ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

হযরত মুহাম্মদ সা. বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থে

২০২২ অক্টোবর ১০ ১৫:৪৮:১৪
হযরত মুহাম্মদ সা. বিভিন্ন ধর্মীয় গ্রন্থে

الَّذِينَ يَتَّبِعُونَ الرَّسُولَ النَّبِيَّ الأُمِّيَّ الَّذِي يَجِدُونَهُ مَكْتُوبًا عِندَهُمْ فِي التَّوْرَاةِ وَالإِنْجِيلِ يَأْمُرُهُم بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَاهُمْ عَنِ الْمُنكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبَاتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبَآئِثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ إِصْرَهُمْ وَالأَغْلاَلَ الَّتِي كَانَتْ عَلَيْهِمْ فَالَّذِينَ آمَنُواْ بِهِ وَعَزَّرُوهُ وَنَصَرُوهُ وَاتَّبَعُواْ النُّورَ الَّذِيَ أُنزِلَ مَعَهُ أُوْلَـئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

সে সমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষণা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে। সুরা আরাফ - ৭:১৫৭

এক ইয়াহুদি বালকের সাক্ষি:

مسند أحمد مخرجا (38/ 476)حَدَّثَنِي رَجُلٌ مِنَ الْأَعْرَابِ، قَالَ: جَلَبْتُ جَلُوبَةً إِلَى الْمَدِينَةِ فِي حَيَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمَّا فَرَغْتُ مِنْ بَيْعَتِي قُلْتُ: لَأَلْقَيَنَّ هَذَا الرَّجُلَ فَلَأَسْمَعَنَّ مِنْهُ، قَالَ: فَتَلَقَّانِي بَيْنَ أَبِي بَكْرٍ، وَعُمَرَ يَمْشُونَ، فَتَبِعْتُهُمْ فِي أَقْفَائِهِمْ حَتَّى أَتَوْا عَلَى رَجُلٍ مِنَ الْيَهُودِ نَاشِرًا التَّوْرَاةَ يَقْرَؤُهَا، يُعَزِّي بِهَا نَفْسَهُ عَلَى ابْنٍ لَهُ فِي الْمَوْتِ، كَأَحْسَنِ الْفِتْيَانِ وَأَجْمَلِهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَنْشُدُكَ بِالَّذِي أَنْزَلَ التَّوْرَاةَ، هَلْ تَجِدُ فِي كِتَابِكَ ذَا صِفَتِي وَمَخْرَجِي؟» ، فَقَالَ بِرَأْسِهِ [ص:477] هَكَذَا، أَيْ: لَا، فَقَالَ ابْنُهُ: إِي وَالَّذِي أَنْزَلَ التَّوْرَاةَ إِنَّا لَنَجِدُ فِي كِتَابِنَا صِفَتَكَ وَمَخْرَجَكَ، وَأَشْهَدُ أَنَّ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّكَ رَسُولُ اللَّهِ، فَقَالَ: «أَقِيمُوا الْيَهُودَ عَنْ أَخِيكُمْ» ، ثُمَّ وَلِيَ كَفَنَهُ وَجَنَنَهُ وَالصَّلَاةَ عَلَيْهِ

খ্রিষ্টান ধর্মে (ইঞ্জিল) প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা.

وَإِذْ قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُم مُّصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيَّ مِنَ التَّوْرَاةِ وَمُبَشِّرًا بِرَسُولٍ يَأْتِي مِن بَعْدِي اسْمُهُ أَحْمَدُ فَلَمَّا جَاءهُم بِالْبَيِّنَاتِ قَالُوا هَذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ

স্মরণ কর, যখন মরিয়ম-তনয় ঈসা (আ.) বলল: হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রসূল, আমার পূর্ববর্তী তওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমদ। অতঃপর যখন সে স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বলল: এ তো এক প্রকাশ্য যাদু। [সুরা সফ - ৬১:৬]

খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় প্রাধান কিতাব বাইবেলে আমাদের শেষ নবীর আগমনের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে।

“আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাকে বলেছেন যে, সে (খোদা) যা কিছু বলে সব সঠিক বলে থাকে। আমি তাদের জন্য তাদের ভাইদের মধ্য থেকে একজনকে নবী বানিয়ে পাঠাবো আর সে আমার কালামকে তাদেরকে পড়িয়ে শুনাবে এবং আমি যা কিছুর হুকুম করব সে তাদেরকে বলে দিবে...। (কিতাবুল ইসতিসনা, অধ্যায়: ১৮, কালাম: ১৭-২২)

বাইবেলের এই উক্তি দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের পর একজন নবী আসবেন যিনি তাদেরকে কিতাব (কুরআন) পড়ে শুনাবেন। আর তিনিই হলেন আমাদের নবী আখেরী পয়গাম্বর হযরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)।

ইব্রাহীম আ. দু’য়া করেছিলেন: رَبَّنَا وَابْعَثْ فِيهِمْ رَسُولاً مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْ إِنَّكَ أَنتَ العَزِيزُ الحَكِيمُ

হে পরওয়ারদেগার! তাদের মধ্যে থেকেই তাদের নিকট একজন পয়গম্বর প্রেরণ করুন যিনি তাদের কাছে তোমার আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করবেন, তাদেরকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দিবেন। এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয় তুমিই পরাক্রমশালী হেকমতওয়ালা। সুরা বাকারা - ২:১২৯

আল্লাহ তাআলা ইব্রাহীম আ. এর দু’য়া এভাবে কবুল করেছিলেন,

لَقَدْ مَنَّ اللّهُ عَلَى الْمُؤمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولاً مِّنْ أَنفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُواْ مِن قَبْلُ لَفِي ضَلالٍ مُّبِينٍ

আল্লাহ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুতঃ তারা ছিল পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট। সুরা ইমরান - ৩:১৬৪

সাহাবী হযরত হাশেম রা. বর্ণনা করেন, ثم فتحها فإذا بها بيوت صغار وعليها أبواب، ففتح منها بيتا فاستخرج منها خرقة حرير سوداء فنشرها فإذا فيها صورة حمراء وإذا رجل ضخم العينين عظيم الأليتين لم ير مثل طول عنقه في مثل جسده أكثر الناس شعرا، فقال لنا: أتدرون من هذا؟ قلنا: لا قال: هذا آدم صلى الله عليه وسلم، ثم أعاده ففتح بيتا آخر فاستخرج منه خرقة حرير سوداء فنشرها فإذا بها صورة بيضاء وإذا رجل له شعر كثير كشعر القبط - قال القاضي: أراه قال - ضخم العينين بعيد ما بين المنكبين عظيم الهامة، فقال: أتدرون من هذا؟ قلنا لا، قال: هذا نوح صلى الله عليه وسلم، ثم أعادها في موضعها وفتح بيتا آخر فاستخرج منه خرقة حرير خضراء فإذا بها صورة شديدة البياض وإذا رجل حسن الوجه حسن العينين شارع الأنف سهل الخدين أشيب الرأس أبيض اللحية كأنه حي يتنفس، فقال: أتدرون من هذا؟ قلنا: لا، قال: هذا إبراهيم صلى الله عليه وسلم، ثم أعادها وفتح بيتا آخر فاستخرج منه خرقة حرير خضراء فإذا فيها صورة محمد صلى الله عليه وسلم، فقال: تدرون من هذا؟ قلنا: هذا محمد صلى الله عليه وسلم - وبكينا، فقال: بدينكم أنه محمد؟ قلنا: نعم، بديننا أنها صورته كأنما ننظر إليه حيا. قال: فاستخف حتى قام على رجليه قائما ثم جلس فأمسك طويلا فنظر في وجوهنا فقال: أما إنه كان آخر البيوت ولكني عجلته لأنظر ما عندكم، فأعاده وفتح بيتا آخر فاستخرج منه خرقة حرير خضراء فإذا فيها صورة رجل جعد نعلم أنها تشبه الذين صورت صورهم فإنا رأينا نبينا صلى الله عليه وسلم يشبه صورته، قال: أخبرت أن آدم سأل ربه أن يريه أنبياء بنيه، فأنزل عليه صورهم، فاستخرجها ذو القرنين من خزانة آدم في مغرب الشمس، فصورها لنا دانيال في خرق الحرير على تلك الصور، فهي هذه بعينها. أما والله لوددت أن نفسي طابت بالخروج من ملكي فتابعتكم على دينكم وأن أكون عبدا لأسوئكم ملكة! ولكن نفسي لا تطيب. فأجازنا فأحسن جوائزنا، وبعث معنا من يخرجنا إلى مأمننا، فانصرفنا إلى رحالنا. كنز العمال (12/ 471)

বৌদ্ধ শাস্ত্রে প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা.

বৌদ্ধদের প্রামাণ্য গ্রন্থ ‘দিঘা-নিকায়া’য় বর্ণিত হয়েছে, ‘মানুষ যখন গৌতম বুদ্ধের ধর্ম ভুলে যাবে, তখন আর একজন বুদ্ধ আসবেন, তার নাম ‘মৈত্রেয়’ (সংস্কৃত শব্দ মৈত্রেয়) অর্থাৎ শান্তি ও করুণার বুদ্ধ। অর্থাৎ আনন্দ বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার মৃত্যুর পর কে আমাদেরকে উপদেশ দান করবে?

বুদ্ধ বললেন, আমিই একমাত্র বুদ্ধ বা শেষ বুদ্ধ নয়। যথাসময়ে আর একজন বুদ্ধ আসবেন, আমার চেয়েও তিনি পবিত্র ও অধিকতর আলোকপ্রাপ্ত। তিনি একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্মমত প্রচার করবেন। আনন্দ জিজ্ঞেস করলেন, তাঁকে আমরা চিনবো কি করে? বুদ্ধ বললেন, তাঁর নাম হবে ‘মৈত্রেয়’। এই মৈত্রেয় বা ‘শান্তি ও করুণার বুদ্ধ’ যে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পবিত্র কুরআনেও প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর বিশেষণ অবিকল এভাবেই আছে। যেমন, তিনি রাহমাতুল্লিল আলামিন’ অর্থাৎ সমগ্র বিশ্বের জন্য করুণা ও রহমত স্বরূপ।

পার্শী ধর্মশাস্ত্রে প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা.

পার্শী জাতির ধর্মগ্রন্থের নাম ‘জিন্দাবেস্তা’ ও ‘দসাতির’। জিন্দাবেস্তায় প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর মিলাদের তথা আগমনের সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে। এমনকি আহম্মদ নামটিও উল্লেখ আছে।

অর্থাৎ ‘আমি ঘোষণা করছি, হে স্পিতাম জরথুষ্ট্রু, পবিত্র আহম্মদ (ন্যায়বানাদিগের আশীর্বাদী) নিশ্চয় আসবেন, যার কাছ থেকে তোমরা সৎ চিন্তা, সৎ বাক্য, সৎ কাজ এবং বিশুদ্ধ ধর্ম লাভ করবে। ‘দসাতির’ গ্রন্থে অনরূপ আর একটি ভবিষ্যদ্বাণী আছে। তার সারমর্ম হলো- “যখন পার্শীরা নিজেদের ধর্ম ভুলে যেয়ে নৈতিক অধঃপতনের চরম সীমায় উপনীত হবে, তখন আরবদেশে একজন মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করবেন। যার শিষ্যরা পারস্যদেশ এবং পারসিক জাতিকে পরাজিত করবে। নিজেদের মন্দিরে অগ্নিপূজা করবে না। তারা ইব্রাহিমের কাবা ঘরের দিকে মুখ করে প্রার্থনা করবে। সেই কাবা ঘরও প্রতিমামুক্ত হবে। সেই মহা পুরুষের শিষ্যরা বিশ্ববাসীর পক্ষ্যে আশীর্বাদস্বরূপ হবে।”

হিন্দু ধর্মে আল্লাহর পরিচয়: (নির্ভরযোগ্য মতানুসারে উপনিষদ মোট ১০৮টি) তার মধ্যে ছন্দোগ্য উপনিষদ একটি। ১. ছন্দোগ্য উপনিষদের ৬ নং অধ্যায় ২ নং খণ্ড ১ নং মন্ত্রে আছে:

“একম এব অদ্বিতীয়ম্”

অর্থ: ঈশ্বর বা প্রভূ এক ও অদ্বিতীয়।

২. অথর্ববেদ মন্ডল নং ১৩. সোক্ত নং ৪. মন্ত্র নং ১২. তে আছেঃ “ সা এশা এ-কা, এ-কা ভির দি-কা- এহ ”অর্থ: তিনি একজনই, দ্বিতীয় বলতে কিছুই নেই।

৩. ঋগবেদ কট-উপনিষদ মন্ডল নং ২. সোক্ত নং ১. মন্ত্র নং ১১ তে আছে।“ একং ব্রক্ষ্ম দ্বিতীয়ং নাস্তি নেহ্, নাহ নাস্তি কিন্চন ” অর্থ: পরমইশ্বর এক, তিনি ব্যতিত কেহই নেই।

৪. ঋগবেদ মন্ডল নং ১. সোক্ত নং ১৬৪. মন্ত্র নং ৪৬ তে আছে।“একম সাদবে পুরাবা হুদা ওয়াদান্তে ”অর্থ: সত্য খোদা একজনই, তবে বিভিন্ন সময় মানুষ তাকে বিভিন্ন নামে ডেকেছে।

হিন্দু ধর্মে প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সা.

হিন্দু ধর্মের কিতাবগুলো প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

১. শ্রুতি; যার অর্থ প্রকাশিত হয়েছে, সবাই বুঝতে পেরেছে, যেটা মানুষ শুনেছে। হিন্দু বিশেষজ্ঞদের দাবি হলো শ্রুতি হচ্ছে ঈশ্বরের বাণী। শ্রুতি আবার দুই ভাগে বিভক্ত বেদ ও উপনিষদ। বেদ এর অর্থ হচ্ছে মানুষের জ্ঞান। যার বয়স আনুমানিক চার হাজার বছর। কোথায় ও কার উপর নাযিল হয়েছে তা যদিও জানা নেই তারপরও হিন্দুদের দাবি হল, এটাই আল্লাহর বানী এবং প্রধান বিশুদ্ধ গ্রন্থ।

বেদ চার ভাগে বিভক্ত: ১.ঋগবেদ ২. ইয়াজুর্বেদ/যজুরবেদ৩. সামবেদ৪.অথর্ববেদ/ অথর্বেদ

এরপরে স্থান রয়েছে উপনিষদ যার অর্থ হল, কাছে এসে নিচে বসা। মূল অর্থ হল জ্ঞান, যেটা যাবতীয় অজ্ঞতা দূর করে দেয়। (নির্ভরযোগ্য মতানুসারে উপনিষদ মোট ১০৮টি)

২. স্মৃতি, যেগুলো মনে রাখা হয় অর্থাৎ স্মরণে রাখা। হিন্দু বিশেষজ্ঞরা বলেন, এগুলো লিখেছে মানুষেরা অর্থাৎ ঋষিরা যার অবস্থান স্মৃতির পর। এগুলোকে বলা হয় ধর্ম শাস্ত্র; অর্থাৎ এখানে রয়েছে মানুষ কিভাবে চলবে, সমাজ কিভাবে চলবে, রাষ্ট্র কিভাবে চলবে যাবতীয় নিয়ম কানুন এর মধ্যে উল্লেখ রয়েছে।

স্মৃতির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল বিভিন্ন পুরানা। মহারিশি এসব পুরনোগুলোকে ১৮টি ভাগে বিভক্ত করেছেন। তারমধ্যে একটি হল ভবিষ্য পুরানা। ভবিষ্য মানে ভবিষ্যৎ যা ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছে। এই ভবিষ্যৎ পুরাতে উল্লেখ রয়েছে।

তৃতীয় পর্বঃ তৃতীয় খন্ড তৃতীয় অধ্যায়ের ৫ থেকে ৮ অনুচ্ছেদে: “মরুভূমি থেকে একজন ম্রিচ্য তার সঙ্গীদেরকে সাথে নিয়ে আসবেন তার নাম হবে মোহাম্মদ সা.”

‘ম্রিচ্য’ যার অর্থ বিদেশি। ‘মনস্থল’ থেকে যার অর্থ বালুময় মরুভূমি। রাজা ভূত তাকে স্বাগত জানাবেন সম্মানের সাথে, শ্রদ্ধার সাথে এবং বলবেন হে মানবজাতি গর্ব ! আপনি শয়তানকে হারানোর জন্য এক বিশাল বাহিনী তৈরি করেছে। রাজা ভূত এই দেবতুল্য মানুষদেরকে স্নান করে পবিত্র করবেন।

হিন্দুধর্মের পরিভাষায় রসূলকে অবতার বলা হয়। সামনে আমরা অবতার নিয়েই আলোচনা করবো। ঈশ্বরের পক্ষ থেকে যাকে অবতীর্ণ করা হয় তাকেই অবতার বলা হয়। সে হিসেবে যিনি সর্ব শেষে আসবেন তাকেই অন্তিম অবতার বলাহয়। অন্তিম অর্থ শেষ এবং অবতারঅর্থ রাসূল অর্থাৎ শেষ রাসুল।

হিন্দুধর্মে যুগ চারটি: সত্য, ত্রেতা, দাপর, কলি। কলিযুগের শেষ অবতার যাকে ইসলামের পরিভাষায় শেষনবী বলে সেই কল্কি অবতারের নাম পিতার নাম, জন্মস্থান ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা হিন্দুদের ধর্মীয় গ্রন্থে পাওয়া যায়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীগন যার অপেক্ষা করছেন। এগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় সকল মানুষের নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই হলেন সেই মহামানব।

নিম্নে হিন্দু ধর্মের গ্রন্থ বেদ হতে এর স্বপক্ষে প্রমাণকরার চেষ্টা করা হল- অন্তিম অবতারের নাম: অন্তিম অবতার বা শেষ রাসূলের নাম হবে ‘নরাশংস’। “নরাশংসং সৃধৃষ্টমমপশ্যং সপ্রথস্তমং দিবো ন সদ্মম খস॥ ৯ (ঋগবেদ ১/১৮/৯)

আমরা একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে ‘নরাশংস’ সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয় ‘প্রশংসিত ব্যক্তি’। যার আরবী অর্থ হয় ‘মুহাম্মদ’। আর সকল মানুষের সর্ব শেষ নবীর নাম হলো মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

অন্তিম অবতারের পিতার নাম: অন্তিম অবতারের পিতার নাম হবে ‘বিষ্ণযশা’। ‘‘সুমত্যাং বিষ্ণুযশসা গর্ভমাধত্ত বৈষ্ণবম্।’’(কল্কি-পুরান-১/২/১১)এর বিশ্লেষণ করলে দেখাযাবে, ‘বিষ্ণযশা’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘মালিকের দাস’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ আবদুল্লাহ’। আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়া সাল্লামের পিতার নাম ছিল আবদুল্লাহ।

অন্তিম অবতারের মাতার নাম: অন্তিম অবতারের মাতার নাম সম্পর্কে কল্কি পুরানে লিখা আছে যে, তার নাম হবে ‘সুমতি’।

‘‘সুমত্যাং মাতরি বিভো। কন্যায়াংত্বন্নিদেশত:।।”(কল্কিপুরাণ-১/২/৪)

এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘সুমতি’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয় ‘নিরাপদ-শান্তি’।

যার আরবী অনুবাদ হয় ‘আমেনা’। আর সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাতার নাম ছিল আমেনা।

অন্তিম অবতারের জন্মস্থান: অন্তিম অবতারের জন্মস্থান সম্পর্কে কল্কি পুরানে লেখা আছে, তিনি জন্ম গ্রহণ করবেন, ‘শম্ভল’ নামক স্থানে। ‘‘শম্ভলে বিষ্ণুযশসো গৃহে প্রদুর্ভবাম্যহম।’’(কল্কিপুরাণ-১/২/৪)

এর বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ‘শম্ভল’ শব্দটি৷ সংস্কৃত ভাষা। যার বাংলা অর্থ হয়, ‘শান্তির স্থান’। যার আরবী অনুবাদ হয়‘ বালাদুল আমিন’। আর মক্কা মুকাররমার নাম হলো, বালাদুল আমিন। আর মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছেন।

মুহাম্মদ সা. এর জন্ম: মুহাক্কিকীনদের মতে ২০ এপ্রিল ৫৭১ খ্রিষ্টাব্দে সোমবার দিবাগত রাত্রিতে সুবহে সাদেকের সময় উম্মতের কান্ডারী রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভ জন্ম হয়। যা রবিউল আওয়াল মাসের ৯ (নয়) তারিখ ছিল।

মুহাম্মদ সা. এর পিতার বংশ: মুহাম্মদ সা. বিন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব বিন হাসিম বিন আব্দে মানাফ বিন কুছাই বিন কিলাব বিন মুররা বিন কা'আব বিন লু'ওয়াই বিন গালিব বিন ফাহার বিন মালিক (কুরাইশ) বিন নাযার বিন কিনানাহ বিন খুযাইমাহ বিন মুদরিকা বিন ইলইয়াস বিন মুযার বিন নিযার বিন মা’দ বিন আদনান।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে