। এরপর প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক।

এমনকি ভারত যখন ব্যাটিং করে তখনও আকাশ পরিষ্কার ছিল। মনে হচ্ছে আর কয়েক ঘণ্টা বৃষ্টি হবে না। কিন্তু ৩০ মিনিটও খেলা হয়নি। তার আগেই বৃষ্টি হলো। পঞ্চম ওভারে বৃষ্টি আম্পায়ারদের খেলা বাতিল করতে বাধ্য করে।

বৃষ্টির কারণে ত্রিশ মিনিটের জন্য বন্ধ ছিল ম্যাচ। এরপর খেলা শুরু হলে একটি অসমাপ্ত ওভার করতে আসেন শাহীন আফ্রিদি। ওভারের শেষ বলটি মিডল স্টাম্পের ওপরে ভালো লেন্থ। বলটা একটু দুলছিল। এ কারণে ব্যর্থ হয়েছেন রোহিত। বোল্ড আউট হওয়ার আগে ২২ বলে ১১ রান করে ড্রেসিংরুমে ফিরে আসেন তিনি।

বৃষ্টিতে চোখ খুলেছে মনে হচ্ছে পাকিস্তান। বৃষ্টির আগে চার ওভারের খেলা হয়। সেখানে সাবলীল ছিলেন রোহিত। কিন্তু বৃষ্টির পর প্রথম ওভারেই ফিরে যান অধিনায়ক। বিরাট কোহলিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ৩ রানের পর। স্টাম্পের বাইরে শর্ট ডেলিভারির ভেতরে থাকায় বোল্ড হন তিনি। এই প্রথম রোহিত ও কোহলি দুজনেই একই ইনিংসে একসঙ্গে বোলিং করলেন।

রোহিত-কোহলির পরাজয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন শ্রেয়াস আইয়ার। আফ্রিদির গতির সামনে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের চোখে সরিষা ছিল! কিন্তু এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ছিলেন ব্যতিক্রমী। উইকেটে এসে প্রথম বলেই রানের খাতা খোলেন তিনি। পরের ওভারে দুই চার মারেন হারিস রউফ। কিন্তু ভালো শুরু করলেও ইনিংসে যোগ করতে পারেননি তিনি।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আক্রমণ করেন রউফ। পঞ্চম বলটি শর্ট অফ লেন্থ ছিল এবং আইয়ার তা টেনে নিতে ভুল করেছিলেন। ৯ বলে ১৪ রান করে তার ব্যাট থেকে মিড উইকেটে ফখর জামানের হাতে ধরা পড়েন। এই ইনিংসের প্রথম দুই উইকেট নেন আফ্রিদি। আইয়ার ফেরার পর উইকেট পার্টিতে আফ্রিদির সঙ্গে যোগ দেন রউফ।

ইনিংসের ১২তম ওভারের সময়, বৃষ্টি আম্পায়ারদের দ্বিতীয়বার খেলা বন্ধ করতে বাধ্য করে। এরপর ২০ মিনিটে আবার খেলার উপযোগী হয়ে ওঠে মাঠ।

ম্যাচ শুরু হলেও ভারতীয় শিবিরে শান্তি ছিল না। ইনিংসের শুরু থেকেই ক্ষিপ্ত হওয়া গিল মাটিতে কামড় দিয়ে উইকেটে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা ছিল বৃথা। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে, গিল রাউপের কাছ থেকে ফুল লেংথ ডেলিভারি রক্ষা করতে যান। কিন্তু বলের লাইনটা ভালো করে বোঝা যাচ্ছে না।। তার আগে ৩২ বলে ১০ রান করেন এই ওপেনার। ফলস্বরূপ, ভারত ৭৬ রানে চার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে হারিয়েছে।

টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের এমন পরাজয়ের দিনে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন ইশান কিষান। ব্যাটারিং পজিশনে দাঁড়িয়েও সাবলীল ব্যাটিং করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। উইকেটে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি গিল। সেখানে ঈশান উইকেটে এসে বাহু খুলে শট খেলেন। ৫৪ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। এরপর রান রেট বাড়ানোর দিকে নজর দেন তিনি। এতে তিনি সফল হন। ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু আশির ঘরে কাঁটা পড়েছে।

৩৮তম ওভারের তৃতীয় বলে হারিস রউফকে পুল করতে গেলে বল উঠে যায় সোজা আকাশে। মিড অনে সহজ ক্যাচ ধরেছেন বাবর আজম। সাজঘরে ফেরার আগে ৮১ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৮২ রান করেন ইশান। পঞ্চম উইকেটে ইশান-পান্ডিয়া গড়েছিলেন ১৪১ বলে ১৩৮ রানের জুটি। সেই জুটি ভেঙে পাকিস্তানকে আবারও খেলায় ফেরালেন রউফ।

হার্দিক যখন উইকেটে আসেন তখন ধুঁকছিল দল। সেখান থেকে হার্দিক-ইশানের ব্যাটেই ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। দুর্দান্ত ইনিংস খেললেও সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন হার্দিক। ৪৪তম ওভারের প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের ওপর গুড লেন্থে করেছিলেন আফ্রিদি। বলে খুব একটা গতি দেননি, আর সেই স্লোয়ারেই বোকা বনেছেন হার্দিক। এক্সট্রা কভারে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৯০ বলে ৮৭ রান। দলের বাজে সময়ে তার এই ইনিংসটা মনে রাখার মতো। তবে শেষটা হলো আক্ষেপে। মাত্র ১৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন হার্দিক।

ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে হার্দিক যখন সাজঘরে ফেরেন তখন ভারতের সংগ্রহ ২৩৯ রান। তার মানে, শেষের ২৭ রান যোগ করতেই ৫ উইকেট হারিয়েছে তারা। রবীন্দ্র জাদেজা-শার্দুল ঠাকুররা দাঁড়াতেই পারেননি। তাদের ব্যর্থতায় ৭ বল আগেই অলআউট হয়েছে দল

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ