এইচএসসির রেজাল্ট তৈরি করতে গিয়ে ‘বেকায়দায়’ বিশেষজ্ঞ কমিটি

তবে সেটি করতে গিয়ে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। এর মধ্যে একটি জটিলতা রয়েছে বিভাগ পরিবর্তন করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে। এছাড়া মানোন্নয়ন ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থী এবং কারিগরি ও মাদরাসা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ফল তৈরি নিয়েও ঝামেলা হচ্ছে। সব মিলিয়ে মূল ফল তৈরিতে দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফল তৈরির জন্য যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা শিক্ষার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত না করে ফল তৈরির চেষ্টা করছেন। সর্বজনগ্রাহ্য একটি ফল দিতে প্রায় প্রতিটি প্রতিবন্ধকতাকেই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিচ্ছেন তারা। ফলপ্রকাশে জটিলতা নিরসনে বিশেষজ্ঞ কমিটি সেগুলোর যৌক্তিক সমাধানও বের করছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নভেম্বর শেষ হওয়ার আগেই বিভাগ পরিবর্তন করা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গাইডলাইন করা হবে। বিভাগ পরিবর্তন ছাড়াও মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থী, কারিগরি ও মাদরাসা থেকে সাধারণ শিক্ষায় আসা পরীক্ষার্থী, অনিয়মিত পরীক্ষার্থীসহ বেশ কয়েক ধরনের পরীক্ষার্থীদের নিয়ে আপাতত কাজ করছে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমিরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে বিভাগ পরিবর্তন করা পরীক্ষার্থীদের নিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাদের নিজ বিভাগের বিষয়ভিত্তিক ফল কিভাবে তৈরি হবে, সে বিষয়ে একটি সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। এই বিষয়ে একটি গাইডলাইন এই মাসেই তৈরি করা হয়ে যাবে।
আমিরুল ইসলাম বলেন, যারা বিভাগ পরিবর্তন করেনি, তাদের ফল তৈরিতে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হবে না। তবে এসএসসিতে কোনো বিষয় না থাকলেও এইচএসসিতে সে বিষয়টি থাকলে সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে হয়তো কলেজগুলোর সহায়তা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই এই সমস্যার সমাধান করা হবে।
শিক্ষা বোর্ডের একটি সূত্র বলছে, বিভাগ পরিবর্তনের জন্য মানবিকের বিষয়গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, সমাজকল্যাণ, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির মতো বিষয়গুলোকে সমান ধরা হচ্ছে। আবার এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পদার্থ, রসায়নের মতো বিষয়গুলোর সঙ্গে এইচএসসির অর্থনীতির মতো বিষয়কে সমান ভাবা হচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য মু. জিয়াউল হক সারাবাংলাকে বলছেন, ফলটা শিক্ষার্থীদের জন্যই তৈরি করা হচ্ছে। সুতরাং তাদের ভবিষ্যত মাথায় রেখেই আমাদেরকে এগোতে হবে। প্রতিবন্ধকতা আছে বলেই ফল তৈরিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ফল তৈরির জন্য সমগোত্রীয় বিষয় মেলানোর কাজ চলছে। নভেম্বরে বিভাগ পরিবর্তনজনিত গাইডলাইনের কাজ শেষ করতে পারলে ফল তৈরি অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
ফল তৈরিতে আরও একটি বড় সমস্যা হলো নিম্ন মাধ্যমিক তথা জেএসসিতে কারিগরি বিষয় না থাকা। ভোকেশনালে পাস করে অনেকেই এইচএসসি’র জন্য সাধারণ শিক্ষায় ভর্তি হন। এদের ফল কিভাবে তৈরি করা হবে, সেটি ভেবে পাচ্ছে না কমিটি।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মোরাদ হোসেন মোল্লা সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের জেএসসি নেই। এজন্য আমাদের একাধিক বিকল্প পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। আমাদের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পৃথকভাবে পরীক্ষা দিতে হয়। আবার কিছু নম্বর শিক্ষকদের হাতেও থাকে। সেক্ষেত্রে ফল তৈরিতে একাদশের ফল আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি।
একই ধরনের জটিলতা রয়েছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংলিশ মিডিয়াম থেকে এসএসসি ও সমমান পাস করা শিক্ষার্থীদের নিয়েও। একই জটিলতা রয়েছে প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের নিয়েও। এছাড়াও অনেকে আবার এসএসসিতে খারাপ ফল করলেও কলেজে এসে হয়ে গেছেন ‘সুবোধ’ শিক্ষার্থী। এমনকি টেস্ট পরীক্ষায়ও করেছিলেন অভাবনীয় ফলাফল। এদের ফল কেমন হবে— সেটি নিয়েও রয়েছে ‘চাপ’।
তারপরও বিশেষজ্ঞ কমিটি আশাবাদী, এসব সমস্যার সমাধান তারা শিগগিরই বের করে ফেলবেন। তবে অনিয়মিত পরীক্ষার্থীরাই বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ লাখ ৭৯ হাজার ১৭১ জন ছিল নিয়মিত পরীক্ষার্থী। বাকি ২ লাখ ৬৬ হাজার ৫০১ জন অনিয়মিত।
এসব অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর ফল কিভাবে তৈরি করা হবে— সেই প্রশ্নের আপাত কোনো উত্তর নেই কমিটির কাছে। তবে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এই প্রশ্নের সমাধান পেতে কয়েকদফা আলোচনা করেছে ফল কমিটি। সূত্রটি বলছে, প্রাথমিকভাবে এদেরকে জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তেই পাস করানোর চিন্তা করা হচ্ছে। তবে আগের বার পাস করেও মানোন্নয়নের জন্য আবার পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের ফল বাড়বে না বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
ফল তৈরির বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য মু. জিয়াউল হক জানান, একজন পরীক্ষার্থীর সঙ্গেও যেন অবিচার না হয়, আমরা তেমন একটি ফল তৈরি করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। তবে ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হলে ওই সময় স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরে আর স্কুল-কলেজ খোলার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষা প্রথমে স্থগিত ও পরে বাতিল ঘোষণা করতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষা বাতিলের সময়ই ঘোষণা দেওয়া হয়, জেএসসি ও এসএসসি’র ফল ভিত্তি হিসেবে নিয়ে এইচএসসির ফল ঘোষণা করা হবে। ডিসেম্বরের শেষভাগে এই ফলপ্রকাশের কথা রয়েছে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- অলস টাকা আর নয়! শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সুখবর দিল বিএসইসি
- পুঁজিবাজার সংকটে সরকার নিচ্ছে দ্রুত পদক্ষেপ: ৪ মূল সমস্যা চিহ্নিত
- গাজার মতো হামলার হুমকি বাংলাদেশকে! মুখ খুললো ভারতীয় মিডিয়া
- চীনের সহায়তায় পাঁচ জেলায় স্বাস্থ্য বিপ্লব: আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল তৈরি হচ্ছে
- শেয়ারবাজারে বড় পরিবর্তনের আভাস! বৈঠকে বসছে সরকার ও শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠান
- পুঁজিবাজার সংকটে সরকারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট, ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে বিনিয়োগকারীরা
- শেখ হাসিনার ৮ মিনিটের ভিডিও বার্তা: ইতিহাস, শিল্প ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
- চট্টগ্রাম-১১ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীরা: বাবা-ছেলের লড়াই!
- আগামী দিনে বিশ্ব ক্রিকেটে দাপট দেখাবে যে পাঁচ ক্রিকেটার
- Real Madrid vs. Arsenal: একাদশ, পরিসংখ্যান ও ম্যাচ প্রেডিকশন
- রিয়াল মাদ্রিদ বনাম আর্সেনাল কোয়ার্টার ফাইনাল স্কোর আপডেট
- ৫৪ বছরেই শেষ! আত্মহত্যা করলেন জনপ্রিয় হলিউড অভিনেতা নিকি ক্যাট
- শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নগদ ও স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা
- বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিতের দোরগোড়ায় বাংলাদেশ, সামনে সহজ সমীকরণ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা