ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা, ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৩ মে ১৩ ১৬:৫৬:১৯
ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা, ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি

গতকাল ১২ মে, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেনের স্বাক্ষরিত ঘূর্ণিঝড় মোখা সংক্রান্ত আবহাওয়ার ১২ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে।

এটি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার, দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এটি আরও ঘণীভূত হয়ে রোববার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হলেও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে ৮-১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের আবহাওয়া পূর্বাভাসের বরাতে ১২ মে, শুক্রবার কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা সুপার সাইক্লোনে পরিণত হতে পারে। এ সময় ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২২১ কিলোমিটার এর বেশি থাকতে পারে।

যদিও এর আগে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানিয়েছিলেন, মোখা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোন) রূপ নিতে পারে। তবে এর পরের স্টেজে অর্থ্যাৎ সুপার সাইক্লোনে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা নেই।

মোস্তফা কামাল পলাশ আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা আজ সকাল ৯টায় যে জায়গায় অবস্থান সেখানে ঘূর্ণিঝড়ের আশপাশে সমুদ্রে ২৮ ফুট উচ্চতার ঢেউ সৃষ্টি হচ্ছে।

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে আঘাত করলেও বাংলাদেশের সকল উপকূলীয় জেলায় ব্যাপক জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আজ রাত থেকেই বাংলাদেশের সকল উপকূলীয় এলাকায় জলোচ্ছ্বাস এর উচ্চতা বৃদ্ধি হওয়া শুরু করবে। আগামীকাল সকাল থেকেই বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে ঘূর্ণিঝড় এর প্রভাব অনুভব করা শুরু করবে।

তিনি বলেন, কক্সবাজার উপকূলে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ১০ থেকে ১২ ফুট, বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোতে ৮ থেকে ১২ ফুট ও খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ৭ থেকে ১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

শনিবার দুপুরের মধ্যে কক্সবাজার জেলার সকল দ্বীপ এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন এই আবহাওয়া গবেষক।

এছাড়া এই ঘূর্ণিঝড়টি রোহিঙ্গাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজারের ওপর দিয়ে অতিক্রম করলে টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। রোহিঙ্গাদের জন্য বৃষ্টি, বন্যা থেকে শুরু করে পাহাড় ধসের প্রবল ঝুঁকি রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ঘরগুলো উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে