ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

দুই হাতের সঙ্গে যাদের পা দুখানাও চলে সমানতালে সেই তালিকায় ২ নম্বরে আছেন এক বাংলাদেশী

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২০ ডিসেম্বর ১৬ ২২:১৭:২৫
দুই হাতের সঙ্গে যাদের পা দুখানাও চলে সমানতালে সেই তালিকায় ২ নম্বরে আছেন এক বাংলাদেশী

হার্ড-বল ক্রিকেট যারা কখনো না কখনো খেলেছেন, তারা ব্যাপারটি বেশ ভালোভাবেই জানেন। টেস্ট ফর্ম্যাটের জন্য এটি খু্ব একটা বিরক্তিকর না হলেও, সীমিত ওভারের ক্রিকেটে, বিশেষ করে ডেথ ওভারে কম সময়ে বেশি রান সংগ্রহ করার জন্য দ্রুত দৌড়ানোটা বেশ জরুরি।

এছাড়া বিশ্বসেরা অনেক ক্রিকেটার নিজেদের এই গুণটিকে কাজে লাগিয়ে উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তে বোলারদেরই উল্টো চাপের মুখে ফেলে দিচ্ছেন। কম ডট দিয়ে, ছোটখাট শট খেলেও দ্রুত গতিতে দৌড়িয়ে রানের চাকা সচল রাখতে সক্ষম – এপ্রজন্মের তেমনি সেরা পাঁচ ক্রিকেট তারকাদের নিয়েই থাকছে আজকের আয়োজন।

৫ | কেন উইলিয়ামসনবর্তমান সময়ের সেরা ও জনপ্রিয় ক্রিকেটারদের তালিকা তৈরি করতে গেলে আপনাকে নিউজিল্যান্ডের তরুণ অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে শীর্ষ পাঁচে রাখতে হবেই। দুর্দান্ত সব ক্রিকেট শট খেলার পাশাপাশি প্রয়োজনের সময়ে দ্রুততার সঙ্গে সিঙ্গেল এবং ডাবলস নেওয়ার মাধ্যমে নিজের প্রতিভার সাক্ষর রেখেছেন তিনি। বিশেষ করে পয়েন্ট ও থার্ড ম্যান অঞ্চলের দিকে করা লেট কাটগুলোকে এক্ষেত্রে তিনি নিজের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন।

একই সময় তিনি নিজের পা দুটোকেও দৌড়ানোর জন্য প্রস্তুত রাখেন। ফলে সহজে বেশি বল ডট দিতে হয় না তাকে। অন্যদিকে ফিল্ডিংয়ের সময়েও নিজের এই গতিকে বরাবরই কাজে লাগাচ্ছেন উইলিয়ামসন। বর্তমানে তিনি ব্ল্যাক ক্যাপসদের মাঝে সবচেয়ে দক্ষ ফিল্ডার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। আর নিজের এসব ক্রিকেটীয় গুণের সুবাদেই তিনি গত বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন। যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর শেষ পর্যন্ত ইংলিশরাই জিতে গিয়েছিল। তবে ৮২ গড়ে ৫৭৮ রান সংগ্রহ করে টুর্নামেন্টটির সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন উইলিয়ামসনই।

৪ | কাইরন পোলার্ডভৌগলিক অবস্থানগত কারণেই ক্যারবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ থেকে আসা খেলোয়াড়রা প্রচন্ড শক্তিশালী হয়ে থাকেন। সেখানেরই ছোট্ট একটি দেশ, ত্রিনদাদ থেতে উঠে আসা কাইরন পোলার্ডও এর ব্যতিক্রম নন। পেশাদার টি-টোয়েন্টি লিগগুলোয় ইউনিভার্স বস ক্রিস গেইলের পর দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ১০০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি। এমনকি এখন পর্যন্ত খেলা ৪৫২টি টি-টোয়েন্টি ইনিংসের মাঝে ৬৫৩টি ছক্কা হাঁকিয়ে ফর্ম্যাটটির ইতিহাসে গেইলের পরেই সর্বোচ্চ ওভার বাউন্ডারি মারার রেকর্ডটিও নিজের দখলে রেখেছেন তিনি। অবশ্য অনেক দিক থেকে গেইলের তুলনায় বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন তিনি। যেমন, গেইল সচরাচর সিঙ্গেল বা ডাবলস নিতে চাইতেন না।

বরং নিজের দানবীয় শক্তির সাহায্যে বলকে বাউন্ডারির রশির ওপারে নিয়ে যাওয়াটাই ছিল তার লক্ষ্য। অন্যদিকে পোলার্ড বাউন্ডারি হাঁকানোর পাশাপাশি ইনফিল্ডে আস্তে করে বলটিকে ঠেলে দিয়ে নিজের ৬ ফিট ৫ ইঞ্চির বিশাল দেহটাকে কাজে লিয়ে দ্রুততার সঙ্গে সিঙ্গেল বা ডাবলস নিতে ভালোবাসেন। আবার এরসঙ্গে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স যুক্ত হওয়ায়, পোলার্ডকে অনেকেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সফলতম খেলোয়াড় বলে ডেকে থাকেন।

৩ | ডেভিড ওয়ার্নারবিশ্বের অন্যতম আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যারিয়ারকে অবশ্য দুইভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমটা, যখন তিনি বল টেম্পারিংয়ের ইস্যুতে জড়াননি আর অন্যটি সেই একবছরের সাজা কাটিয়ে মাঠে প্রত্যাবর্তনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত। প্রথমার্ধে ওয়ার্নার ছিলেন রীতিমতো একজন সিংহের মতো। সবসময়ই বড়ধরনের শট খেলে রান স্কোর করতে চাইতেন। তবে এক বছরের দীর্ঘ বিরতি দিয়ে মাঠে ফেরার পর থেকে সেই ওয়ার্নারই যেন সিংহ থেকে বিড়ালে পরিণত হয়ে গেছেন।

ইদানিং আগের মতো ক্রিজে এসেই বোলারদের তেড়েফুঁড়ে মারতে যান না তিনি। বরং ঠান্ডা মাথায় ভেবে-চিন্তে শট নির্বাচন করতেই বেশি দেখা যাচ্ছে তাকে। এছাড়া বাউন্ডারির পাশাপাশি দৌড়ে রান নেওয়ার ব্যাপারেও বেশ মনোযোগী হয়েছেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ, গতবছর পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে খেলা টেস্ট সিরিজের কথা উল্লেখ করা যায়। সেবার অ্যাডিলেটে সফরকারীদের হতাশার অথৈ সাগরে ডুবিয়ে দিয়ে ৪১৮ বলে ৩৩৫ রানের অনন্য সাধারণ অপরাজিত একটি ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। যার মধ্যে মাত্র ১৬২ রান ব্যতিত বাকি সব রানই এসেছিল সিঙ্গেল, ডাবলস বা থ্রিপলস থেকেই।

২ | সাকিব আল হাসানবাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সাকিব আল হাসানের মতো কোনো চরিত্র দ্বিতীয়টি হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। অভিষেকের পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রিকেট আঙিনাকে নানা অর্জনে সাজিয়েছেন তিনি। সময়ে সময়ে দল যখনই বিপদের মুখে পড়েছে, তখনই ব্যাট-বল হাতে ‘আশা-ভরসার’ ফেরিওয়ালা রূপে আবির্ভূত হয়েছেন সাকিব। এই তো গত বিশ্বকাপের কথাই ধরুন। স্কোয়াডের বেশিরভাগ খেলোয়াড়রাই যেখানে ভালোকিছু করে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে সাকিব স্বমহিমায় পুরো বিশ্বকাপের মঞ্চটিকে রাঙিয়েছেন।

১১টি উইকেট শিকারের পাশাপাশি গ্রুপ পর্বের ৮ ইনিংসে সংগ্রহ করেছেন ৬০৬ রান। তবে রান সংগ্রহের জন্য তিনি বেশ ক্ষুধার্ত থাকলেও, এসময় প্রতিটি কদম ফেলেছেন একদম মেপেমেপে। যেকারণে তাঁর স্কোর করা বেশিরভাগ রানই এসেছে সিঙ্গেলস আর ডাবলস থেকেই। এমনকি গোটা আসরে তিনি ছক্কাই হাঁকিয়েছিলেন মাত্র দুইটি। এরসঙ্গে চার থেকে সংগ্রহ করা রানগুলো যোগ করলে মোট সংখ্যাটা দাঁড়ায় মাত্র ২৫৬ রান। বাকি ৩৫০ রান তিনি ক্রিজে প্রান্তবদলের মাধ্যমে সংগ্রহ করেছিলেন। এমনকি আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা ৬৯ বলের ৫৭ রানের ইনিংসেও তাঁর একমাত্র বাউন্ডারিটি এসেছিল চারের মাধ্যমে।

১ | বিরাট কোহলিহাল আমলে বিরাট কোহলির মতো ফিটনেস সম্পন্ন খেলোয়াড় খুব কমই খুঁজে পাওয়া যায়। ব্যাটিং থেকে শুরু করে নিজের জীবনযাত্রার প্রতিটি অংশকেই তিনি নিয়ে এসেছেন নিয়ন্ত্রণের ভিতরে। যেকারণে ৩১ বছর বয়সী কোহলি এখনো ২৫ বছরের তরুণের মতো মাঠে দিব্যি দৌড়ঝাঁপ করে বেড়াতে পারছেন। দুর্দান্ত সব ক্রিকেট শট খেলার সঙ্গে সঙ্গে নিজের পা দুুখানাকেও প্রতিনিয়ত ব্যস্ত রাখছেন তিনি। চাপের মুখে থেকেও ছোটখাট শট খেলে প্রান্ত বদল করে রানের চাকা সচল রাখাটা তার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। যেকারণে এপ্রজন্মের ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি করা তালিকাটির শীর্ষে থাকছেন কোহলি।

তবে বাস্তবে সাকিব-কোহলিদের চাইতেও নির্বিঘ্নে দৌড়ে নিতে পারা আরো অনেক খেলোয়াড়দের দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। বর্তমানে তাদের সবাই অবসর জীবনযাপন করলেও, নিজেদের দিনে তারা একেকজন টগবগে ঘোড়ার মতো ক্রিজে দৌড়াতে পারতেন। এসব ‘গ্রেট’ প্লেয়ারদের মাঝে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নাম হলো – রিকি পন্টিং, ডোয়াইন ব্রাভো, মোহাম্মদ কাইফ, এবিডি ভিলিয়ার্স এবং মাহেন্দ্র সিং ধোনি।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে