ঢাকা, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি: শিশু সিয়াম জানে না তার বাবা আর নেই

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২২ জুন ১৩ ২০:৫৯:৫২
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি: শিশু সিয়াম জানে না তার বাবা আর নেই

তার মৃত্যুর খবরে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা আছিয়া বেগম। আর স্ত্রী কাকলী বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।

রোববার ভোরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাউছুল মারা গেছেন। তিনি মণিরামপুর উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। দুই ভাইবোনের মধ্যে গাউছুল ছোট। তিনি ২০১৬ সালে খাটুয়াডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন আর ২০১৮ সালে ফায়ার সার্ভিসের যোগ দেন। এরপর একই ইউপির কাজীয়াডা গ্রামের কাকলীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামে গাউসুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলেকে হারিয়ে স্বজনদের মাঝে বসে বিলাপ করছেন মা আছিয়া বেগম। একটু পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন তিনি। বাবাও কাঁদতে কাঁদতে বিলাপ করছেন। আর গাউছুলের স্ত্রী কাকলী যেন নির্বাক হয়ে গেছেন। তাদের পাঁচ মাস ১০ দিন বয়সী ছেলে সিয়াম চাচার কোলে বসে আছে। তার মুখের দিকে তাকিয়ে স্বজনরা কাঁদছেন।

গাউছুলের মামাতো ভাই রমজান আলী জানান, ‘দুর্ঘটনার পর থেকে বাড়ির কারও চোখে ঘুম নেই। সবাই দুশ্চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। এরমধ্যে রোববার ভোর ৪ টার দিকে খবর আসে, ভাই মারা গেছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন গাউছুল ভাই। মামার চাষের জমিও নেই। কীভাবে যে এখন তাদের সংসার চলবে, আল্লাহ জানেন।’

খাটুয়াডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হজরত আলী বলেন, ‘গাউছুল খুব ভালো ছাত্র ছিল। সাহসও ছিল অনেক। অল্প কিছু দিনের চাকরিতে সে বীরযোদ্ধা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এরই মধ্যে ছেলেটি মারা গেলো।’

চাচা আকবর আলী বলেন, মাস দুয়েক হলো গাউছুল সীতাকুণ্ডে বদলি হয়েছে। এর আগে বাগেরহাটে ছিলো। তখন প্রায়ই বাড়ি আসতো। এরপর ছয় মাসের জন্যে তাকে চট্টগ্রাম পাঠানো হয়।

এদিকে রোববার বিকেল ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে প্রথম জানাজা হয়। এর আগে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরে গাউসুলের কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধাসহ ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা থেকে তার মরদেহ মণিরামপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

এ তথ্য জানিয়েছেন মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা প্রণব কুমার বিশ্বাস।

প্রসঙ্গত, গত ৪ জুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকার বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোটিতে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় বিস্ফোরণ ঘটলে আহত হন ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ দুই শতাধিক মানুষ। এ ঘটনায় গাউছুল আজমসহ এখন পর্যন্ত ১০ ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মৃত্যু হলো। আর সবমিলিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৭ জনে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে